চীনের ২২ বিলিয়নের সমঝোতায় ১ বিলিয়নের চুক্তি সম্পন্ন
বিশ্বজিৎ দত্ত: চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংয়ের বাংলাদেশ সফরের সময় বলা হয়েছিল আগামী ২০১৭ সাল হবে বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের বিনিয়োগ ও বন্ধুত্বের বছর। তার নিদর্শন স্বরূপ ২৭টি বিনিয়োগ ও সমঝোতা চুক্তিও স্বাক্ষর করা হয়েছিল। যার আর্থিক মূল্য ছিল প্রায় ২২ বিলিয়ন ডলারের। তবে বেসরকারিভাবে আরও ১৩ বিলিয়ন ডলারের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। সব মিলিয়ে প্রায় ৩৫ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে। উল্লেখ্য, এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে চায়নার এটি ছিল দ্বিতীয় বড় বিনিয়োগ চুক্তি। চীন সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ করেছে পাকিস্তানে যার পরিমাণ প্রায় ৫০ বিলিয়ন ডলার।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সরকারিভাবে ২২ বিলিয়ন ডলারের চুক্তির বেশির ভাগই ছিল সমঝোতা চুক্তি। চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত চীনের সঙ্গে ১ বিলিয়ন ডলারের ৩টি চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। এগুলো হলোÑ কর্ণফুলী নদীর নিচ দিয়ে টানেল নির্মাণ, চীন এই প্রকল্পে ঋণ হিসাবে বিনিয়োগ করবে ৭০৫ মিলিয়ন ডলার। অপর দুটি হলোÑ দাশেরকান্দি স্যুয়ারেজ লাইন নির্মাণ, সেখানে চীনা ঋণ ২৮০ মিলিয়ন ও ৬টি ভ্যাসেল ক্রয় বাবদ ঋণ ১৮৫ মিলিয়ন ডলার।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের উপ-সচিব মতিউর রহমান জানান, গত মাসে বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধি দল চীন সফর করে এসেছে। আগামী মাসে চীনের একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফরে আসবে এই সময় সমঝোতার অন্যান্য চুক্তিগুলো বাস্তবায়নের বিষয়ে আলোচনা হতে পারে।
এ বিষয়ে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব কাজী শফিকুল আযম জানান, চলতি বছরে চীনের সঙ্গে আরও ৫ থেকে ৭টি চুক্তি সম্পন্ন হবে। এই সব প্রকল্পে চীনের বিনিয়োগ হবে প্রায় ৬ বিলিয়ন ডলারের।
তিনি জানান, এই প্রকল্পগুলো হলোÑ পদ্মা সেতুর রেল লিংক, ইনফো থ্রি অর্থাৎ ইউনিয়ন লেবেল পর্যন্ত কানেকটিভিটি। ডিপিডিসির সঞ্চালন লাইন নির্মাণ। সিঙ্গেল মুরিং পয়েন্ট, চট্টগ্রাম ও খুলনায় তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র। চীনের ২২ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ সম্পর্কে তিনি বলেন, চীনের প্রেসিডেন্টের সফরের সময় যে সমঝোতাগুলো হয়েছে সময়মতো এগুলো বাস্তবায়ন হবে। তাদের যেমন অগ্রাধিকার রয়েছে আমাদেরও অনেক বিষয় বিবেচনা করতে হবে।
উল্লেখ্য, গত বছরের ১৪ অক্টোবরে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং বাংলাদেশ সফরে আসেন। তার সফরের সময় ১২টি ঋণ চুক্তি ও ১৫টি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। সমঝোতা চুক্তিগুলোর মধ্যে রয়েছে, দুর্যোগ মোকাবিলা ও হ্রাস, সেতু নির্মাণ, বিনিয়োগ উৎপাদন সহযোগিতা, বাংলাদেশ চীন মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির সম্ভাব্যতা যাচাই, সামুদ্রিক সহযোগিতা, দ্বিপাক্ষিক, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সহযোগিতাবিষয়ক সমঝোতা, সিল্করোড, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিবিষয়ক সহযোগিতা ও সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলা। সম্পাদনা: উম্মুল ওয়ারা সুইটি