একনেকে ৭ প্রকল্পের অনুমোদন পরিবেশবান্ধব ইউরিয়া সার কারখানা স্থাপনে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ
সাইদ রিপন: দেশে ইউরিয়া সারের ঘাটতি পূরণ করতে শাহজালাল ফার্টিলাইজার প্রকল্পটি দ্বিতীয়বারের মতো সংশোধন করা হয়েছে। পরিবেশবান্ধব ইউরিয়া সার কারখানা স্থাপন করে সুলভমূল্যে কৃষকদের মাঝে সরবরাহ করতে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়াও আইসিটির মাধ্যমে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষার মান প্রচলন প্রকল্পটি দ্বিতীয় পর্যায়ে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
গতকাল রাজধানীর এনইসি সম্মেলন কক্ষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে নতুন ও সংশোধিত ৭টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা। সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সংবাদ সম্মেলন করে এসব কথা জানান। এসময় উপস্থিত ছিলেন, পরিকল্পনা ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান, পরিকল্পনা সচিব জিয়াউল ইসলাম, সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য (সিনিয়র সচিব) ড. শামসুল আলম। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ৭ হাজার ৮৯০ কোটি টাকা। এর মধ্যে জিওবি ৩ হাজার ৮৭৬ কোটি ৩২ লাখ টাকা এবং প্রকল্প সাহায্য ৪ হাজার ১৩ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, বর্তমানে আমাদের দেশে ইউরিয়া সারের ঘাটতি রয়েছে। সুলভমূল্যে কৃষকের নিকট সার সরবরাহ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সিলেট জেলার ফেঞ্চুগঞ্জে ন্যাচারাল গ্যাস ফার্টিলইজার ফ্যাক্টরি নির্মাণ করা হবে। এই ফ্যাক্টরি থেকে প্রতিদিন ১ হাজার ৭৬০ মে. টন গ্রানুলার ইউরিয়া উৎপাদন করা হবে। এই প্রকল্পটির জন্য ব্যয় হবে ৪ হাজার ৯৮৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
মন্ত্রী বলেন, আমাদের জীবনে প্রতিটি ক্ষেত্রেই তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহার প্রয়োজন। এ লক্ষ্যেই দেশের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষায় আইসিটির প্রচলন প্রকল্পটি দ্বিতীয় পর্যায়েও বাস্তবায়ন করা হবে। প্রকল্পটির জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৩৫৩ কোটি টাকা।
তিনি আরও বলেন, সরকারি আবাসন নিশ্চিত করতে চট্টগ্রামে আবাসিক ফ্লাট ও ডরমিটরি ভবন নির্মাণ শীর্ষক প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। চট্টগ্রাম শহরে পরিত্যক্ত সরকারি বাড়িতে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। এটি বাস্তবায়ন হলে চট্টগ্রামে প্রায় ২৪ হাজার সরকারি চাকরিজীবীদের আবাসন নিশ্চিত করা যাবে। সরকারি সব কর্মকর্তাদের শতভাগ আবাসন সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে এবং সরকারি পরিত্যাক্ত সম্পত্তি যেন বেদখল না হয়, সে বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন।
মন্ত্রী বলেন, বিদ্যমান জেলা রেজিস্ট্রি অফিস ও সাব-রেজিস্ট্রি অফিসসমূহ অতি পুরাতন ও জরাজীর্ণ অবস্থায় বিরাজ করছে। ফলে অফিসে কর্মরত সবাইকে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হয়। এ বিবেচনায় দেশের সকল জেলা রেজিস্ট্রি ও সাবরেজিস্ট্রি অফিস নকশা ঠিক রেখে নির্মাণ করার পদক্ষেপ গ্রহণের জন্যও প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন ।
একনেকে অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হলোÑ চট্টগ্রাম শহরে পরিত্যক্ত বাড়িতে সরকারি আবাসিক ফ্ল্যাট ও ডরমিটরি ভবন নির্মাণ প্রকল্প। প্রকল্পটির জন্য ব্যয় হবে ৪৭৬.৬১ কোটি টাকা। দেশের বিভিন্ন জেলায় জেলায় জেলা রেজিস্ট্রি ও সাব রেজিস্ট্রি অফিস ভবন নির্মাণ (২য় পর্যায়) প্রকল্প। প্রকল্পটির জন্য ব্যয় হবে ৩০৯.৩৩ কোটি টাকা। নারী নির্যাতন প্রতিরোধকল্পে মাল্টিসেক্টরাল প্রোগ্রাম (৪র্থ পর্ব) প্রকল্প। প্রকল্পটির জন্য ব্যয় হবে ১১৫.০৮ কোটি টাকা। চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী ও রাউজান উপজেলায় হালদা নদীর উভয় তীরের ভাঙন হতে বিভিন্ন এলাকা রক্ষা ও তীর সংরক্ষণ প্রকল্প। প্রকল্পটির জন্য ব্যয় হবে ২১২.০৮ কোটি টাকা। গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ (রাজশাহী জোন) প্রকল্প। প্রকল্পটির জন্য ব্যয় হবে ৪৩৮.৯৪ কোটি টাকা। সম্পাদনা: গিয়াস উদ্দিন আহমেদ