দ্বিতীয় এলওসির ১৪ প্রকল্পের অগ্রগতি শূন্য প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে আরও চুক্তির প্রস্তুতি
সাইদ রিপন: বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অবকাঠামোখাতে উন্নয়নে দ্বিতীয় এলওসির আওতায় ১৪টি প্রকল্পে দুই বিলিয়ন ডলার (২০০ কোটি ডলার) নমনীয় ঋণ দেয় ভারত। ২০১৬ সালে ৯ মার্চ দ্বিতীয় এলওসি চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়। অথচ দ্বিতীয় এলওসির চুক্তির এক বছর পেরিয়ে গেলেও বাস্তবে কোন অগ্রগতি হয়নি। তবে এর মধ্যেই তৃতীয় এলওসি চুক্তির জন্য প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে সরকার।
ইআরডি সূত্রে জানা গেছে, দ্বিতীয় এলওসির চুক্তিতে বলা হয়েছিল রেল, বিদ্যুৎ, তথ্যপ্রযুক্তি, সড়ক পরিবহন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নৌ-পরিবহন, অর্থনৈতিক অঞ্চলসহ নানান উন্নয়নখাতে বাংলাদেশ এ অর্থ ব্যবহার করতে পারবে। তবে এসব কাজ বাস্তবায়নে যেসব প্রকল্প গ্রহণ করা হবে তাতে অন্তত ৭৫ শতাংশ পণ্য ও সেবা অবশ্যই ভারত থেকে আমদানি করতে হবে। এক বছর আগে ভারত থেকে ঋণ পাওয়া এসব প্রকল্পের ধীরগতি লক্ষ্য করা গেছে। ঋণ পেলেও অনেক প্রকল্প এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে ঘুরপাক খাচ্ছে। তিনটি প্রকল্প জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) অনুমোদন পেলেও এখনো দরপত্রই আহ্বান করা হয়নি।
ইআরডি সূত্র জানায়, দ্বিতীয় ধাপে ৫০০টি ট্রাক কেনা প্রকল্প ২০ কোটি ৩৬ লাখ ও ডাবল ডেকার ও সিঙ্গেল ডেকার প্রকল্পে ৫৫ কোটি ৩৬ লাখ টাকা ঋণ দেয় ভারত। এই দুটি প্রকল্পে একনেকের অনুমোদন পেলেও অগ্রগতি শূন্য। প্রকিউরমেন্ট অব ইকুইপমেন্টস অ্যান্ড মেশিনারিজ ফর রোডস অ্যান্ড হাইওয়ে প্রকল্পে ৬০ কোটি টাকা ঋণ দেয় ভারত। প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদন পেলেও অগ্রগতি নেই।
আশুগঞ্জ নদীবন্দর হয়ে আখাউড়া পর্যন্ত সড়ক নির্মাণ প্রকল্প, খুলনা-দর্শনা (চুয়াডাঙ্গা) ডাবল লাইন রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প, সৈয়দপুরে রেলওয়ে ওয়ার্কশপ নির্মাণসহ পার্বতীপুর-কাউনিয়া সেকশনে ডাবল গেজ রেললাইন নির্মাণ কাজের কোন অগ্রগতি নেই। এছাড়া বড়পুকুরিয়া-বগুড়া ও কালিয়াকৈরে ৪০০ কেভি বিদ্যুৎ লাইন স্থাপন প্রকল্পটির সম্ভাব্যতা জরিপ (ফিজিবিলিটি স্টাডি) এখনও সম্পূর্ণ হয়নি। জেলা পর্যায়ে ১২টি হাইটেক পার্ক নির্মাণ এবং ৪৯টি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ও দুটি টিচার্স ট্রেনিং কলেজের উন্নয়ন প্রকল্পের কাজেরও কোন অগ্রগতি নেই। চারটি মেডিকেল কলেজ ও একটি বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি হাসপাতালের স্থাপনের কাজ এখনও শুরু করতে পারেনি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। এছাড়াও এস্টাবলিশমেন্ট অব ইন্ডিয়ান ইকোনোমিক জোন ইন কেরানিগঞ্জ অ্যান্ড মিরেরসরাই এবং এস্টাবলিশমেন্ট অব ইন্ডিয়ান ইকোনোমিক জোন ইন মংলা, বাগেরহাট, ভেড়ামারা এই প্রকল্পগুলোর এখনও ডিপিপিই তৈরি হয়নি। অন্যদিকে কারিগরি শিক্ষাকেন্দ্রের সুবিধা বাড়ানোর প্রকল্পটিও অধরায় রয়েছে। তবে ইআরডি বলছে, দ্বিতীয় এলওসিভূক্ত প্রকল্পের অগগ্রতি শূন্য হলেও তৃতীয় ধাপে প্রকল্প গ্রহণে কোনো সমস্যা নেই। এমনকি এক্ষেত্রে কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না।
এছাড়াও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন ভারত সফরে প্রতিরক্ষাসহ বিভিন্ন বিষয়ে অন্তত ৩০টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারকের (এমওইউ) প্রস্তুতি নিয়েছে সরকার। রোববার ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠকে এ প্রস্তুতির বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। সম্পাদনা: জাফর আহমদ