জঙ্গিরা ব্যাংকিং চ্যানেলে অর্থ লেনদেন করছে : দুদক চেয়ারম্যান
নাশরাত আর্শিয়ানা চৌধুরী: দুনীতি দমন কমিশন (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেছেন, জঙ্গিদের অর্থ ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে আসে। আর আসে হুন্ডির মাধ্যমে। তবে হুন্ডির মাধ্যমে ব্যাপক অর্থ আসে বলে মনে হয় না। এই হুন্ডি বন্ধ করতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), বাংলাদেশ ব্যাংক ও দুদক একসঙ্গে কাজ করছে। তিনি মনে করেন, নিয়ম অনুযায়ী আর্থিক লেনদেন হলে জঙ্গি অর্থায়ন বন্ধ হবে। গতকাল দুদক কার্যালয়ে ‘দুর্নীতি প্রতিরোধ সপ্তাহ-২০১৭’ এর উদ্বোধন করেন। ওই উদ্বোধন শেষে তিনি বলেন, পুলিশ বিগত সময়ে বিভিন্ন জঙ্গি আস্তানায় অভিযান চালিয়েছে, সেখানে প্রচুর অর্থ পাওয়া গেছে। এই অর্থ তো ব্যাংকিং সিস্টেম থেকেই আসে। টাকা তো হাওয়া থেকে আসে না।
এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় দুর্নীতি হলে শেষ-নিজে বাঁচবো, বাঁচবে দেশ। এই অনুষ্ঠান চলবে ১ এপ্রিল পর্যন্ত। দুদক বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।
ইকবাল মাহমুদ বলেন, দুর্নীতি রোধ করতে পারলে জঙ্গিবাদও ঠেকানো যাবে। দুর্নীতির সংজ্ঞা করতে গেলে জঙ্গিবাদ একটি উদাহরণ। দুর্নীতিকে টেনে ধরতে পারলে জঙ্গিবাদ টানা সম্ভব হবে। দুর্নীতির লাগাম যদি টানা যায়, ছেলে-মেয়েদের যদি সঠিকভাবে লেখাপড়ায় মনোনিবেশ করাতে পারি, শিশুদের সঠিকভাবে মানুষ করতে পারলে তারা জঙ্গিবাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত হবে না।
তিনি বলেন, জঙ্গিবিরোধী অভিযানে উদ্ধার হওয়া বিপুল পরিমাণ টাকা ব্যাংক ব্যবস্থার মধ্যদিয়েই জঙ্গিদের হাতে যাচ্ছে। পুলিশ বিগত সময়ে বিভিন্ন জঙ্গি আস্তানায় অভিযান চালিয়েছে। অনেক অর্থও পাওয়া গেছে। এই অর্থ ব্যাংকিং সিস্টেম থেকেই আসে। টাকা তো হাওয়া থেকে আসে না। তিনি মনে করেন, বাংকগুলোকে নীতিমালা ও বিধিমালা মেনে পরিচালনা করতে হবে। ইতোমধ্যে দুদক থেকেও ব্যাংকগুলোকে দুদকের পক্ষ থেকে বার্তা দেওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, এখন ঋণ বা অর্থ আদান প্রদানে নিয়ম মানা হচ্ছে। ব্যাংকিং সিস্টেম যদি আমরা সঠিকভাবে চালাতে পারি, জঙ্গি অর্থায়ন বন্ধ হবে। প্রত্যেকের কাছে গিয়ে জঙ্গি অর্থায়ন বন্ধ করা সম্ভব না। একটি সিস্টেম চালু করতে হবে। সেই সিস্টেমে আমরা কাজ করছি।
জঙ্গি নির্মূল ও তাদের অর্থায়ন বন্ধ করার বিষয়ে দুদকের বিষয়ে জানতে চাইলে ও দুদকের এখতিয়ারে এটা রয়েছে কিনা এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জঙ্গির বিষয়টা দুদকের কাজের মধ্যে সরাসরি পড়ে না। জঙ্গিবাদ ঘুরিয়ে আসে।
দুর্নীতি প্রতিরোধ সপ্তাহ পালনের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, সারা দেশের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ যেমন-ছাত্র, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক, সাংস্কৃতিকসেবী যারা আছেন সবাই মিলে দুর্নীতির করাল গ্রাস থেকে দেশকে মুক্ত করা। সবাই এক সুঁতোয় থেকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিলে দুর্নীতি দূর করা সম্ভব।
অনুষ্ঠানে দুদক কমিশনার ড. নাসিরউদ্দীন আহমেদ, এএফএম আমিনুল ইসলাম এবং কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও উপস্থিত ছিলেন। দুর্নীতিবিরোধী আলাকচিত্র ও পোস্টার প্রদর্শনী উদ্বোধন করেন ইকবাল মাহমুদ। সম্পাদনা : রফিক আহমেদ