মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতামুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্ন
শাহরিয়ার কবির
স্বাধীনতার ৪৬ বছরে বাংলাদেশ। এই সময়ে আমাদের অর্জন কী? অনেক অর্জন। অল্পপরিসরে বলে শেষ করা যাবে না। বিশ্ব সভায় বাংলাদেশ একটা স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আজকে আর্থসামাজিক উন্নয়নের বিভিন্ন সূচকে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশগুলোর রোল মডেলে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশের পতাকা সারাবিশ্বে উড়ছে। জাতিসংঘে বাংলা ভাষায় ভাষণ দেওয়া হচ্ছে। এ রকম বহু অর্জন আমাদের রয়েছে। তবু এখনো আমাদের লড়াই করতে হচ্ছে। আদর্শের লড়াইয়ে আমাদের যুক্ত হতে হচ্ছে। যে আদর্শ, যে চেতনা বাস্তবায়নের জন্য আমরা একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ করেছি, ৭২-এর সংবিধানে যা রাষ্ট্রের মূলনীতি ছিল। সেগুলো আমরা এখনো পুরোপুরি প্রতিষ্ঠা করতে পারিনি। আমাদের মহান নেতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন, মুক্তির ডাক দিয়েছিলেন। আমাদের রাজনৈতিক স্বাধীনতা আমরা অর্জন করেছি। কিন্তু অর্থনৈতিক, সামাজিক মুক্তি, সার্বিকভাবে সমাজে এখনো বৈষম্য রয়েছে। সাম্প্রদায়িক অসাম্য রয়েছে, সহিংসতা রয়েছে। মৌলবাদের উত্থান মুক্তিযুদ্ধের অর্জনগুলোকে বারবার বাধাগ্রস্ত করছে। আমাদের আর্থসামাজিক অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করছে। এর জন্য সবাইকে সম্মিলিতভাবে বসতে হবে। এটা সরকারের একার পক্ষে সম্ভব নয়। জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে আমাদের যে লড়াই, সংগ্রাম চলছে তা এখনো চলমান।
এই সংগ্রামে এখন সরকারের পাশে সবাইকে দাঁড়াতে হবে, এ কাজে এগিয়ে আসতে হবে। যেহেতু আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছি ঐক্যবদ্ধভাবে, ধর্ম-বর্ণ দলমতের ঊর্ধ্বে ওঠে। দেশকে রক্ষা করার সংগ্রামে আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবেই কাজ করতে হবে। একটা চেতনা ছিল আমাদের মুক্তিযুদ্ধে। সেই চেতনাকে বাস্তবায়নের জন্য আমাদের সামনে আরও লড়তে হবে। লড়াই করতে হবে এবং ৩০ লাখ শহীদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
বাংলাদেশের সামনে অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। যেটা বর্তমান সরকারের কর্মসূচিতেই আছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মহাজোট সরকার ঘোষণা দিয়েছেন বাংলাদেশকে ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম সারির দেশ এবং ২০৪১ সালে উন্নত দেশের সারিতে নিয়ে যাবে। দেশ যে ধারায় অগ্রসর হচ্ছে এখানে যদি কোনো বিপর্যয় না ঘটে, এ উন্নয়নের ধারা যদি অব্যাহত থাকে তাহলে আমি আশাবাদীÑ ২০৪১ সালে উন্নত দেশের সারিতে বাংলাদেশের স্থান হবে।
যারা এই উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করতে চাইছে তাদের প্রতিহত করতে হবে। উন্নয়নকে নিবিঘর্œ করবার জন্য। আর্থসামাজিক উন্নয়নকে নির্বিঘœ করতে হলে মৌলবাদ, জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার অভিশাপ থেকে দেশ ও জাতিকে মুক্ত করতে হবে।
পরিচিতি: ভারপ্রাপ্ত সভাপতি, একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটি
মতামত গ্রহণ: তানভীন ফাহাদ
সম্পাদনা: আশিক রহমান