পোস্ট অফিসের গাড়ি চালাবেন নারী
আহম্মেদ মুন্নি : ডাকবাহী ‘মেইল গাড়ি’র স্টিয়ারিংয়ের আসনে প্রথমবারের মতো একজন নারী চালককে দেখা যাবে। এর মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশ ডাক বিভাগ প্রবেশ করল নতুন অধ্যয়ে। গতকাল রোববারে ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম ডাক ভবন চত্বরে ১০টি গাড়ির চাবি তুলে দেন দশজন নারী চালকের হাতে।
অনুষ্ঠানের বক্তব্যে তারানা হালিম জানান, ডাক বিভাগের ‘ডাক পরিবহন ব্যবস্থা শক্তিশালীকরণ’ প্রকল্পের অধীনে নতুন যোগ হতে যাওয়া ১১৮টি যানবাহনের মধ্যে ২০ শতাংশের চালক থাকবেন নারী। নারীর অগ্রযাত্রায় এটি খুব সুন্দর দৃষ্টান্ত হবে। আমাদের মেয়েরা হেভি ভেহিকেল চালনার জন্য প্রশিক্ষিত ও লাইসেন্সপ্রাপ্ত। তারা যখন গ্রামাঞ্চলে বা ঢাকা শহরে এই গাড়িগুলো চালাবেন, তখন সেটি হবে দর্শনীয় ও প্রশংসা করার মতো একটি কাজ। নারী চালকদের নিয়োগপত্র এবং বেতন-ভাতা সঠিকভাবে দেওয়ার বিষয়ে ডাক বিভাগের কর্মকর্তাদের সতর্ক থাকতে বলেন প্রতিমন্ত্রী।
এ সময় মন্ত্রী নতুন প্রকল্পের অধীনে পাওয়া ৯টি ওপেন বডি পিকআপ ভ্যান এবং ১০টি কাভার্ড ভ্যানের উদ্বোধন করেন। গাড়ি কেনার পাশাপাশি এ প্রকল্পের অধীনে ৩৩টি গ্যারেজও নির্মাণ করা হবে। আর ১১৮টি পরিবহনের বাকিগুলো জুন মাসের মধ্যেই ডাক বিভাগে সংযুক্ত হবে। এছাড়াও এ প্রকল্পের মাধ্যমে বাণিজ্যিক পার্সেল ও লজিস্টিকস পরিবহনও চালু হবে মন্ত্রী বলে জানান।
তিনি আরও বলেন, ‘একনেকের অনুমোদন পাওয়ার পর ১১৮টি যানবাহন যাতে দ্রুত চলে আসে, সেজন্য তাগাদা দিচ্ছিলাম। আমি বলব, এই যানবাহনগুলো ডাক বিভাগের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নববর্ষের উপহার।’ এ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেওয়ার পর ডাক বিভাগকে ‘নিজের পায়ে দাঁড় করানোর বিষয়টি’ তিনি চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘কথা দিয়েছিলাম, নিজের পায়ে দাঁড়াবে এবং লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে। ডাক বিভাগের সকলে শতভাগ সহায়তা দিয়েছেন। ডাক বিভাগে হোঁচট খাইনি।’
জানা যায়, নিজস্ব পরিবহন না থাকায় ভাড়া বা চুক্তির মাধ্যমে সড়কপথে ডাক পরিবহন কাজ করে আসছিল ডাক বিভাগ। বর্তমানে ডাক বিভাগের সারাদেশে নয় হাজার ৮৮৬টি ডাকঘর রয়েছে। কর্মী রয়েছে প্রায় ৪০ হাজার। একসময় লাভজনক হলেও রাষ্ট্রীয় এ প্রতিষ্ঠানটি গত দুই অর্থবছরে গড়ে ২০০ কোটির বেশি টাকা লোকসান দিয়েছে।
তারানা হালিম জানান, দেশের সব ডাকঘরে সর্বোত্তম সেবা নিশ্চিত করাই বাস্তবায়নাধীন নতুন প্রকল্পের উদ্দেশ্য। সেবার ধরন বাড়ানোর কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। পোস্ট অফিসগুলোকে ‘বিশেষ ব্যাংক’ হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনাও সরকারের রয়েছে। সম্পাদনা: গিয়াস উদ্দিন আহমেদ