বর্ষবরণ নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে নববর্ষের সঙ্গে ধর্মকে টেনে আনা অযৌক্তিক : প্রধামন্ত্রী
উম্মুল ওয়ারা সুইটি : বাংলা বর্ষবরণের অনুষ্ঠান ও মঙ্গল শোভাযাত্রা নিয়ে হেফাজতে ইসলামী সংগঠনের বক্তব্যের বিরোধিতা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, বাংলা নববর্ষ উদযাপনের সঙ্গে ধর্মের কোনো যোগসূত্র নেই। এটা আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। এটা যুগ যুগ ধরে হয়ে আসছে। সব ধর্মের মানুষ একসঙ্গে বাংলা বছরের প্রথম দিন উদযাপন করে।
উল্লেখ্য, সুপ্রিম কোর্ট থেকে ভাস্কর্য অপসারণে হেফাজতে ইসলামের মতো সংগঠনগুলোর দাবির সঙ্গে সহমত জানালেও বাংলা নববর্ষ বরণের অনুষ্ঠান নিয়ে তাদের বক্তব্যে স্পষ্ট আপত্তি জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বর্ষবরণের অনুষ্ঠান নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে জানিয়ে দেশবাসীকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান। গতকাল বুধবার নিজ কার্যালয়ে নরসিংদী জেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যানের শপথ অনুষ্ঠানে এমন মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রসঙ্গত, পহেলা বৈশাখের মঙ্গল শোভাযাত্রাসহ নানা অনুষ্ঠান বন্ধ করার দাবি জানিয়েছে হেফাজতসহ কয়েকটি ইসলামী সংগঠন। তারা এই রীতিকে ‘অনৈসলামিক ও হিন্দুয়ানি’ আখ্যা দিয়েছে।
এই প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বলেন, পহেলা বৈশাখ বাঙালির নববর্ষ হিসেবে মুঘল আমল থেকেই পালন করা হচ্ছে। মঙ্গল শোভাযাত্রা মুঘল আমল থেকেই শুরু হয়। মঙ্গল কোনো হিন্দুয়ানি শব্দ না বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী বর্ষবরণের অনুষ্ঠান নিয়ে হেফাজতের বক্তব্যকে বিভ্রান্তিকর বলে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলা বছরের শেষ দিন চৈত্র সংক্রান্তিতে হালখাতা করার প্রচলন ছিলো।
প্রেস সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এখানে ধর্মকে টেনে আনার কোনো যৌক্তিকতা নেই। মাছ রক্ষায় নববর্ষ উদযাপনে ইলিশ না খাওয়ার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
নববর্ষের সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্নস্থানে মঙ্গল শোভাযাত্রা বের হয়। বাংলা নববর্ষের এ অনুষ্ঠান সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে উদ্যোগের কথা জানান সংস্কৃতিমন্ত্রী।
স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন (এলজিআরডি) বিভাগের সচিব আবদুল মালেক শপথবাক্য অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন। এ সময় এলজিআরডি মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আবদুল নাসের চৌধুরী ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব সুরাইয়া বেগম উপস্থিত ছিলেন।