জামায়াত ছাড়বে না বিএনপি জোট অটুট রাখার চেষ্টা
নাশরাত আর্শিয়ানা চৌধুরী : বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া মনে করছেন, বিএনপিকে কোনঠাসা করতে জোটের ভেতরে ভাঙ্গন ধরাতে চাইছে। জোটের শরিক দলগুলোকে সুবিধা দিয়ে বিএনপির বিরুদ্ধে কাজ করানোর জন্য ব্যবহার করছে। নানা রকম টোপ দিচ্ছে। জোটের নেতারা রাজি হয়নি বলে জোট টিকে আছে। তবে নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে আসলে সরকারের পক্ষ থেকে জোটে ভাঙ্গন ধরানোর চেষ্টা আরও বাড়বে। এজন্য সরকার জামায়াতকে চাপের মুখে রেখেছে। সরকারের মূল লক্ষ্য বিএনপি যাতে জনপ্রিয়তা থাকার পরও ক্ষমতাসীন না হতে পারে।
বিএনপির সূত্র জানায়, সরকার জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করিয়েছে। জামায়াত নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনা করে রেখেছে। আবার জামায়াত নেতাদের যাদের ফাঁসি হয়েছে, মানবতাবিরোধী অপরাধে যাদের শাস্তি হয়েছে, তাদের সম্পত্তি ও সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে জামায়াতের নেতারা সরকারের সঙ্গে সমঝোতা করলে ও বিএনপির বিরুদ্ধে কাজ করলে সরকার ওসব সম্পদ ও সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত নাও করতে পারে। বিএনপির এক সিনিয়র নেতা বলেন, সরকার জামায়াতের উপর চাপ তৈরি করে রেখেছে যাতে করে বিএনপির বিরুদ্ধে যে কোন সময়ে কাজে লাগানো যায়। বিএনপির পরিকল্পনা, আগামী নির্বাচনে জামায়াতকে জোটে রেখেই নির্বাচন করা। তাদের সঙ্গে আসন ভাগাভাগিও করা হবে। আর যদি জামায়াত দলীয়ভাবে নির্বাচন করতে না পারে তাহলে বিকল্প হিসাবে জামায়াতের নেতাদের বিএনপির প্রার্থী ও প্রতীকেই নির্বাচন করানো হবে। এমনকি বিএনপি সংখ্যাঘরিষ্ঠতা পেয়ে সরকার গঠন করতে পারলে জামায়াত নেতাদের মন্ত্রিত্বও দেওয়া হবে। সেই পরিকল্পনায় এগুচ্ছে বিএনপি।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট থেকে জামায়াতকে বের করে নেওয়ার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এজন্য সরকার তাদেরকে নিষিদ্ধ করার কথা বললেও তা করছে না। কারণ বিএনপির সঙ্গে জোটে থেকেই নির্বাচন করবে জামায়াত। আর সুষ্ঠুু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে বিএনপির জোটই জয়ী হবে। এই কারণে সরকার জামায়াতকে নানাভাবে চাপে রেখেছে। তাদের সাথে সমঝোতা করার চেষ্টা করছে। প্রয়োজন হলে জামায়াতের সঙ্গে আসন ভাগাভাগিও করবে। কিন্তু এই সব ষড়যন্ত্র আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে ঠেকাবো।
সূত্র জানায়, খালেদা জিয়ার সন্দেহ ওয়ান ইলেভেনের সরকার জামায়াতকে ব্যবহার করেই বিএনপিকে নির্বাচনে আনে। বিএনপি ওই সময়ে নির্বাচনে যেতে চাননি। বিএনপি চেয়ারপারসন বলেছেন, জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার ও নেতাদের মুক্তির শর্তে আমরা নির্বাচনে গিয়েছিলাম। নির্বাচনে যাওয়ার ব্যাপারে আমি সন্তুষ্ট ছিলাম না। কিন্তু আমাদের সঙ্গে যারা (জামায়াত) ছিলো তারা নির্বাচনে যাওয়ার ব্যাপারে খুব বেশি আগ্রহী ছিলো। সেটা ছিল পূর্ব পরিকল্পিত। এবারও একই রকম করা হতে পারে। জামায়াতকে ব্যবহার করে আবারও বিএনপিকে নির্বাচনে নেওয়ানোর চেষ্টা হতে পারে। বিএনপি নির্বাচনে যাওয়ার ব্যাপারে আর কারো দ্বারা প্রভাবিত হয়ে অংশ নেবে না। জামায়াতকেও ছাড়বেন না। এমনকি বের হয়ে যেতে চাইলেও সমঝোতার ভিত্তিতেই ধরে রাখবেন।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতা থাকার জন্য এবং আগামীতে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য বিএনপিতে ভাঙ্গন ও নেতা-কর্মীদের নামে মিথ্যে মামলা দিচ্ছে। জোটের দলের নেতাদের নামেও মামলা করেছে। কিন্তু কোনো কাজ হবে না। জামায়াত ২০ দলীয় জোটে রয়েছে। এক সাথেই এই নির্বাচনী জোট কাজ করবে। কোন ষড়যন্ত্রেই কাজ হবে না। সরকারকে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে হবে। সম্পাদনা : শিমুল মাহমুদ