জঙ্গিবিরোধী অভিযান নিয়ে মৌলিক কিছু প্রশ্ন
জি. কে. সাদিক
হলি আর্টিজানে ও শোলাকিয়াতে ঘৃণ্য জঙ্গি হামলার পর দেশব্যাপী জঙ্গিবাদবিরোধী প্রচারণা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিশেষ তৎপরতার কারণে সরকার পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, জঙ্গিবাদ দমনে জিরো টলারেন্স গ্রহণ করে জঙ্গি মোকাবিলায় বেশ সফলতা লাভ করেছে। দেশে আর বড় ধরনের জঙ্গি নেই বলেও শোনা গেল। কিন্তু মুফতি হান্নানের রায় হওয়ার পর থেকে যে পরিস্থিতি দেখা যাচ্ছে তাতে মনে হচ্ছে দেশে বড় ধরনের অশুভ শক্তির আক্রমণ সামনে রয়েছে। কারণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলছে যে, জঙ্গিরা বারবার কৌশল পাল্টাচ্ছে যার কারণে তাদের দমন করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
১৯৯৬ সালের পর থেকে দেশে ক্রমে ক্রমে জঙ্গিদের কার্যক্রম শুরু হয়। কিন্তু সে সময় থেকে এদের বিষয়ে তেমন কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। গুরুত্ব না দেওয়ার পেছনে একটা বড় ধরনের কারণ রয়েছে। তা হলো আমাদের দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে দেশে-জাতির স্বার্থের চাইতে বড় হলো দলের স্বার্থ ও ব্যক্তির স্বার্থ রক্ষা করা। এই স্বার্থ রক্ষা করতে গিয়ে এরা বিরোধী দল নিয়ে শঙ্কিত থাকে। সেই ভয় দূর করার জন্য এরা দমন-পীড়ন চালাতেই ব্যস্ত। যার ফলে জঙ্গি সংগঠনগুলো তাদের কর্যক্রম চালানোর সুবর্ণ সুযোগ পেয়েছে। সরকার পক্ষের এমন উদাসীনতার মাশুল গুনতে হচ্ছে এখন গোটা জাতিকে।
আব্দুর রহমান ও বাংলা ভাইয়ের মৃত্যুদ- হওয়ার পরে জঙ্গি সংগঠনগুলো কিছুটা স্তিমিত হয়ে পড়ে। কিন্তু দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির অরাজকতার সুবাধে এরা আবার সংগঠিত হয়ে ওঠে। আগের চেয়েও অনেক শক্তিশালী হয়ে এরা আবার তাদের সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাচ্ছে। তারপরও সরকার পক্ষের হুঁশ ফেরেনি। যখন যেখানে যেকোনো হামলা বা আক্রমণ হয়েছে তখনই বিনা তদন্তে নির্দ্বিধায় সরকার দলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে এটা বিএনপির মদদে জামায়াত করেছে। সরকার বারবার অপবাদ দিয়ে যে পাপ করেছে তার মাশুল দিতে হচ্ছে আজ। অক্ষমতাকে ঢাকার জন্য অন্যের কাঁধে দোষ চাপিয়ে বাঁচা যায় কিন্তু এ কাজের পরিণাম হয় খুব একটা ভালো হয় না।
জঙ্গি আস্তানায় অভিযান চালিয়ে জঙ্গিদের মেরে ফেলা হচ্ছে। কেন তাদের কৌশলে আটক করে তথ্য সংগ্রহ করে মূল হোতাদের ধরা হচ্ছে না? জঙ্গিদের অস্ত্র, অর্থ প্রশিক্ষণ কোথা থেকে আসছে তা কেন বের করা হচ্ছে না?
লেখক: কলামিস্ট
সম্পাদনা: আশিক রহমান