আশকোনায় হানিফের মৃত্যুর বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে ব্যাখ্যা চাইলেন ফখরুল
শাহানুজ্জামান টিটু: রাজধানীর আশকোনায় আত্মঘাতী বোমা হামলায় সন্দেহজনক আটক ব্যক্তির মৃত্যুর ঘটনায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামালের কাছে ব্যাখ্যা দাবি করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল রাজধানীর সেগুনবাগিচায় স্বাধীনতা হলে এক আলোচনা সভায় তিনি এ দাবি জানান। স্বাধীনতা সংগ্রাম শহীদ জিয়ার ভূমিকা ও বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট শীর্ষক আলোচনার আয়োজন করে ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি)।
মির্জা ফখরুল বলেন, ঘটনার সাথে জড়িত থাকার সন্দেহে হানিফ নামের একজনকে আটক করে। তার পরিবার বলছে ২৭ ফেব্রুয়ারি হানিফকে র্যাব আটক করে। এ ঘটনায় স্পষ্ট ব্যাখ্যা দাবি করছি। র্যাবের দাবি সত্য, নাকি পরিবারের দাবি সত্য। তিনি বলেন, পরিবারের দাবি যদি সত্য হয়ে থাকে তাহলে আমরা কোন দেশে বাস করছি। সরকারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্ব হচ্ছে জনগণের নিরাপত্তা দেওয়া এবং সঠিক সত্য জাতির কাছে তুলে ধরা। তাহলে এটা কি? আমি দাবি করছি- সত্য উদঘাটন করতে সুষ্ঠু তদন্ত করুন।
শুধু এটাই নয়, অসংখ্য এমন ঘটনা ঘটছে এমন অভিযোগ করে তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে এক কথা পরিবার বলছে আরেক কথা। তিন মাস আগে তুলে নেওয়া হয়েছে, ছয় মাস আগে তুলে নেওয়া হয়েছে। যদি পরিবারের দাবি সঠিক হয় তাহলে কি এক কথা মনে করতে পারি। এটা অত্যন্ত গভীর ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। এই লোকগুলো তুলে নিয়ে পরবর্তী সময়ে তাদেরকে জঙ্গি বানিয়ে হত্যা করা হচ্ছে। জঙ্গিবাদ প্রকাশ করার জন্য তাদেরকে ব্যবহার করা হচ্ছে। তিনি বলেন, আমরা আশঙ্কা করছি, যে কোনো সময় কাউকে তুলে নিয়ে যাবে এবং জঙ্গিবাদের সঙ্গে জড়িত অভিযোগ দিয়ে তাকে হত্যা করবে।
সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন জঙ্গিবাদ দমনে জনগণকে এগিয়ে আসতে হবে এমনটা উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, অথচ আমরা আগেই বলেছিলাম সমস্যা সমাধানে জনগণ নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করি কিন্তু আপনারা (সরকার) আসেননি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে জঙ্গিবাদের লেশ মাত্র নেই। সরকার আজকে বিভাজন তৈরি করছে। রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতে জঙ্গিবাদকে ব্যবহার করছে। প্রকৃত রহস্য উদঘাটন করতে তারা আন্তরিক নয়। এরা গভীর ভয়ংকর খেলায় মেতেছে। সেই খেলা দেশকে কোথায় নিয়ে যাবে তা আমরা জানি না।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ইতোমধ্যে বাংলাদেশকে জঙ্গিবাদ রাষ্ট্র হিসেবে চিহ্নিত করা শুরু হয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক ভূ-রাজনীতিতে জঙ্গিবাদ একটি ভয়ংকর সমস্যা। যদি আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে এর সমধান না করি তাহলে বাংলাদেশ কোন দিকে যাবে। আফগানিস্তান, লিবিয়া, সিরিয়ার মতো ভাগ্য বরণ করতে হয় কিনা জানি না।
প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, প্রধানমন্ত্রী ভারত যান এটা আমরা চাই। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের যে সমস্যাগুলো আছে এর সমাধান চাই। তিস্তা নদীর পানি চাই, অভিন্ন ৫৪টি নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা চাই। আন্তর্জাতিক নদীর আইন অনুযায়ী ভাগবাটোয়ারার হিসাব অনুযায়ী যাতে আমরা পানি পাই সেটা নিশ্চিত করতে হবে। সীমান্তে আমাদের নাগরিকদের যাতে অন্যায়ভাবে হত্যা না করা হয়। অন্যান্য বিষয়গুলোর সমাধান করতে হবে। কিন্তু কোনো মতেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বিপন্ন করে নয়।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ কোনো ভাবেই পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্ন থাকতে পারে না। তার মানে এই নয় বাংলাদেশ তার নিজস্ব সত্ত্বা বিলিয়ে দিয়ে মিলে যাবে। আমরা যুদ্ধ করেছি, রক্ত দিয়ে দেশের স্বাধীনতা অর্জন করেছি। তাই দেশের স্বাধীনতা রক্ষা করবো।