চলমান প্রকল্পগুলোকে গুরুত্ব দিয়ে আট দফা নীতিমালা করছে পরিকল্পনা কমিশন
সাইদ রিপন: মেগা প্রকল্পসহ চলামান প্রকল্পগুলোকে গুরুত্ব দিয়ে আট দফা নীতিমালা প্রণয়ন করা হচ্ছে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) প্রণয়নে এ নীতিমালা তৈরি করছে পরিকল্পনা কমিশনের কার্যক্রম বিভাগ।
সূত্র জানায়, দেশের সার্বিক অবকাঠামো উন্নয়নে, প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ১০টি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সরকার। মেগাপ্রকল্পগুলোসহ চলমান আরও ১ হাজার ৩৬৫টি প্রকল্প নির্দিষ্ট সময়ে বাস্তবায়নে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। যথাসময়ে প্রকল্পের কাজ শেষ করার লক্ষ্যেই আট দফা নীতিমালা তৈরি করা হচ্ছে।
দেশের সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার ও কাক্সিক্ষত সুফল জনগণের মাঝে যথাসময়ে পৌঁছে দিতে সরকার বদ্ধপরিকর। এ লক্ষ্যেই নতুন প্রকল্প গ্রহণের চেয়ে চলমান প্রকল্প যথাসময়ে বাস্তবায়ন গুরুত্ব পাচ্ছে এ নীতিমালায়। এডিপিতে অন্তর্ভুক্তির যোগ্য প্রকল্প এবং দারিদ্র্য নিরসনসহ সংশ্লিষ্ট তথ্যাদি বিস্তারিত থাকবে নীতিমালায়। যেখানে কোনো প্রকল্পের দারিদ্র্য নিরসন ও নতুন কর্মসংস্থানের বিষয়টি অগ্রাধিকার পাবে।
পরিকল্পনা বিভাগের সচিব জিয়াউল ইসলাম বলেন, দেশের দারিদ্র্যবিমোচনসহ এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে, আমাদের চলমান প্রকল্পগুলো আগে বাস্তবায়ন করতে হবে। তাই এডিপিতে অহেতুক প্রকল্পের বোঝা বাড়িয়ে লাভ নেই। প্রয়োজন বিবেচনায় এডিপিতে প্রকল্প অন্তর্ভুক্ত করা হবে। আগামী অর্থবছর থেকেই নতুন নীতিমালা প্রয়োগ করা হবে।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, নতুন নীতিমালা মূলত ‘ভিশন ২০২১’ কে ঘিরে। যার লক্ষ্য হচ্ছেÑ স্থিতিশীল সামষ্টিক অর্থনৈতিক আস্থার ধারাবাহিকতা বজায় রেখে উচ্চতর প্রবৃদ্ধি অর্জনের মাধ্যমে মাথাপিছু আয় বাড়ানো। দারিদ্র্যের হার হ্রাসের মাধ্যমে জীবনমানের উন্নয়ন এবং ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়া। এছাড়া রয়েছে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, সরকারি ও বেসরকারি বিনিয়োগ চাহিদা নিরুপণ, স্থানীয় সম্পদ আহরণে গতি আনা এবং বৈদেশিক সাহায্য প্রাপ্তির সক্ষমতা বাড়ানো।
আট দফা নীতিমালা অনুসারে সকল সংস্থা ও বিভাগ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে প্রকল্পভিত্তিক বরাদ্দের প্রাথমিক চাহিদা পরিকল্পনা কমিশনে পাঠাবে। তবে পরিকল্পনা শৃঙ্খলা ও বাজেট ব্যবস্থাপনার স্বার্থে ২০১৬-১৭ অর্থবছরের সংশোধিত এডিপিতে তালিকাভুক্ত সম্ভাব্য কোনো প্রকল্প ২০১৭-১৮ অর্থবছরেরে এডিপিতে অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাব করা যাবে না। শুধুমাত্র অনুমোদিত চলমান প্রকল্প বরাদ্দসহ এডিপিতে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের বাস্তবায়নের সক্ষমতাকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হবে।
নতুন স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা ও করপোরেশনের নিজস্ব অর্থায়নের প্রকল্পগুলো এডিপিতে পৃথক তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে। বৈদেশিক সাহায্য প্রাপ্তির সুবিধার্থে বরাদ্দবিহীন অনুমোদিত নতুন প্রকল্পেরও আলাদা তালিকা করা হবে। পৃথক তালিকায় সংযুক্তির জন্য পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) প্রকল্পের নতুন তালিকা করারও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে নীতিমালায়। মোট এডিপি বরাদ্দের পর গুরুত্বপূর্ণ চলমান প্রকল্পে খাতভিত্তিক বরাদ্দের বিষয়ে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে কার্যক্রম বিভাগ।
সূত্র জানায়, সরকারের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ দশটি প্রকল্প হচ্ছেÑ পদ্মা বহুমুখী সেতু, পদ্মায় রেলসেতু, চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার ও রামু থেকে ঘুমধুম পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ, ঢাকা মাস র্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট (এমআরটি), পায়রা বন্দর নির্মাণ, সোনাদিয়া গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ, মাতারবাড়ী আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কোল ফায়ার্ড পাওয়ার, মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন (প্রথম পর্যায়) এবং এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণ। সম্পাদনা: এনামুল হক