জতিসংঘের তদন্তের উদ্যোগ প্রত্যাখান করেছে মিয়ানমার
ইমরুল শাহেদ: মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে রোহিঙ্গা মুসলিমদের উপর দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর চালানো হত্যা, নির্যাতন, ধর্ষণ বিষয়ে সত্যানুসন্ধানের জন্য আন্তর্জাতিক তদন্ত মিশন পাঠাতে জাতিসংঘ মানবাধিকার সংস্থার সকলে একমত হয়েছেন। কিন্তু মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত হাতিন লিন সিদ্ধান্ত গৃহীত হওয়ার আগে বক্তৃতা দিতে গিয়ে বলেন, এই ধরনের কোনো উদ্যোগ গ্রহণযোগ্য হবে না বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, মিয়ানমারের জাতীয় কমিশন বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে সত্য অনুসন্ধানের জন্য কথা বলেছে। আগস্টের মধ্যে এর প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে। কিন্তু জাতিসংঘ মানবাধিকার সংস্থা ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন প্রস্তাবিত এবং যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত একটি সিদ্ধান্ত প্রস্তাব গ্রহণ করেছে। এতে কোনো ভোটের প্রয়োজন হয়নি। সিদ্ধান্ত প্রস্তাবে ‘অপরাধীদের জবাবদিহিতা এবং ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে’ বলে বলা হয়েছে। গত বছরের অক্টোবর পর্যন্ত বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া ৭৫ হাজার রোহিঙ্গার মধ্যে ২২০ জনের সাক্ষাতকারের ভিত্তিতে জাতিসংঘ গত মাসে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তাতে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী রোহিঙ্গাদের উপর গণহত্যা চালিয়েছে এবং দলবদ্ধভাবে চালিয়েছে ধর্ষণ। এটা মানবতাবিরোধী বড় ধরনের অপরাধ এবং খুব সম্ভবত সেটা করা হয়েছে মিয়ানমারকে রোহিঙ্গা মুক্ত করার জন্য। সিদ্ধান্ত প্রস্তাবের বিষয়ে লিন বলেন, ‘মিয়ানমার এ ধরনের কোনো কার্যক্রমকেই গ্রহণ করবে না। দেশের পরিস্থিতির সঙ্গে এই সিদ্ধান্ত সঙ্গতিপূর্ণ নয়। মিয়ানমারের পরিস্থিতি মোকাবিলার ভার মিয়ানমারের জনগণের হাতে ছেড়ে দেওয়াই উচিত।’ তিনি বলেন, ‘আমরা সেটাই করব যা করা দরকার। আর সেটা করব সাবধানতা ও সততার সঙ্গেই।’ চীন ও ভারত বলেছে তারা এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত নয়। চীনের প্রতিনিধি বলেছে, রাতারাতি এ সমস্যার সমাধান করা যাবে না। তবে ৪৭ সদস্য দেশের এই সিদ্ধান্তকে সমাজকর্মীরা মাইলফলক হিসেবে উল্লেখ করেছে। এটা পুরোপুরি আন্তর্জাতিক তদন্ত কমিশন নয় বলে কেউ কেউ আক্ষেপ করেছেন এবং সংশ্লিষ্ট দেশের সরকারদের সহযোগিতাও কামনা করেছেন তারা। ফোরাম-এশিয়ার নির্বাহী পরিচালক জন সেমুয়েল এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘দুর্ভাগ্যজনক ব্যাপার হলো বার্মা সরকার এ সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত পোষণ করেনি।’ সূত্র : রয়টার্স