এবার ৩২টি ডিম পেড়েছে বাটাগুর কচ্ছপ
ডেস্ক রিপোর্ট : সুন্দরবনের করমজলের প্রজনন কেন্দ্রে দ্বিতীয়বারের মতো ৩২টি ডিম পেড়েছে বাটাগুর বাসকা কচ্ছপ। শনিবার গভীর রাত থেকে রোববার ভোর পর্যন্ত কচ্ছপটি ডিমগুলো পেড়েছে। করমজলের সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।পরিবর্তন ডটকম
মাত্র ১৬ দিনের মাথায় বিরল প্রজাতির বাটাগুর কচ্ছপ থেকে করমজলে দ্বিতীয়বারের মতো এই ডিমগুলি পায় গবেষকরা। এরফলে বাটাগুর কচ্ছপ নিয়ে করমজলে চলা গবেষণা সফলতার মুখ দেখছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এর আগে গত ৩ মার্চ প্রথমবারের মতো ডিম দেয় বাটাগুর কচ্ছপ। নিয়ম অনুযায়ী সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ডিম পাড়ার ৫৫-৬০ দিনের মধ্যে এসব থেকে কচ্ছপের বাচ্চা ফুটবে।
করমজল কচ্ছপ প্রজনন কেন্দ্রের ইনচার্জ মো. আব্দুর রব জানান, বিলুপ্তপ্রায় বাটাগুর বাসকা প্রজাতির কচ্ছপকে রক্ষার জন্য এর প্রজনন, সংরক্ষণ ও সংখ্যা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ চলছে সুন্দরবনে। বাংলাদেশ বন বিভাগ, জু ভিয়েনা (অস্ট্রিয়া) টি.এস.এ (আমেরিকা) এবং আই. ইউ. সি. এন (বাংলাদেশ) যৌথ উদ্যোগে প্রথমবারের মতো সুন্দরবনের করমজলে এ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এ কেন্দ্রে বর্তমানে ৪টি মাদি ও ৬টি পুরুষ বাটাগুর বাসকা কচ্ছপ রয়েছে। ৪টি মাদি কচ্ছপের মধ্যে গত ৩ মার্চ একটি মাদি কচ্ছপ ৩১টি ডিম দেয় এবং সবশেষ রোববার ভোরে আরেকটি মাদি কচ্ছপ ৩২টি ডিম পেড়েছে। বর্তমানে এই প্রজনন কেন্দ্রে ৬৩টি বাটাগুর বাসকা কচ্ছপের ডিম রয়েছে। কচ্ছপ ডিম পাড়ার ৬০ দিনের মধ্যে বাচ্চা পাওয়া যাবে। তাই বর্তমানে ডিমগুলোকে নিবিড় পর্যাবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
মো. আব্দুর রব আরো জানান, জু ভিয়েনা অস্ট্রিয়ার অর্থায়নে এর আগে বাংলাদেশ বন বিভাগের আওতাধীন ভাওয়াল ন্যাশনাল পার্কে এ প্রজাতির কচ্ছপের প্রজনন কার্যক্রম শুরু হয়। এতে সাফল্য পান তারা। পাওয়া যায় প্রচুর কচ্ছপ। করমজলে দ্রুত সময়ের মধ্যে ৪টি কচ্ছপের মধ্যে দুটি বাটাগুর কচ্ছপ ডিম দেওয়ায় গবেষণা সফলতার মুখ দেখছে বলে মন্তব্য এ কর্মকর্তা।
এ ব্যাপারে পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) সাইদুল ইসলাম বলেন, পূর্ব সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রে বিশ্বে ‘বিলুপ্তপ্রায়’ প্রজাতির কচ্ছপ বাটাগুর বাসকার এখন সংরক্ষণ ও প্রজননের মাধ্যমে বংশ বিস্তারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই প্রজনন কেন্দ্রে বাটাগুর বাসকা কচ্ছপ বেড়ে ওঠা, প্রজনন এবং ডিম পাড়ার জন্য ইতিমধ্যেই খনন করা হয়েছে একাধিক পুকুর, নালা, শেডসহ প্যান (কৃত্রিম পুকুর) ও ডিমপাড়ার স্থান।
সাইদুল ইসলাম আরও বলেন, এক সময়ে দেশের উপকূলীয় অঞ্চলসহ লবণাক্ত পানিতে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যেত বাটাগুর বাসকা বা বড় কাটালি কচ্ছপ। এখন সময়ের বিবর্তনে ও মানব কর্তৃক সৃষ্ট কর্মকা-ে এই প্রজাতির কচ্ছপ প্রায় বিলুপ্তের পথে। এই কচ্ছপগুলোর সারাবিশ্বে রয়েছে ব্যাপক চাহিদা। খাদ্য হিসাবেও এর রয়েছে পুষ্টিগুণ। প্রাপ্ত বয়সে একটি কচ্ছপ ২৫-৩০ কেজি ওজনের হয়। এ কচ্ছপ ৭০-৮০ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে বলেও জানান বন বিভাগের এ কর্মকর্তা।