ইসলামে উত্তম চরিত্র
আহমাদ আব্দুল্লাহ
চরিত্র একটি আয়নার মত, যাতে মানুষের ভেতরগত ভালোমন্দ সবদিক অনায়াসে দৃষ্টিগোচর হয়। ফুটে উঠে অভ্যন্তরীণ শুদ্ধ ভাবধারা কিংবা অসৎ ইচ্ছা। এজন্য সবচেয়ে ভালো দিক হলো, উত্তম চরিত্র। আর সর্বপেক্ষা মন্দ দিক,খারাপ চরিত্র।
উত্তম চরিত্র আর দানশীলতার মাধ্যমে মুসলমান ঈমানের উঁচু পর্যায়ে পৌঁছতে পারে। পক্ষান্তরে বদ আখলাক আর কৃপণতা মানুষকে নিম্ন থেকে নিম্নতর নিয়ে যায়। মানুষের বাহ্যিক চরিত্র পোশাক। কিন্তু অভ্যন্তরীণ পোশাক হলো, উত্তম চরিত্র। কেননা, এ চরিত্রের দ্বারা মানুষ তার জীবনকে উজ্জ্বল করতে পারে। প্রতিটি ক্ষেত্রে উন্নতির জন্য উত্তম চরিত্রের বিকল্প পথ নেই। চরিত্রই একজন মানুষকে সফলতার উচ্চশিখরে নিয়ে যায়। আবার এ চরিত্রই একজন মানুষকে অতল গহ্বরে নিক্ষেপ করে। চরিত্র এবং ইসলামের মাঝে গভীর সম্পৃক্ততা রয়েছে। ইসলামের পূর্ণতা উত্তম চরিত্রের মাধ্যমে এসেছে। মানুষের সকল ভালো দিকগুলো চরিত্রের দ্বারাই ফুটে উঠেছে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জীবনী আমাদের জন্য সর্বক্ষেত্রে এক উত্তম দৃষ্টান্ত। আল্লাহ তায়ালার নিকট সরচেয়ে প্রিয় হলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। তিনি পুরো জীবনভর মানুষের মন জয় করেছেন উত্তম আচরণ দিয়ে। বড়দের সম্মান আর ছোটদের স্নেহ করে। সমস্ত সৃষ্টিজীব তার আচরণে মুগ্ধ, ভালোবাসায় সিক্ত। আর এ কারণেই সাহাবিগণ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে প্রাপ্ত উত্তম চরিত্র দিয়ে সফলতার দ্বার উন্মুক্ত করেছেন। জয় করেছেন মানুষের মন। এর মাধ্যমে অসৎ চিন্তাভাবনা, অশ্লীল পরিবেশ দূরীভূত করেছেন।
মানুষের মনোভাব নানা রকম। কখনো নীরব, কখনো সরব। কখনো সহজ, কখনো কঠোর। কখনো জ্ঞানী, কখনো মূর্খ। কখনো লোভি, কখনো অল্পতুষ্টি। কখনো ধৈর্যশীল, কখনো অধৈর্যী। কখনো কৃতজ্ঞ, কখনো অকৃতজ্ঞ। প্রতিটি মানুষ তার নিজ ইচ্ছার উপর চলে। সে চাইলে ভালোটা গ্রহণ করবে অন্যথা খারাপটা। ইসলামে ভালোমনের মানুষের সঙ্গে সাক্ষাত করা সওয়াবের কাজ। ভালো বন্ধু সে, যার সঙ্গ উপকার বয়ে আনে, স্মরণ হয় মহান রাব্বুল আলামীনের। আমাদের আশেপাশে বিভিন্ন সংলাপে, কাজকর্মে, রাজনৈতিক ইত্যাদি সকল ক্ষেত্রে একজন অন্যজনের নামে বদনাম আর অশ্লীল বাক্য ছুঁড়ে মারেন। শান্তিময় ইসলাম থেকে দূরে সরে যাচ্ছেন অনেকে। মানুষ তার প্রবৃত্তিকে আঁকড়ে ধরে নিজের মূল সত্ত্বাকে ভুলে যাচ্ছে। কিন্তু যখন আমরা ইসলামের ছায়াতলে এসে পড়বো, উত্তম চরিত্রকে আপন শক্তি হিসেবে গ্রহণ করবো, তখনই সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা হবে। সমাজ সফলতার পথ দেখতে পারবে। কারণ একমাত্র উত্তম চরিত্রের মাধ্যমের শত্রু মিত্রে পরিণত হয়।
কাফের ইসলামের পথে ফিরে আসে। অবুঝকে বুঝ দেওয়া যায়। নিজেদের মাঝে চরিত্র অনেক বড় প্রভাব ফেলে। তাই সকলের উচিৎ উত্তম চরিত্র দিয়ে মানুষের মন জয় করা, সম্মুখে অগ্রসর হওয়া। আর এর মাধ্যমেই সফলতার দ্বার উন্মুক্ত হবে ইনশাআল্লাহ।