যৌথ সংবাদ সম্মেলনে দুই প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা হাসিনা-মোদির মেয়াদেই তিস্তা চুক্তি
সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি জোরদারে ঢাকা-দিল্লির অঙ্গীকার
উম্মুল ওয়ারা সুইটি, ঢাকা ও বিশেষ প্রতিনিধি নয়াদিল্লি: বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মেয়াদকালেই তিস্তা চুক্তি হবে বলে দৃঢ়তার সঙ্গে ঘোষণা দিলেন দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি জোরদারে দুই দেশ অঙ্গীকার করেছে। গতকাল শনিবার দুপুরে নয়াদিল্লির হায়দরাবাদ হাউসে দুই প্রধানমন্ত্রীর শীর্ষ বৈঠকের পর যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানানো হয়। কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, দুই দেশের মধ্যে বিভিন্ন পর্যায়ে ২২টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে, প্রতিরক্ষা, ঋণ, মহাকাশ, পারমাণবিক শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহার, তথ্যপ্রযুক্তি, বিদ্যুৎ জ্বালানিসহ বিভিন্ন খাতে এসব চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে।
গতকাল বাংলাদেশ ও ভারতের সামরিক শিল্পের (ডিফেন্স ইন্ডাস্ট্রি) মধ্যে সহযোগিতার সুযোগ রেখে দুই দেশ সামরিক সহযোগিতা কাঠামো সমঝোতা স্মারক চুক্তিতে সই করেছে। এই প্রসঙ্গে মোদি বলেন, এটি দীর্ঘদিন আগে হওয়া উচিত ছিল।
শেখ হাসিনার সঙ্গে দিল্লিতে আনুষ্ঠানিক বৈঠক শেষে মোদি বলেন, দুই দেশের সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার জন্য দীর্ঘদিন আগে হওয়া উচিত ছিল। অস্ত্র ও সরঞ্জাম কেনার জন্য বাংলাদেশকে ৫০ কোটি ডলার দিচ্ছে ভারত। সেই সঙ্গে সাড়ে ৪০০ কোটি ডলারের একটি লাইন অব ক্রেডিটও থাকছে।
বৈঠকের পর শেখ হাসিনা এক বিবৃতিতে বলেন, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির পাশাপাশি অপরাধ কার্যক্রম মুক্ত ও শান্তিপূর্ণ সীমান্ত গড়ে তোলার ব্যাপারে উভয়ই অঙ্গীকারাবদ্ধ। তিস্তার মতো অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন, পদ্মা-গঙ্গা ব্যারেজ প্রকল্প ও আন্তঃসীমান্ত নদীর অববাহিকা ভিত্তিক ব্যবস্থাপনাসহ পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা ইস্যুতে মোদির সঙ্গে আন্তরিকভাবে আলোচনা হয়েছে বলে জানান শেখ হাসিনা।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী আশাবাদ জানিয়ে বলেন, আমি আন্তরিকভাবে বিশ্বাস করি, শিগগিরই এসব ইস্যুর সমাধানে আমরা ভারতের সমর্থন পাব। বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপক্ষীয় চমৎকার সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে এই বৈঠক ফলপ্রসূ হয়েছে বলে জানান শেখ হাসিনা।
শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ বিমানের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইটে সকাল ১০টা ২০ মিনিটে দিল্লির উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন এবং দুপুর ১২টা ৫ মিনিটে ভারতীয় বিমানবাহিনীর পালাম স্টেশন বিমানবন্দরে অবতরণ করেন। এসময় প্রধানমন্ত্রীকে লালগালিচা সংবর্ধনা দেওয়া হয়। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে ৪ দিনের এক সরকারি সফরে তিনি দেশটি সফরে যান।
পালাম স্টেশন থেকে প্রধানমন্ত্রীকে একটি সুসজ্জিত মোটর শোভাযাত্রা সহকারে রাষ্ট্রপতি ভবনে নিয়ে যাওয়া হয়। সফরকালে প্রধানমন্ত্রী সেখানে অবস্থান করবেন। আগামীকাল প্রধানমন্ত্রীর দেশে ফেরার কথা। সম্পাদনা: নাশরাত আর্শিয়ানা চৌধুরী