কুসিক নির্বাচনে হারের কারণ বের করবে আওয়ামী লীগ
আল হেলাল শুভ: কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন-কুসিক নির্বাচনে হারের কারণ বের করতে চায় ক্ষমতাশীন আওয়ামী লীগ। দলটির নেতারা জানিয়েছে, দলের মনোনীত প্রার্থী আঞ্জুম সুলতানা সীমার পরাজয় কি কি কারণে হয়েছে তার ওপর একটি মূল্যায়ন করতে চায় দলটি। শুধু কি দলীয় কোন্দলের কারণেই সীমা হেরেছেন নাকি অন্য কোনো কারনে সেটাও বের করতে চায় তারা। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, পরাজয়ের কারণ বিশ্লেষন করতে ইতোমধ্যেই কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশ দিয়েছেন দলের হাইকমান্ড। আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, সঠিকভাবে ঐক্য প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হলে গত নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর যে জয় সে রকমই ফলাফল আসতো কুমিল্লাতেও। এ জন্য দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলকেই দায়ী করতেন তারা। দলের ভিতরে থেকে যারা নির্দেশ মানেননি, তাদের খুঁজে বের করতে হবে বলছেন দলটির নেতারা। প্রয়োজনে কঠিন সাংগঠনিক ব্যবস্থাও নিতে চায় আওয়ামী লীগ। সে ক্ষেত্রে গঠনতন্ত্র মেনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দলের সিদ্ধান্তের বাইরে যদি কেউ কাজ করে তাহলে ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই বলেই মনে করেন আওয়ামী লীগ নেতারা।
আওয়ামী লীগ নেতারা মনে করেন, আওয়ামী লীগ বড় একটি রাজনৈতিক দল হওয়ায় এখানে নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা হওয়াটা অস্বাভাবিক নয়। তবে নির্বাচনে দলের হাইকমান্ডের নির্দেশ সবাইকে মানতেই হবে। এটা দলীয় শৃঙ্খলা। এর বাইরে গেলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সকালে গাজীপুরে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সংবাদমাধ্যমকে জানান, কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর পরাজয়ের কারণ আমরা কুমিল্লায় দলকে ঐক্যবদ্ধ করতে পারিনি। কিন্তু নারায়ণগঞ্জে ঐক্যবদ্ধ রাখা সম্ভব হয়েছিল। তিনি আরো বলেন, কুমিল্লা যখন পৌরসভা ছিল, তখনো আমরা জিততে পারিনি। সিটি করপোরেশন হওয়ার পরও বিএনপি জিতেছে। তবে ভোটের ব্যবধান অনেক কমেছে। তবে দলীয় কোনো লোকের অসহযোগিতা থাকলে তা তদন্ত করে বের করা হবে এবং সভানেত্রীর পরামর্শে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ গতকাল রাজধানীর এক অনুষ্ঠানে দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে অবস্থানকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান। তিনি বলেন, আমরা নির্দেশনা দিয়েছি আমাদের সংগঠনিক সম্পাদকদেরকে, সকল তথ্য নিয়ে আসতে। দলের মধ্যে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হবে। দলের মধ্যে পদে যারা দলকে বার বার বিপদের মুখে ঠেলে দিবে নিজের ব্যক্তিস্বার্থ বা দ্বন্দের কারণে, এটা বরদাস করা হবে না। যারা নির্বাচনের সময় সিদ্ধান্তের বাইরে অবস্থান নিয়েছে বা দলের ভেতরে দ্বন্দ সৃষ্টি করেছে তাদের বিরুদ্ধে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে, কাউকে ছাড় দেয়ার সুযোগ নেই।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান আমাদের অর্থনীতিকে বলেন, এই নির্বাচনে দলের পরাজয়ের কারণ আমরা মূল্যায়ন করবো। এ জন্য একটা মূল্যায়ন সভা হবে। যদি কেউ দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে অবস্থান নেন তা বের হয়ে আসবে। কারও অভ্যন্তরীণ দ্বন্দের কারণে যদি নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর হার হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি করা হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত কোন কমিটি করা হয় নি। তবে অচিরেই এ জন্য কমিটি করা হতে পারে। সম্পাদনা: রফিক আহমেদ