ট্রাম্পের আরব মধুচন্দ্রিমা কতদিন টিকবে?
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: প্রেসিডেন্ট ওবামার সাথে শীতল সম্পর্কের পর মি. ট্রাম্পের কাছে বেশ উষ্ণ অভ্যর্থনা পেয়েছেন মিশরের প্রেসিডেন্ট আল-সিসি। আরবরা তাকে বলছে ‘আবু ইভাঙ্কা আল-আ¤্রিিক’- ‘ইভাঙ্কার বাপ, আমেরিকান’।
কায়রো থেকে কাতার পর্যন্ত যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট প্রার্থীকে কিছুদিন আগেও দেখা হত আবেগতাড়িত, ইসলামবিরোধী এবং পুরুষতান্ত্রিক হিসেবে, সেই পরিস্থিতি এখন পুরো ঘুরে গিয়ে তিনি এখন পরিণত হয়েছে জর্জ এইচ ডব্লিউ বুশের পর আরব বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় মার্কিন প্রেসিডেন্টে। ১৯৯১ সালে ইরাকি দখল থেকে কুয়েতকে মুক্ত করার পর এই জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন সিনিয়র বুশ। এরপর ডোনাল্ড ট্রাম্প আরব বিশ্বের চোখে বেশ উঁচু জায়গা দখল করে নিয়েছেন। কিন্তু এর পেছনে কী কারণ এবং এটা কতদিন থাকবে? সূত্র: বিবিসি
আরব বিশ্বের যেকোন মানুষকে যদি জিজ্ঞেস করেন যে সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার বিষয়ে তার মতামত কি? অধিকাংশ মানুষই বলবে যে ওবামার আট বছর ছিল একটি বড় হতাশা, অন্ততঃ মধ্যপ্রাচ্যের জন্য। ২০০৯ সালে কায়রোতে দেয়া ‘এক নতুন আরম্ভ’ নামে একটি বক্তব্য দেয়ার পর থেকে এর শুরু। ঐ বক্তব্যের পর আরব বিশ্বের সাথে আমেরিকার যোগাযোগ আরো ভালো এবং নতুন দিকে যাবার কথা ছিল। আশার পারদ উঠে যায় অবাস্তব এক উচ্চতায় এবং হতাশাও জায়গা করে নেয় খুব দ্রুত। সূত্র: বিবিসি বাংলা
২০০৯ সালে দেয়া বক্তব্য মুসলিম এবং পশ্চিমা দেশগুলোর একসাথে কাজ করার কথা বলেছিলেন বারাক ওবামা আরব বিশ্ব দেখল যে সিরিয় যুদ্ধ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে এবং দামেস্কের বাইরে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের পর সেটি মাত্রা ছাড়িয়ে গেল। অন্যদিকে ফিলিস্তিন-ইসরায়েল শান্তি চুক্তির ক্ষেত্রেও কোন অগ্রগতি হয়নি।
কিন্তু সবচেয়ে খারাপ বিষয়টি ছিল, আরবদের চোখে, ইরানের প্রতি মি. ওবামার ভূমিকা ছিল নমনীয়। আরবদের মধ্যে একটি সন্দেহ তৈরি হয় যে, আরব বিশ্বের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক আ.েরা তলানির দিকে যাচ্ছে। ‘আরবের রাস্তায় মানুষেরা ওবামার প্রতি বিতৃষ্ণ হয়ে উঠলো’- বলেন গালফ রিসার্চ সেন্টারের নিরাপত্তা এবং প্রতিরক্ষা পরিচালক মুস্তাফা আলানি। তার মতে, ওবামার সময়ে আমরা দেখেছি তথাকথিত ইসলামিক স্টেটের উদ্ভব, এই অঞ্চলে রাশিয়ার প্রবেশ এবং মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে ইরানের আক্রমণাত্মকভাবে প্রভাব বৃদ্ধি। ব্যবসায়িক কারণে ডোনাল্ড ট্রাম্প এমনিতেই ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে সুপরিচিত, ছবিটি দুবাইতে তার গলফ কোর্সের। দৃশ্যপটে আসলেন মি. ট্রাম্প। এসেই তিনি কয়েকটি মুসলিমপ্রধান দেশ থেকে মানুষদের যুক্তরাষ্ট্রে আসা বন্ধ করতে চাইলেন, যেসব দেশের কোনটি কখনোই যুক্তরাষ্ট্রে আক্রমণ করেনি। সেই বিষয়টিও এখন সিরিয়া সম্পর্কে তার কড়া কথা এবং কাজের নীচে চাপা পড়ে যাচ্ছে। সামাজিক মাধ্যমে ঘুরে বেড়ানো একটি হ্যাশট্যাগও রয়েছে ‘আমরা ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ভালোবাসি’। মানুষ মনে করছে যে মি. ট্রাম্প তার যেটা বিশ্বাস সেই অনুযায়ী কাজ করেন, যেখানে মি. ওবামাকে এই অঞ্চলে দেখা হত অনেকটা অন্যায্য, দুর্বল এবং সিদ্ধান্তহীন হিসেবে, যার মধ্যপ্রাচ্য সম্পর্কে খুব একটা আগ্রহ নেই। বেশ কয়েকটি আরব রাজধানীর ক্ষমতাবানরা হাফ ছাড়ছেন যে হোয়াইট হাউজে এখন নতুন নেতৃত্ব এসেছে। সম্পাদনা: প্রিয়াংকা আচার্য্য