দেশের অবকাঠামো উন্নয়নে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ব্যবহার করুন
জাফর আহমদ: দেশের অবকাঠামোর উন্নয়নে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ব্যবহারের প্রস্তাব দিয়েছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)। গতকাল বিকেলে বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর ফজলে কবিরের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে ডিসিসিআই এর সভাপতি আবুল কাশেম খান এ প্রস্তাব দেন। এ সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গর্ভনর এসকে সুর চৌধুরী ও ডিসিসিআই ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি কামরুল ইসলাম, সহ-সভাপতি হোসেন এ সিকদার, পরিচালক ইমরান আহমেদ, খ. রাশেদুল আহসান, মো. আলাউদ্দিন মালিক প্রমুখ।
আবুল কাসেম খান বলেন, বৈদেশিক বিনিয়োগকে আকৃষ্ট করার পাশাপাশি দেশীয় বিনিয়োগকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে অবকাঠামো খাতের উন্নয়ন এখন সময়ে দাবী। বর্তমানে অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগের পরিমান ৬ দশমিক ৩২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং এটাকে ২০-২২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত করা আবশ্যক এবং এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভকে ব্যবহার করতে পারে। ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৩০ সালের মধ্যে ৩০তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশে পরিণত হতে হলে বেসরকারি বিনিয়োগ ও ডিজিপি-এর অনুপাত ৩৫ শতাংশ উন্নিত করতে হবে।
সম্প্রতি খেলাপি ঋণের পরিমাণ বাড়ছে এবং বিষয়টি দেশের সামগ্রিক অর্থনীতির জন্য উদ্বেগজনক উল্লেখ করে তিনি বলেন, ২০১৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬২,১৭২ কোটি টাকা। এটা আর্থিক খাতের জন্য একটি দু:সংবাদ। ক্ষুদ্র ও মাঝারী উদ্যোক্তাদের ঋণ সহায়তা নিশ্চিতকরার লক্ষ্যে খেলাপি ঋণ নিয়ন্ত্রন এবং কার্যকর আর্থিক ব্যবস্থা প্রবর্তনের উপর জোরারোপ করেন।
ঢাকা চেম্বারের সভাপতি বলেন, বাংলাদেশী রপ্তানি পণ্যের বহুমুখীকরন ও বাজার সম্প্রসারণে বাংলাদেশ ব্যাংকের “রপ্তানী উন্নয়ন ফান্ড (ইডিএফ)”-এর কার্যক্রম আরোও সম্প্রসারিত করা প্রয়োজন। তিনি বেসরকারীখাতের এসডিজি’র লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য স্বল্প সুদে “শিল্প বিনিয়োগ ফান্ড” এবং “এসডিজি বাস্তবায়ন ফান্ড” চালু করার প্রস্তাব করেন। পাশপাশি তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় নীতিমালা যুগোপোযোগী করার আহবান জানান। তিনি জানান, ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে ব্যাংকে জমাকৃত এফডিআর’র ক্ষেত্রে সুদের হার ছিল গড়ে ৫ দশমিক ২২ শতাংম। কিন্তু ব্যাংক থেকে ঋণের সুদের হার প্রায় ৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ এবং এসএমই উদ্যোক্তাদের ক্ষেত্রে যেটি প্রায় ১২ থেকে ১৪ শতাংশ। এ অবস্থায় ব্যাংক ঋণ এবং এফডিআর-এর সুদের হারের মধ্যে সামঞ্জস্য করার প্রয়োজন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির ঢাকা চেম্বারের প্রতিনিধিদলের প্রস্তাবের জবাবে বলেন, বাংলাদেশ কে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হতে হলে ৮ শতাংশ হারে জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে হবে এবং এ ক্ষেত্রে শিল্পায়ন ও বিনিয়োগের কোন বিকল্প নেই। তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ের রেমিটেন্স প্রবাহ কমা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গত বছর রেমিটেন্স প্রবাহ প্রায় ১৬ শতাংশ কমেছে। তিনি ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে রেমিটেন্স আসার ক্ষেত্রে রেমিটেন্স পাঠানোর প্রক্রিয়া সহজিকরন করা ও এ বিষয়ে জনসচেতনতা বাড়ানোর উপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, এসএমই উৎপাদন খাতের তরুণ উদ্যোক্তাদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে প্রশিক্ষণের বিকল্প নেই।