সুন্দরবনের ‘ছোট রাজু’বাহিনীর আত্মসমর্পণ
বরিশাল প্রতিনিধি: দশম বাহিনী হিসেবে সুন্দরবনের কুখ্যাত জলদস্যু ‘ছোট রাজু’ বাহিনীর প্রধানসহ ১৫ সদস্য গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা বারোটায় বরিশাল নগরীর রূপাতলীস্থ র্যাব-৮ এর সদর দপ্তরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসমর্পণ করেছেন। এরআগে গত বুধবার সুন্দরবনের শরনখোলা এবং চাঁদপাই রেঞ্জে র্যাবের বিশেষ অভিযানে কুখ্যাত জলদস্যু ‘ছোট রাজু’ বাহিনীর প্রধান রাজুসহ ১৫ সদস্য আত্মসমর্পণ করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র্যাব-৮ এর উপ-অধিনায়ক মেজর আদনান কবির।
আত্মসমর্পণকারীরা হলেন- খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাট জেলার বাসিন্দা ও ‘ছোট রাজু’ বাহিনীর ড্রধান মো. রাজু মোল্লা ওরফে ছোট রাজু (৪৮), মনিরুল ইসলাম (৩৫), সিরাজুল ইসলাম গাজী (২৯), আলফাজ হোসেন (২৫), হারুন সরদার (৩৮), বিল্লাল গাজী ওরফে ম্যাজিক বিল্লাল (৩৬), খতিব গাজী (৩৭), মিকাইল গাজী (৩৮), কামরুল সরদার (৩৯), ফরহাদ সরদার (২৬), সালাম গাজী (৩৭), মিলন শেখ (২৫), ফরহাদ গাজী (৩২), সাব্বির শেখ (৪২) ও মনিরুল গাজী মনি (৩৯)। র্যাব সূত্রে জানা গেছে, আত্মসমর্পনকারীদের কাছ থেকে ২১টি দেশী-বিদেশী আগ্নেয়াস্ত্র এবং সকল প্রকার অস্ত্রের প্রায় এক হাজার ২৩৭ রাউন্ড তাজা গুলি উদ্ধার করা হয়। যারমধ্যে পাঁচটি বিদেশী একনালা বন্দুক, পাঁচটি বিদেশি দোনালা বন্দুক, পাঁচটি পয়েন্ট ২২ বোর বিদেশি এয়ার রাইফেল, দুইটি বিদেশি পয়েন্ট ২২ রাইফেল ও চারটি বিদেশী ওয়ান শ্যুটার। মেজর আদনান কবির জানান, ‘ছোট রাজু’ বাহিনী সুন্দরবনের মংলা, হাড়বাড়িয়া, ভদ্রা এবং বঙ্গোপসাগর সংলগ্ন উপকূলবর্তী অঞ্চলে সর্বাপেক্ষা সয়ি জলদস্যু বাহিনী। পশুর নদী সংলগ্ন বিভিন্ন খাল ও চাঁদপাই রেঞ্জের ভদ্রা, মরাপশুর ও জুমরা সংলগ্ন অঞ্চলের বনজীবি ও জলজীবী সাধারণ মানুষ তাদের টার্গেট ছিলো। বিভিন্ন জলদস্যু ও ডাকাত বাহিনী র্যাব এর হাতে নিস্ক্রিয় হওয়ার পাশাপাশি র্যাব-৮ এর ক্রমাগত একাধিক কঠোর অভিযানের কারণে ছোট রাজু বাহিনী কোণঠাসা হয়ে হয়ে পড়ে। তারা অনুধাবন করে অধিক অর্থ উপার্জন ও কু-প্ররোচনার স্বীকার হয়ে তারা ভুল পথে পরিচালিত হচ্ছে। ২০১২ সাল থেকে ‘ছোট রাজু’ সুন্দরবনে জলদস্যুবৃত্তি করে। প্রসঙ্গত, র্যাবের কঠোর তৎপরতার কারণে ২০১৬ সালের ৩১ মে সুন্দরবনের কুখ্যাত জলদস্যু মাস্টার বাহিনীর ১০জন জলদস্যু ৫২টি দেশি-বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র এবং প্রায় ৩ হাজার ৯০৪ রাউন্ড গোলাবারুদ এবং একই বছরের ১৪ জুলাই কুখ্যাত জলদস্যু ‘মজনু ও ইলিয়াস বাহিনীর” ১১জন জলদস্যু ২৫টি দেশি-বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র এবং ১ হাজার ২০ রাউন্ড বিভিন্ন প্রকার গোলাবারুদসহ র্যাব-৮ এর কাছে আত্মসমর্পন করেন। পরবর্তীতে পর্যায়মে গত বছরের ৭ সেপ্টেম্বর ‘আলম ও শান্ত বাহিনী” ১৪জন সদস্য ২০টি দেশি-বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র এবং এক হাজার ৮ রাউন্ড বিভিন্ন প্রকার গোলাবারুদসহ এবং ১৯ অক্টোবর সাগর বাহিনীর ১৩জন সদস্য ২০টি দেশি-বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র এবং ৫৯৬ রাউন্ড বিভিন্ন প্রকার গোলাবারুদসহ আত্মসমর্পণ করেন। এরপর ২৭ নভেম্বর খোকাবাবু বাহিনীর ১২জন সদস্য ২২টি আগ্নেয়াস্ত্র এবং এক হাজার তিন রাউন্ড বিভিন্ন প্রকার গোলাবারুদসহ এবং চলতি দেশী-বিদেশী আগ্নেয়াস্ত্র ও সকল প্রকার অস্ত্রের প্রায় এক হাজার ১০৫ রাউন্ড বিভিন্ন প্রকার গোলাবারুদসহ নোয়া বাহিনীর ১২ সদস্য র্যাব-৮ এর কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন। চলতি বছর ২৯ জানুয়ারি ৩১টি আগ্নেয়াস্ত্র ।সম্পাদনা : মুরাদ হাসান