চীনের ১৩ বিলিয়ন ডলারের বেসরকারি বিনিয়োগের হোম ওয়ার্ক চলছে
নাশরাত আর্শিয়ানা চৌধুরী : চীনের ১৫টি কোম্পানি বাংলাদেশে ১৩.৬ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করার জন্য কাজ করছে। এখন হোমওয়ার্ক চলছে। আগামী কয়েকমাসের মধ্যে দৃশ্যমান কাজগুলো শুরু হবে। এছাড়াও চীনের কোম্পানিগুলো বাংলাদেশের কোম্পানিগুলোর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আরও চুক্তি করবে। এই সব চুক্তি করার জন্য এখন গ্রাউন্ড ওয়ার্ক চলছে। যদিও ইতোমধ্যে কয়েকটি কোম্পানি চীনের কোম্পানিগুলোর সঙ্গে চুক্তি করেছে। আগামীতে এই সব চুক্তির সংখ্যা আরও বাড়বে। সব মিলিয়ে এইসব চুক্তির সংখ্যা ৫০ ছাড়িয়ে যাবে। এছাড়া কক্সবাজারে ক্রিকেট স্টেডিয়ামের কাজ শুরু হয়েছে। বেশকয়েকটি কাজ শুরুর বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। এনিয়ে বাংলাদেশ ও চীনের কোম্পানিগুলোর সঙ্গে আলোচনাও চলছে। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বাংলাদেশ সফরকালে চীন-বাংলাদেশ ব্যবসায়ীদের ১৩.৬ বিলিয়ন ডলারের চুক্তি হয়েছিল। সেই অনুযায়ী বাংলাদেশের শিল্প বাণিজ্য ক্ষেত্রে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে এমনটাই মনে করেছিলেন ব্যবসায়ীরা। চীনা ১৫টি কোম্পানির সঙ্গে বাংলাদেশের ১৫টি কোম্পানির ১৯টি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। সেই সব কাজের অগ্রগতির বিষয়ে জানতে চাইলে এবিসিসিআই এর প্রথম সহ সভাপতি সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বলেন, চীনের যে সেব কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি হয়েছিল ওই সব কোম্পানির সঙ্গে বাংলাদেশের কোম্পানিগুলো প্রাথমিক কাজ করছে। প্রাথমিক কাজ শুরু হওয়ার পর সেগুলো বাস্তবায়নের জন্য কিছুটা সময়ের প্রয়োজন, এখন সেই সময় পার করছে।
এফবিসিসিআই ভাইস প্রেসিডেন্ট মাহবুবুল আলম বলেন, আমাদের দেশের কোম্পানিগুলো হোম ওয়ার্ক করছে। তাদের দেশের কোম্পানিগুলোও হোমওয়ার্ক করছে। কারণ হোমওয়ার্ক ছাড়া কাজ করা যাবে না। এই জন্য মূল কাজ করতে সময় লাগবে। আর এই সময়টা হয়তো আর বেশি দিন লাগবে না। যে ১৫টি কোম্পানির মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে ওই সব কোম্পানির নামগুলোর ব্যাপারে এখনও গোপনীয়তা অবলম্বন করা হচ্ছে। এই ব্যাপারে তিনি বলেন, আসলে কাজ হওয়ার আগে এই নামগুলো সবাই চায় না প্রকাশ হোক। তবে বড় কোম্পানির মধ্যে বেক্সিমকো রয়েছে। আশা করা যাচ্ছে এই বছরের শেষ দিকে দৃশ্যমান অনেক কাজই হবে।
বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, চুক্তি অনুযায়ী প্রাথমিক কাজ হচ্ছে। আগামীতে এই সব চুক্তির বাস্তবায়ন হবে। আর চুক্তি করার সঙ্গে সঙ্গেইতো সব কিছু হয়ে যায় না। পর্যায়ক্রমে হচ্ছে।
উল্লেখ, চীনের প্রেসিডেন্ট সম্প্রতি বাংলাদেশ সফর করেন। বাংলাদেশ সফরকালে তার সঙ্গে চীনের ৮৬ জন ব্যবসায়ী বাংলাদেশ সফর করেন। সেই সময়ে তারা বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এরপর সোনারগাঁও হোটেলে বাংলাদেশ-চায়না বিজনেস ফোরামের যৌথ বৈঠকের পর দুই দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে এসব চুক্তি হয়। এফবিসিসিআই সভাপতি মাতলুব আহমাদ ওই সময়ে এই চুক্তি হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি এটাও জানান, চীনের ১৫টি কোম্পানির সঙ্গে বাংলাদেশের ১৫টি কোম্পানির মধ্েয ১৯টি চুক্তি হয়েছে। যদিও ওই সময়ে তিনি চুক্তির বিস্তারিত বলেননি। চীনের ৮৬ জনের সঙ্গে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের এই বৈঠক আয়োজন করে এফবিসিসিআই ও চায়না কাউন্সিল ফর দ্য প্রমোশন অব ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড-সিসিপিআইটি। বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জৈষ্ঠ্য সচিব হেদায়েত উল্লা আল মামুনের চুক্তি স্বাক্ষেেরর সময়ে উপস্থিত ছিলেন। ওই সময়ে এফবিসিসিআই সভাপতি মাতলুব ছাড়াও বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের মধ্যে ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল মুক্তাদির, অ্যাপিলিয়ন গ্রুপের রেজাউল কবির, সিসিপিআইটির ভাইস চেয়ারম্যান চ্যান ঝউ, চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট করপোরেশনের প্রেসিডেন্ট ওয়াং জু শেং, টিবিয়ান ইলেকট্রিক অ্যাপারেটর কোম্পানি লিমিটেডের চেয়ারম্যান ঝাওয়াংশি বিনিয়োগের বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন। সম্পাদনা: বিশ্বজিৎ দত্ত