সিটিং সার্ভিস নিয়ে কিছু কথা
শরিফুজ্জামান শরিফ
সিটিং সার্ভিস বন্ধে পরিবহন নেতাদের ঘোষণাটি ছিল আকস্মিক। পরিবহন সেক্টরের নৈরাজ্যে ক্ষুব্ধ নগরবাসীÑ সেটা পরিবহন নেতারা জানতেন। সবশেষে গতমাসে আকস্মিক পরিবহন ধর্মঘটে তাদের উপর মানুষের ক্ষোভ আরও বেড়েছিল। এখান থেকে নিজেদের ভাবমূর্তি উদ্ধারের চেষ্টা হিসেবে মালিকরা এ কাজ করেছে। বিআরটিএ তাদের কাজে সহযোগিতা করছে। এই শহরে যে পরিবারটির ব্যক্তিগত গাড়ি নেই কিন্তু একটু কম খরচে ও নিরুপদ্রোবে শহরের ভেতরে একটু দূরের কোথাও যেতে চান তিনি কোনো বাহন ব্যবহার করবেন? এটা ব্যক্তির বেলায়ও হতে পারে।
বাধ্য হয়ে তাকে সিনজি অটোরিকশা ব্যবহার করতে অটোরিকশা চালকের কাছে অনুনয়-বিনয় করতে হয় ও পরে অতিরিক্ত অর্থ গুনতে হয়। ভালো বাস যোগাযোগ থাকলে অনেকেই অটোরিকশা বিড়ম্বনা পরিহার করতেন। সিটিং সার্ভিস নামে যে গাড়িগুলো চলে এরা বিআরটিএ নির্ধারিত ভাড়ার থেকে অতিরিক্ত ভাড়া নেয়, লোকাল বাস নামে যে বাস চলাচল করে তারাও অতিরিক্ত ভাড়া নেয়।
শহরে পাবলিক গাড়ি কম। এখানে আরও বাস দরকার যাতে বেশি যাত্রী বহন করা যায়। সেটা হয়নি। সিটিং সার্ভিসের কারণে কম সংখ্যক যাত্রী নিয়ে অনেক বাস চলাচল করছে। আবার এই সার্ভিসের কারণে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়েও একটু স্বস্তি নিয়ে মানুষ এসব গাড়িতে চলাচল করছে। মানুষের উপর পীড়ন যেমন ঠেকাতে হবে তেমনি প্রয়োজনও চাহিদা ও স্বস্তির বিষযটাও বিবেচনায় রাখতে হবে। পরিবহন মালিকদের ইমেজ পুনরুদ্ধারের কাজ আমাদের নয়। আমরা নির্বিঘেœ, স্বস্তিতে এই শহরে চলাফেরা করতে চাই। যাত্রী প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণ ছাড়া বাস মালিক-শ্রমিক প্রতিনিধি ও সরকার মিলে যে ভাড়া নির্ধারণ করেছে সেই ভাড়া কি মালিক ও শ্রমিকরা নিচ্ছে? না। তারা নিজেরা সভায় বসে যে ভাড়া ঠিক করে বাইরে এসে সেই ভাড়ার অতিরিক্ত আদায় করে!
দাবি করি, সভায় বসে তারা যে ভাড়া নির্ধারণ করেছিল সেই ভাড়া নিয়েই গাড়ি চালাতে হবে। বাসের সংখ্যা না বাড়িয়ে এমন কিছু করা ঠিক হবে না যা যাত্রী ভোগান্তি মাত্রা ছাড়িয়ে দেয়।
লেখক: রাজনৈতিক বিশ্লেষক
ফেসবুক থেকে