আইএমইডির প্রতিবেদন ২৬ মার্চ সম্পর্কে এখনো অন্ধকারে ৫৬ ভাগ মানুষ!
ডেস্ক রিপোর্ট: বাঙালি জাতির ইতিহাসে অন্যতম অবিস্মরণীয় দিন ২৬ মার্চ। মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে প্রতিবছর রাষ্ট্রীয়ভাবে এ দিবসটি পালন করা হয়। সেই সঙ্গে বেসরকারি এমনকি ব্যক্তিগতভাবেও এ দিবস পালনের ব্যাপকতা রয়েছে। কিন্তু এত কিছুর মধ্যেও এখনো স্বাধীনতা দিবস বা ২৬ মার্চ সম্পর্কে অন্ধকারে রয়েছেন অনেকেই। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের এক জরিপে উঠে এসেছে এ চিত্র। সূত্র : দ্য রিপোর্ট
এতে বলা হয়েছে, জরিপে অংশ নেওয়া ৫৭৬ জনের মধ্যে ৫৬ শতাংশ উত্তরদাতা ২৬ মার্চ সম্পর্কে জানেন না বা ভুল উত্তর দিয়েছেন। এক্ষেত্রে আলাদাভাবে দেখলে দেখা যায়, একেবারেই জানেন না ৩৩ দশমিক ৮০ শতাংশ উত্তরদাতা। শুধু তাই নয়, ২৫ মার্চ কি ঘটেছিল সে বিষয়েও জানেন না ৫০ শতাংশ উত্তরদাতা।
প্রতিবেদন সম্পর্কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. এএসএম আমানুল্লাহ বলেন, ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাকহানাদার বাহিনী এদেশের নিরীহ বাঙালিদের নির্মমভাবে ধরে নিয়ে গিয়ে হত্যা করেছিল। তাদের স্মৃতি অম্লান করে রাখার জন্য বাংলাদেশ সরকার বিভিন্ন পর্যায়ে বধ্যভূমি সংরক্ষণ ও স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের পরিকল্পনা নেয়। এরই অংশ হিসেবে বাস্তবায়িত বধ্যভূমি সংরক্ষণ ও স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ প্রকল্পের মূল্যায়ন করতে গিয়ে অতিরিক্ত গবেষণা হিসেবে এই জরিপটি করেছি। সেখানে দুঃখজনক ঘটনা হিসেবে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আমাদের স্বাধীনতা দিবস কবে? এ প্রশ্নের উত্তরে জরিপে যারা অংশ নিয়েছেন, তাদের মধ্যে ২৬ মার্চ বলতে পেরেছেন ৪৩ দশমিক ৬০ শতাংশ উত্তরদাতা। উত্তর দেননি ৫ দশমিক ৬০ শতাংশ। পাকিস্তানি বাহিনী আত্মসমর্পণ বলেছেন শূন্য দশমিক ৯০ শতাংশ, ২১ ফেব্রুয়ারি বলেছেন ৫ দশমিক ৭০ শতাংশ এবং বিজয় দিবস বলেছেন ১০ দশমিক ৫০ শতাংশ উত্তরদাতা।
অন্যদিকে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কি হয়েছিল? এ প্রশ্নের উত্তরে জানি না বলেছিলেন ৪০ দশমিক ৪০ শতাংশ উত্তরদাতা। এছাড়া কালরাত্রি বা অপারেশন সার্চলাইট সঠিকভাবে বলতে পেরেছিলেন ৪২ দশমিক ৭০ শতাংশ মানুষ। উত্তরদাতাদের মধ্যে স্বাধীনতা দিবস বলেছিলেন ৩ দশমিক ১০ শতাংশ, গণহত্যা বলেছিলেন ৬ দশমিক ১০ শতাংশ, পাঞ্জাবিরা হামলা করেছিল বলেছেন ৫ দশমিক ৯০ শতাংশ, বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তানে ধরে নিয়ে গিয়েছিল বলেছেন শূন্য দশমিক ৭০ শতাংশ, অন্যান্য উত্তর দিয়েছিলেন শূন্য দশমিক ২০ শতাংশ এবং উত্তর দেননি শূন্য দশমিক ৫০ শতাংশ উত্তরদাতা।
এছাড়া আইএমইডির সুপারিশে আরও বলা হয়েছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ১৪ ডিসেম্বর বধ্যভূমিতে নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভ পরিদর্শনে নিয়ে যাওয়া যেতে পারে। এ ব্যাপারে সরকারি প্রজ্ঞাপন জারি করে জেলার প্রতিটি স্কুল, মাদ্রাসা ও কলেজ থেকে প্রতিবছর একবার করে হলেও স্মৃতিস্তম্ভ পরিদর্শন করা যেতে পারে। এছাড়া যেসব এলাকায় বধ্যভূমিতে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়েছে, সেখানে মুক্তিযুদ্ধ পাঠাগার, জাদুঘর, মুক্তমঞ্চ বা মিলনায়তন তৈরি করে বধ্যভূমিগুলোকে একটি মুক্তিযুদ্ধ কেন্দ্র হিসেবে রূপান্তর করা সম্ভব। সেই সঙ্গে বধ্যভূমির আশপাশে পর্যটন কেন্দ্র বা পিকনিক স্পট ইত্যাদি দর্শনীয় স্থাপনা গড়ে তোলা যেতে পারে। সম্পাদনা : এনামুল হক