ছাত্র বিক্ষোভে উত্তাল কাশ্মীর : শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ, জরুরি বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী
ডেস্ক রিপোর্ট : জম্মু-কাশ্মীর ছাত্র বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠায় আজ কাশ্মীরের সব স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রাখা হয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে আজ (মঙ্গলবার) মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠকে বসছেন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি। পার্সটুডে, এবিপি
কাশ্মীরে শ্রীনগরসহ বেশ কয়েকটি স্থানে সোমবার নিরাপত্তা বাহিনীকে লক্ষ্য করে পাথর ছোঁড়ার ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় নিরাপত্তা বাহিনী উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে পাল্টা পদক্ষেপে কাঁদানে গ্যাস ছোঁড়ে।
এদিন, মাওলানা আজাদ রোডে শ্রীপ্রতাপ কলেজের কাছে মিছিল বের করে ছাত্ররা। পুলিশ তাদের বাধা দিলে প্রতিবাদকারীরা পাথর ছুঁড়ে বিক্ষোভ দেখায়। নিরাপত্তা বাহিনী পাল্টা কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়ে পরিস্থিতি মোকাবিলা করার চেষ্টা করে। অন্যদিকে, মহিলা কলেজ ও শহরের অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও বিক্ষোভ শুরু হয়। গান্ধেরবল, বারামুল্লা, সোপিয়ান ও পুলওয়ামার কলেজেও বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
গত ১৫ এপ্রিল পুলওয়ামার ডিগ্রি কলেজ ক্যাম্পাসের বাইরে পুলিশ-সিআরপিএফের চেকপোস্ট বসানোর প্রতিবাদ জানায় ছাত্ররা। এ সময় নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে তাদের সংঘর্ষে ৫৪ জন ছাত্র আহত হয়। ওই ঘটনার প্রতিবাদে পুলওয়ামার ছাত্রদের সঙ্গে একাত্মতা জানাতে সোমবার কাশ্মীরের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীরা সড়কে নেমে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। এদিন সরকারি মহিলা কলেজের ছাত্রীরা ‘নারায়ে তকবির, আল্লাহু আকবর’ ধ্বনি দেয় এবং পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে ‘আজাদি’র দাবিতে সেøাগান দিয়ে বিক্ষোভ দেখায়। ছাত্রীরা ‘আমরা কী চাই? আজাদি’ সহ ভারত বিরোধী সেøাগান দিয়ে তুমুল বিক্ষোভ দেখায়। মহিলা পুলিশদের সঙ্গে এ সময় তাদের ধস্তাধস্তি হয়। অন্যদিকে, বিভিন্নস্থানে ছাত্রদের সঙ্গে নিরাপত্তাকর্মীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া সহ পাথর ছোঁড়ার ঘটনা ঘটে। নিরাপত্তা বাহিনী কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটিয়ে মারমুখী ছাত্রদের মোকাবিলা করার চেষ্টা করে। গোটা এলাকা কার্যত রণক্ষেত্রে পরিণত নেয়। পরিস্থতি মোকাবিলা করতে রাজ্য সরকার মঙ্গলবার সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে। রাজ্যের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ওমর আবদুল্লাহ পিডিপি নেত্রী ও ক্ষমতাসীন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবাকে টার্গেট করে বলেন, ‘কাশ্মীর জুড়ে ছাত্র বিক্ষোভের ফল মেহবুবা জানেন কি?’
তার মতে, পুলওয়ামার সংঘর্ষের ঘটনার পরেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা উচিত ছিল। মেহবুবা পরিস্থিতি সম্পর্কে আদৌ সচেতন নন বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
অন্যদিকে কাশ্মীরের পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে নানা পথের কথা ভাবছে কেন্দ্র। শান্তি আলোচনা ফের শুরু করতে চায় তারা। সোমবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের নেতৃত্বে হয় এই পর্যালোচনা বৈঠক। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালও ছিলেন বৈঠকে। সেখানে তাদের বিশদে জানানো হয়, কাশ্মীর কী জটিলতার মধ্য দিয়ে চলেছে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে কী কী পদক্ষেপ করা হয়েছে। কোনও বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে শান্তি ফেরানো সম্ভব কী না আলোচনা হয়েছে তা নিয়েও।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছেন, সংবিধানের আওতার মধ্যে কেন্দ্র সকলের সঙ্গে কথা বলতে তৈরি। কিন্তু এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে জঙ্গি গোষ্ঠীগুলি। এখনও পর্যন্ত কোনও গোষ্ঠীকে চিহ্নিত করা যায়নি, যাদের সঙ্গে আলোচনায় বসলে এই হিংসা বন্ধ হওয়া সম্ভব। সম্পাদনা : ইমরুল শাহেদ