একাদশ সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ তৈরির কাজ শুরু হচ্ছে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনে আইন সংস্কার
সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করবে
উম্মুল ওয়ারা সুইটি: একাদশ জাতীয় নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে পরিপূর্ণ পরিকল্পনা সংবলিত একটি রোডম্যাপ প্রণয়নের কাজ শুরু করেছ নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এতে সীমানা জটিলতা, ভোটার তালিকা হালনাগাদ ও নির্বাচন পদ্ধতি সংক্রান্ত সকল বিষয়ের একটি সুস্পষ্ট দিক-নির্দেশনা থাকবে। আর সব দলকে নির্বাচনে আনতে শুরুতেই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আরপিও (গণপ্রতিনিধিত্ব আইন) নিয়ে কথা বলবে। নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে প্রয়োজনে আইনের সংস্কার করবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
ইসি সূত্র জানিয়েছে, দশম জাতীয় সংসদের মেয়াদ শেষ হতে আর দুই বছর বাকি। সংবিধান অনুযায়ী ইসি ২০১৮ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসের মধ্যে নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। সেই অনুযায়ীই রোডম্যাপ করা হবে। এর আগে ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য এটিএম শামছুল হুদার নেতৃত্বাধীন ইসি রোডম্যাপ করেছিল। এবার দ্বিতীয়বারের মতো নির্বাচনি রোডম্যাপ হচ্ছে। নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম এই প্রতিবেদককে বলেন, পরবর্তী নির্বাচনের সময় আমরা ’১৮ ডিসেম্বর থেকে ’১৯ এর জানুয়ারিতে ধরে নিয়েই ছক করছি। ওই নির্বাচনের জন্য একটি পূর্ণ রোডম্যাপ তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ওই রোডম্যাপ নিয়ে আলোচনা হবে। তিনি বলেন, আগের রোডম্যাপ পর্যালোচনা করে প্রয়োজনে সংযোজন বিয়োজন করা হবে। এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে ইসি একটি অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করবে। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনে আইনের সংস্কার করা হবে। তিনি বলেন, নির্বাচন বিষয়ে সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ করা হবে।
সাবেক নির্বাচন কমিশনার ছহুল হোসাইন বলেন, এটি অবশ্যই একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ। জাতীয় নির্বাচনের আগে রোডম্যাপ হলে সুবিধা হলো, জনগণ নির্বাচন সম্পর্কে জানতে পারে এবং বুঝতে পারে। জানা যাবে কবে নির্বাচন হবে এবং কিভাবে নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। পাশাপাশি ইসির জন্যও বিষয়টি ভালো। রাজনৈতিক দল, দেশের জনগণ এবং নির্বাচন প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত সবারই নির্বাচন সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা থাকবে। তিনি রোডম্যাপ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার আহ্বান জানান।
সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার (অব.) সাখাওয়াত হোসেন বলেন, শামছুল হুদা কমিশন প্রথমবারের মতো ২০০৮ সালে রোডম্যাপ করেছিল। এটি অনেক ভালো উদ্যোগ। রোডম্যাপ করা হলে, জনগণ এবং রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচন সম্পর্কে সবকিছুই জানতে পারবে। সাখাওয়াত সেই সময় নির্বাচন কমিশনার ছিলেন। তিনি বলেন, আমরা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করেছিলাম। কারণ নির্বাচনের প্রধান অনুঘটক হলো রাজনৈতিক দল বা নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সংশ্লিষ্ট মহল। তাই রোডম্যাপ নিয়ে ইসি দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করলে অনেক বেশি ফলপ্রসূ হবে।
নির্বাচন কমিশনের একজন কর্মকর্তা জানান, প্রস্তাবিত রোডম্যাপে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনা, প্রয়োজনে আইন সংশোধনসহ রাখা হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ অনেক বিষয়। নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের পরিকল্পনা নেই ইসির। তবে প্রয়োজনে যেন তাৎক্ষণিকভাবে সেনাবাহিনীকে ব্যবহার করা যায় সেই প্রস্তুতি রাখা হবে। সম্পাদনা: এনামুল হক