দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষে আহত ৪০
মো: নিয়ামুল ইসলাম আকঞ্জি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষে অন্তত ৪০ জন আহত হয়েছে। গতকাল সোমবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত দফায় দফায় সদর উপজেলার বুধল ইউনিয়নের বুধল ও মালিহাতা গ্রামের লোকজনদের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এছাড়া সংঘর্ষের সময় পরাজিত প্রার্থীর লোকজন প্রতিপক্ষের ১৫টি বাড়িঘর ভাংচুর, গবাদিপশু, ঘরের আসবাবপত্রসহ নগদ টাকা লুট করে নিয়ে যায়। পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, রবিবার সদর উপজেলার বুধল ইউনিয়নের ১,২ ও ৩নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত ইউপি সদস্য পদে উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
এতে ‘মাইক’ প্রতীকে শিউলী আক্তার সেলিম ও ‘তালগাছ’ প্রতীকে রওশন আরা প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন। নির্বাচনে ‘মাইক’ প্রতীকে শিউলী আক্তার সেলিম বিজয়ী হন। রবিাবর নির্বাচন চলাকালে ভোট কেন্দ্রে শিউলীর সমর্থক লিয়াকত আলী রৌশন আরার সমর্থক সুমনকে মারধর করেন। এ ঘটনার জের ধরে এদিন বিকেলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এরই জের ধরে গতকাল সকাল সাড়ে ৮টায় মধ্যপাড়ার মসজিদের মাইকে ঘোষনা দিয়ে পরাজিত প্রার্থীর পক্ষে ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি সাবেক ইউপি সদস্য জাকির ও বর্তমান ইউপি সদস্য ফারুকের নেতৃত্বে শতাধিক দাঙ্গাবাজ দেশীয় অস্ত্র শস্ত্র নিয়ে প্রতিপক্ষের বাড়িতে হামলা চালায়। পরে উভয়পক্ষের লোকজন মালিহাতা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠসহ গ্রামের ১০টি স্পটে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। পরবর্তীতে সংঘর্ষটি বুধল ইউনিয়নের বুধল ও মালিহাতা গ্রামের লোকজনও সংঘর্ষে যোগ দেয়। থেমে থেকে কয়েক দফায় দুপুর একটা পর্যন্ত চলা এ সংঘর্ষে কমপক্ষে ৪০জন আহত হয়। সংঘর্ষ চলাকালে কোরবান আলীর ২টি, ফারুক মিয়ার ৩টি, রাশেদ মিয়ার ২টি, আবু শামার ১টি, নুরুল ইসলামের ১টি, জাকিরের ১টি ঘরসহ ১৫টি ঘর ভাংচুর এবং ঘরে রক্ষিত নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার, টিভি, ফ্রিজ, কম্বলসহ বিভিন্ন মালামাল নিয়ে যায়। এছাড়া কোরবান আলী ৫টি গরু, সামছুল হকের ৩টি, ফারুক মিয়ার ১টি গরু লুট করে নিয়ে যায় দাঙ্গাবাজরা। খবর পেয়ে সদর থানা পুলিশ অর্ধশতাধিক রাবার বুলেট ও টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। আহতদের মধ্যে দানা মিয়া, হারুন মিয়া, বাবুল মিয়া, কামাল হোসেন, তামিম, মাজহারুল, নুর আহমেদ, মুসা আলী, হযরত আলী, মোবারক, টুক্কু মিয়া, সোহেল, মামুন, এনামসহ অন্যদের সদর হাসপাতালে ভর্তি ও চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
আহতদের মধ্যে নাসিরউদ্দিনকে আশংকাজনক অবস্থায় ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে প্রেরন করা হয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মঈনুর রহমান জানান, পুলিশ রাবার বুলেট ও টিয়ার গ্যাস ছুঁড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। এছাড়া ঘটনাস্থল থেকে ১০সংঘর্ষকারীকে আটক করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। সম্পাদনা : শাহীন আলম