জঙ্গি-সন্ত্রাসীদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার কাছে তুলে দিতে হবে
ডেস্ক রিপোর্ট: বাংলাদেশে কোনো জঙ্গি-সন্ত্রাসবাদের স্থান হবে না এমন প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দলের সকল নেতাকর্মীদের নিজ নিজ এলাকার জঙ্গি-সন্ত্রাসীদের তথ্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার কাছে তুলে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। গতকাল শনিবার বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৭তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এ সভার আয়োজন করে আওয়ামী লীগ। সভায় সভাপতিত্ব করেন শেখ হাসিনা।
দেশে চলমান জঙ্গি-সন্ত্রাসী হামলার বিষয়ে আবারো সকলকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে জঙ্গি-সন্ত্রাসবাদের কোনো স্থান হবে না। তাই সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে আমি আহ্বান জানিয়েছি। আমি আমাদের নেতাকর্মীদেরও বলব, আপনাদেরকেও সেভাবে সজাগ থাকতে হবে। যে যেখানে বসবাস করেন, যার যার নিজ নিজ এলাকায় কোনো জঙ্গি-সন্ত্রাসী আছে কি না। সেই তথ্য আপনাদের সংগ্রহ করতে হবে ও তাদেরকে আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার কাছে তুলে দিসন্তানদেরও খবর নিতে হবে, কোথায় যায়, কার সঙ্গে মেশে, কি করে। ওই মাদকাসক্তি, জঙ্গিবাদী কর্মকা- থেকে যেন যার যার সন্তান দূরে থাকে, তারা যেন মানুষের মতো মানুষ হয়, তারা যেন এ দেশকে আগামী দিনের নাগরিক হিসেবে পরিচালনা করার মতো উপযুক্ত হিসেবে গড়ে ওঠে এজন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।
জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার তাগিদ দেশের সকল পেশাজীবীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে সর্বস্তরের জনগণ; আমাদের শিক্ষক, অভিভাবক, মসজিদের ইমাম, ওলামাগণ থেকে শুরু করে বিভিন্ন পেশার সকলকে, বাংলাদেশের জনগণকে আজ ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। যাতে কারও ছেলেমেয়ে কেউ যেন এই জঙ্গিবাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত না হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ একটি শান্তিপূর্ণ দেশ হিসেবে গড়ে উঠবে। দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ একটি উন্নত শান্তিপূর্ণ দেশ হিসেবে গড়ে উঠবে। এখানে কোনো দারিদ্র্যতা থাকবে না। কোনো মানুষ গৃহহারা থাকবে না। কোনো মানুষ রোগে কষ্ট পাবে না। প্রত্যেকটা মানুষ তার মৌলিক অধিকার ভোগ করতে পারবে। সেইভাবে আমরা এই দেশটাকে গড়ে তুলতে চাই।
২০২০ সালে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও ২১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের জন্য এখন থেকেই আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ২০২১ সালে আমাদের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী আমরা পালন করব। ২০২০ সালে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী আমরা উদযাপন করব। আমি এখন থেকেই আওয়ামী লীগের সকল সংগঠনকে বলব এ লক্ষ্যে প্রস্তুতি নিতে।
নিজের বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী জীবনের বিভিন্ন চিত্র তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য বঙ্গবন্ধু পরিবর্তন করতে চেয়েছেন। বাংলাদেশের মানুষ পেট ভরে খাবে, তাদের উন্নত জীবন হবে, তারা ভালভাবে বাঁচবে এটাই ছিল তার স্বপ্ন। আর সেই স্বপ্ন পূরণ করাটাকেই আমি আমার কর্তব্য হিসেবে নিয়েছি বলে আজকে আমরা আমাদের দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারছি। কাজেই যে যেখানেই আছেন, সেখান থেকেই কাজ করতে হবে।
বাবার স্মৃতিচারণ করে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের এমন কোনো অঞ্চল নেই, যেখানে তিনি না গিয়েছেন। তিনি মানুষের মাঝে আত্মসচেতনতা সৃষ্টি করেছিলেন। অধিকার চেতনা সৃষ্টি করেছেন। দিয়েছেন ছয় দফা; করেছেন কারাবরণ। কোনো লোভ-লালসার কাছে তিনি মাথানত করেননি।
আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় দলটির নেতাদের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেনÑ জাতীয় সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, সভাপতিম-লীর সদস্য সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, সম্পাদকম-লীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, মহানগর আওয়ামী লীগের নেতা এ কে এম রহমতউল্লাহ, সাদেক খান ও শাহে আলম মুরাদ প্রমুখ। সম্পাদনা: রফিক আহমেদ তে হবে। কারণ এই দেশে কোনো জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাস হোক আমরা তা চাই না।