সুনামগঞ্জে ৪ হাজার কোটি টাকার বোরো ফসল অরক্ষিত
নুর উদ্দিন, ছাতক (সুনামগঞ্জ) : আগাম বন্যা ও পাহাড়ি ঢলের হাত থেকে বোরো ফসল বাঁচাতে সুনামগঞ্জে প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা সরকার হাওরের বেড়ি বাঁধ নির্মাণের জন্য বরাদ্দ দেয়। এবছর কোনো কোনো স্থানে ৪০ভাগ সম্পন্ন হলেও ১২টি হাওর রক্ষা বাঁধের কাজ এখনো শুরু হয়নি। এ নিয়ে হাওরাঞ্চলের কয়েক লক্ষ কৃষক বোর ফসলের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত রয়েছেন। জানা যায়, জেলার বোরো ফসলের আবাদ হয়েছে ২লাখ ২০হাজার ৮৫০হেক্টর জমিতে। ৩৭টি বড় হাওরসহ মোট ৪২টি হাওরের ফসল রক্ষায় বাঁধের কাজে ৫৮কোটি ৭৭লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। এর মধ্যে ১০ কোটি ৭৭লাখ টাকা ব্যয়ে ২২৫টি পিআইসি (প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি) ও ৪৮কোটি টাকা ব্যয়ে ৭৬টি প্যাকেজে ঠিকাদারদের মাধ্যমে বাঁধ নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণের কাজ পায়।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)র দূর্নীতির কারণে জেলার ১১টি উপজেলার ছোট-বড় শতাধিক হাওরের প্রায় ৪হাজার কোটি টাকার বোরো ফসল অরক্ষিত রয়েছে। এ পর্যন্ত বাঁধের কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় কৃষকদের মধ্যে দেখা দিয়েছে অজানা আতঙ্ক। জনপ্রতিনিধিরা বিভিন্ন এলাকার বাঁধ পরিদর্শন করে পাউবোর প্রতি ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। অতীতেও অকাল বন্যায় হাজার হাজার কোটি টাকার পাঁকা বোরো ফসল পানিতে তলিয়ে বিনষ্ট হয়। জেলার প্রায় ২৫লাখ মানুষের জীবন-জীবিকার একমাত্র অবলম্বন বোর ফসল। অভিযোগ উঠেছে, অতীতের মত এবছরও ফসলরক্ষা বাঁধ সময়মতো সম্পন্ন হয়নি। ধর্মপাশা উপজেলার গোড়াডোবা হাওর রক্ষা বাঁধ, তাহিরপুরের মাটিয়ান হাওর রক্ষা বাঁধ, জামালগঞ্জের হালির হাওর রক্ষা বাঁধ, দিরাইয়ের টাঙ্গুয়ার হাওর রক্ষা ২টি বাঁধ, দক্ষিণ সুনামগঞ্জের খাই হাওর রক্ষা বাঁধ, দোয়ারাবাজারের নাইন্দার হাওর রক্ষার ২টি বাঁধ, শাল্লার ছায়ার হাওর রক্ষার ৩টি বাঁধ ও ধর্মপাশার চন্দ্র সোনার তাল হাওর রক্ষা বাঁধের কাজ এখনো শুরু হয়নি। এ বাঁধ নির্মাণে বরাদ্দ ছিল ৬কোটি ৪৮লাখ ৬০হাজার টাকা। হাওর রক্ষা বাঁধের কাজ ৫০/৬০ভাগ সম্পন্ন হয়েছে পাউবো দাবি করলেও জনপ্রতিনিধি ও কৃষকদেরদাবি ৩০/৪০ভাগও কাজ হয়নি এখন পর্যন্ত। সম্পাদনা : মুরাদ হাসান