লভ্যাংশ নিয়ে আইসিসিতে নতুন আলোচনা, ভারত পাচ্ছে অধিক সুবিধা
স্পোর্টস ডেস্ক : শশাঙ্ক মনোহর চেয়ারম্যান পদে থাকতে রাজি হওয়ার পরই আইসিসির আর্থিক কাঠামো নিয়ে নতুন করে চিন্তাভাবনা শুরু হয়ে গিয়েছে। এ ব্যাপারে আইসিসি ও ভারতীয় বোর্ডের মধ্যে নতুন করে কথাবার্তাও চালু হয়েছে।
এন শ্রীনিবাসন আইসিসি প্রধান থাকাকালীন ভারতের জন্য সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ লভ্যাংশ আনার ব্যবস্থা করেছিলেন। মনোহর প্রথম স্বাধীন চেয়ারম্যান হয়ে সেই প্রস্তাব খারিজ করে সব দেশের জন্য সমান অধিকারের নকশা ফিরিয়ে আনার প্রস্তাব দেন। তাঁর প্রস্তাব বাকিদের দিক থেকে বিপুল সমর্থন পেলেও ভারতীয় বোর্ড আপত্তি তুলছিল।
এখন যা পরিস্থিতি, দু’পক্ষে সমঝোতার মাধ্যমে একটা গ্রহণযোগ্য নকশা তৈরি করার চেষ্টা চলছে। মনোহর আইসিসি চেয়ারম্যান পদে ফিরতে রাজি হন শুক্রবার। আর শনিবার থেকেই এ নিয়ে আইসিসির সঙ্গে ভারতীয় বোর্ডের পর্যবেক্ষকদের আলোচনা শুরু হয়েছে। আইসিসি নতুন প্রস্তাব দিয়েছে, ভারত বেশি লভ্যাংশ নিক। কিন্তু সেটা যেন এত বেশি না হয় যাতে অন্যান্য দেশের ভাগ্যে কণিকামাত্র জোটে।
ঠিক কত পরিমাণ লভ্যাংশ ভারতকে দেওয়া হবে, সে ব্যাপারে নির্দিষ্ট কোনও অঙ্ক ঠিক করেনি আইসিসি। তবে নতুন রফায় শ্রীনির সুপারিশ মতো ২০ শতাংশ লভ্যাংশ পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। আইসিসির একজন কর্তা বলেন, ‘ভারতীয় ক্রিকেটারেরা যে সবচেয়ে বেশি টাকা আনে, তা সকলেই মেনে নিচ্ছে। সেই অবদানের প্রতিফলন লভ্যাংশে থাকবে। তবে অন্যান্যদের বিরাট তফাত না থাকার পক্ষে বেশির ভাগ সদস্য দেশ।’
মনোহরকে নিয়ে মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে আইসিসিতে এখন হাওয়া সম্পূর্ণ ঘুরে গিয়েছে। চারটি দেশ মনোহরের বিপক্ষে চলে গিয়েছিল বলে যে মনে করা হচ্ছিল, তা এখন আর নেই। বরং সর্বসম্মত ভাবে সব দেশের অনুরোধে সাড়া দিয়ে পদত্যাগপত্র আপাতত ফিরিয়ে নিয়েছেন মনোহর। একমাত্র বিরোধী শ্রীলঙ্কা। তারা ভোটাভুটি থেকে দূরে ছিল।
মনোহরকে ফেরানোর ব্যাপারে সবচেয়ে বড় ভূমিকা নিয়েছেন সিঙ্গাপুর ক্রিকেটের প্রধান ইমরান খোয়াজা। তিনিই বাকি সদস্যদের বোঝান, মনোহরকে এখন ছেড়ে দিলে আইসিসি-তে নানা সংস্কার এনে গঠনতন্ত্র বদলের উদ্যোগ ধাক্কা খাবে। তিনিই অন্যদের বোঝান, যে করেই হোক আগামী জুন পর্যন্ত মনোহরকে রাখতেই হবে। সিঙ্গাপুর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট মানচিত্রে বড় কোনও নাম নয়। কিন্তু আইসিসিতে ইমরান শীর্ষ কর্তাদের মতোই প্রভাবশালী এখন। তিনি অ্যাসোসিয়েট দেশগুলির প্রধান। তার ওপর আইসিসির ডেভেলপমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান। বাকিদের রাজি করিয়ে ‘বন্ধু’ মনোহরকেও মানান তিনি।
শ্রীনির দাবি ছিল, ভারত যে হেতু বিশ্ব ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি টাকা আমদানি করে, সবচেয়ে বেশি মুনাফাও তাদের প্রাপ্য। শ্রীনি তৈরি করেছিলেন ‘বিগ থ্রি’। ত্রিশক্তির জোটে ভারত পাচ্ছিল মুনাফার সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ। অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ডও বেশি পাচ্ছিল। মনোহর এসে ত্রিশক্তি ভেঙে দেন।
এখন যা দাঁড়িয়েছে, মনোহর তাঁর ‘সব দেশের জন্য সমান আর্থিক অধিকার’-এর নীতি ছেড়ে বেরোতে রাজি হয়েছেন। কিন্তু ভারতকেও ২০ শতাংশের দাবি ছাড়তে হবে। অন্যদের চেয়ে কোহালিদের বেশি টাকা মঞ্জুর করবে আইসিসি। কিন্তু ভারত ২০ টাকা পেল আর ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২ টাক, অতটা বৈষম্য রাখতে রাজি নয় তারা।-ভারতীয় পত্রিকা অবলম্বনে