সুপেও পানির ঝুঁকিতে গাজীপুর
মিজানুর রহমান মিলন, গাজীপুর : গাজীপুরে সুপেও পানির এক মাত্র আধার ভূগর্ভস্থ পানির যোগান বর্তমানে হুমকির মুখে। যথেচ্ছ উত্তোলনের ফলে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর প্রতিবছর প্রায় ১৫ ফুট করে নিচে নেমে যাচ্ছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেই বললেই চলে।
এদিকে থেমে নেই নদী, নালা, খাল- বিলসহ প্রাকৃতিক জলাশয় ভরাট আর পানি দূষণের প্রতিযোগিতা। সাধারণ ভূমি দস্যু থেকে কারখানা মালিক ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান প্রাকৃতিক জলশয় ভরাটে ব্যস্ত। শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতিদিন কি পরিমাণ পানি উত্তোলন করছে সে বিষয়ে সরকারি ও বেসরকারি কোনো জরিপ নেই । ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (ডুয়েট) ক্লাইমেট চেঞ্জ এন্ড সাসটেইনেবল ডেভেলপম্যান্ট বিষয়ক গবেষণা সেন্টারের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. শওকত ওসমান জানান, পানির স্তর দ্রুত নেমে যাওয়ায় পরিবেশের মারাত্মক বিপর্যয় সৃষ্টি হতে পারে। এমন কি ভুমি দেবে যাওয়া ও ভূমিধসের মতো ঘটনাও ঘটতে পারে। তাই ভূগর্ভস্থ পানির ব্যবহারে মিতব্যায়ী হতে হবে। এ বিপর্যয় থেকে রক্ষা পেতে সকলকে সচেতন হতে হব।পানির ব্যবহারে সচেতনতা না বাড়ালে এই মহামূল্যবান সম্পদ আমরা রক্ষা করতে পারবো না। গাজীপুরে শিল্প প্রতিষ্ঠান বেশি। সেখানে প্রচুর পরিমাণ পানির ব্যবহার হয়। আর এর সবটাই ভূগর্ভস্ত পানি উত্তোলন করে। শিল্প মালিকরা মাটির নিচ থেকে পানি তুলে দূষিত করে প্রকৃতিতে ছেড়ে দেয়। এতে ভূপৃষ্ঠের পানির আধার প্রাকৃতিক জলাশয়ের পানি দূষিত হয়ে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পরে। কারখানা মালিকরা পরিবেশের বিষয়ে মোটেও সচেতন নয়। তারা বিদেশি ক্রেতাদের চাপে ইটিপি স্থাপন করলে খরচ বাঁচাতে ইটিপি চালায় না তারা। এ বিষয়ে একটি দৃষ্টান্ত তুলে ধরে তিনি জানান, গাজীপুর সদরের তিনসড়ক এলাকায় বড় একটি পোশাক তৈরির কারখানায় ডুয়েটের পরিবেশ বিভাগের কারিগরি সহযোগিতায় একটি ইটিপি স্থাপন করা হয়। সেখানেও বিদেশি ক্রেতার চাপ ছিল। বর্তমানে ব্যবহারিক জ্ঞানের জন্য ডুয়েটের ছাত্ররা ইটিপি পর্যবেক্ষণে গেলেও তা দেখতে দেয়া হয় না। বিপর্যয় রোধে তিনি কয়েকটি বিষয় পরামর্শ দেন। বৃষ্টির পানির ব্যবহারের পরিকল্পনা, নদী ও জলাধার দূষণ ও দখলমুক্ত রাখতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা। নদী ও জলাধার ড্রেজিং করে মাটি ও ময়লাগুলো নদীও জলাধারের পার এলাকা থেকে দুরে সড়িয়ে ফেলা। মহানগরীতে সবুজ এলাকা কমে যাওয়ায় ভূগর্ভস্থ পানির রিচার্জের গতি অনেকটাই ধীর হয়ে গেছে।