মুখ ও মুখোশের মঙ্গল শোভাযাত্রা
অজয় দাশগুপ্ত
ডিএমপি কমিশনার আসন্ন পহেলা বৈশাখের মঙ্গল শোভাযাত্রায় মুখোশ পরা নিষেধ করেছেন। গতবার এ বিষয়টি নিয়ে মজা এবং বিরোধিতা করলেও, এবার তা করব না। তাকিয়ে দেখুন চারপাশে, মুখোশ ছাড়াই কি তা-ব করছে এরা। কারা? যারা মুখোশের আড়ালে মুখ লুকিয়ে এই দেশ ও প্রগতির বারোটা বাজিয়ে দিতে একপায়ে খাড়া। মুখোশ মঙ্গল শোভাযাত্রার অনিবার্য কিছু না। যদি আপনি ঐতিহ্য ও অতীত বিবেচনায় আনেন তবুও না। মূলত শিব বা দেবদেবীর মুখোশ পরে নববর্ষের আগের রাতে নাচার রেওয়াজ ছিল। যা এখন ভিন্নভাবে পালিত হয়। অন্য যত বিষয় আর উপাদান তার সঙ্গে এই মুখোশ থাকা না থাকা কোনো বিষয় না। সমাজে এমনিতে সমস্যার শেষ নেই। মুখে ধর্ম আর বোমে জঙ্গি হলে কিভাবে নারী কারও কাছে নিরাপদ নয়। মুখোশের আড়ালে রমণী শরীর হাতাবার সুযোগ দেওয়া কি আসলে উচিত?
এমনিতে মুখোশহীনদের ধরা যায় না আর মুখোশ হলে তো কথাই নেই। নষ্ট লোকদের কারণে সমাজে জান নিয়ে বাঁচা দায় সেখানে ইজ্জত তো ডাল-ভাত। যে সমাজ মনোজঙ্গিতে ভরা, যেখানে নারী মানে ভোগের পণ্য, যে সমাজে তারুণ্য বিপথগামী সেখানে কতিপয় মানুষ আর কোনো বাহিনী কি আসলেই সামাল দিতে পারবে? তাছাড়া মুখোশের সমাজে দেশে আলাদা করে মুখোশ পরার দরকার কি? আমি তো সবসময় দেখি সারি সারি মানুষ মুখোশ পরে চলাফেরা করছে আর তাদের হাতে হাতে ধরা নিজেদের মুখ।
ডিএমপি কমিশনার ঠিক কাজ করেছেন, মুখোশের বাইরের মুখগুলো যদি নববর্ষ পালন করতে না পারে বা মঙ্গল শোভাযাত্রা করতে না পারে তবে তাদের কি আসলে কোনো অধিকার আছে তা উদযাপনের?
লেখক: সিডনি প্রবাসী, কলামিস্ট ও বিশ্ববিদ্যালয় পরীক্ষক
সম্পাদনা: আশিক রহমান