প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত
সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম
প্রশ্নপত্র ফাঁস, চরম ক্ষতিকর জিনিসÑ এতে কোনো সন্দেহ নেই। প্রশ্নপত্র ফাঁস অত্যন্ত অনৈতিক একটি কাজ। শিক্ষা মানুষকে নীতি শিক্ষা দেয়। আমরা আশা করি, শিক্ষাক্ষেত্র থেকে যারা বের হবে তারা মানুষ হবে। অনৈতিক চর্চা মানুষ হতে সাহায্য করে না। এতে বরং অসাম্যের সৃষ্টি হয়। যাদের অর্থ আছে, যারা নকল করে পাস করে বের হয় তারা একটি অসম প্রতিযোগিতা তৈরি করে। আর যাদের অর্থ নেই, সামর্থ্য নেই এবং যারা সততার চর্চা করে তারা মার খায়।
শিক্ষকেরা শিক্ষার প্রকৃত আদর্শ ধারণ করবেন, এটাই তো স্বাভাবিক। কিন্তু সেই শিক্ষকেরাই যদি আদর্শকে ভুলুণ্ঠিত করেন তাহলে তাদের প্রতি কি মানুষের আর বিশ্বাস থাকে? থাকে না। প্রশ্নপত্র ফাঁসের মতো ঘটনা ঘটানোর অভিযোগ যে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে তাদের তো শিক্ষক হওয়ার কোনো যোগ্যতাই নেই। তারা চোরাকারবারে নামলেই ভালো করতেন। তারা যদি চোরাকারবারীতে ধরা পড়তেন আমি তাতে ভ্রুকুটি করতাম না। এমন ঘটনা এদেশে ঘটেই থাকে। কিন্তু শিক্ষক নামের পদবি ধারণ করে এ সব লোক যখন অনৈতিক কাজ করে তখন একটাই দাবি থাকে, আইনের হাতে তুলে দিয়ে তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। শিক্ষকতায় যেন তারা আর কোনোদিন ফিরতে না পারে সেটাও নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি জড়িতদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
তবে দুঃখের বিষয়Ñ অপরাধীরা আইনের হাত গলিয়ে বেরিয়ে যায়। এরা নানান সংস্থার গুরুত্বপূর্ণ মানুষজনকে কব্জা করেছে। সেসব লোকগুলোও চিহ্নিত করতে হবে। এই অপকর্ম বিশাল সংখ্যক মানুষ করে। নানান জায়গাতেই এই অপকর্ম হয়। এইগুলো সম্পূর্ণভাবে নির্মূল করতে হলে সাড়াশি অভিযান করে সবাইকে ধরতে হবে। এরা যতই ক্ষমতাবান হোক তাদের আইনের হাতে সোপর্দ করতে হবে। অপকর্মের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি যত শক্তিশালীই হোক তাদের বিষয়ে কঠোর হতে হবে। যারা সামনে থেকে কাজ করে শুধু তাদেরকেই নয়, পেছনে থেকে যারা কলকাঠি নাড়ে, অর্থ বিনিয়োগ সবাইকেই আইনের আওতায় আনতে হবে। এটি করা না গেলে মানুষ নিরুৎসাহিত হয়ে পড়বে।
অনৈতিক কাজের সঙ্গে জড়িতদের সামাজিকভাবেও হেয় করতে হবে। মিডিয়াতে তুলে ধরে তাদের সম্পর্কে দেশবাসী জানাতে হবে। তারা যদি আইনের হাতে সোপর্দ হয়, তাদের শাস্তিটা যদি নিশ্চিত করা হয় তাহলে এমন অনৈতিক কর্মকা- বন্ধ হতে পারে। প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে যে বা যারা জড়িত থাকুক তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত।
পরিচিতি: কথাসাহিত্যিক ও শিক্ষাবিদ
মতামত গ্রহণ: সাগর গনি
সম্পাদনা: আশিক রহমান