ইতিহাসের শিক্ষা ভুলে যাচ্ছে সরকারি দল
অজয় দাশগুপ্ত
আইন, বিচার, দুর্নীতি এসব বিষয় স্পর্শকাতর। এ নিয়ে বলা মুশকিল, লেখা তো পরের ব্যাপার। কিন্তু তা বলে কি ভাবনাও প্রকাশ করা নাজায়েজ? কোনোভাবে বিএনপিও তাদের সমর্থক না হবার পরও মনে প্রশ্ন জাগে, মেয়র নির্বাচিত না হলে কি সাক্কু সাহেবকে কি এমন দোষী বলে মনে করা হতো? কি এক আজব সমাজ! তিনি মাত্র ইলেকশনে জিতে এলেন। একটা মেয়র নির্বাচন কি কোনো হালকা বিষয়? এর জন্য যাবতীয় ছাড়পত্র যোগাড় না হলে তিনি কি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারতেন? সবকিছুর পর একজন জয়ী মেয়র প্রার্থীকে এখন কেবল দোষীই বলা হচ্ছে না, তার সম্পত্তি ক্রোকের খবরও দেখলাম মিডিয়ায়। এটা কিসের নমুনা?
চলুন একতরফা রাজনীতি ও তার হালসুরত দেখে আসি। আমরা চাটগাঁর মানুষ। ছেলেবেলা থেকে এম এ আজিজ জহুর মিয়া বা দোভাষদের দেখেছি। মহিউদ্দীন চৌধুরী, আখতারুজ্জামান বাবুর লড়াইও দেখেছি আমরা। কিন্তু এমন নির্লজ্জ আক্রমণ ও মেয়রকে খুনি বলতে শুনিনি। এ খবর মিডিয়ায় এসেছে। লুকোচুরি কিছু না। মহিউদ্দিন সাহেব বলেছেন, মেয়র নাসির নিজহাতে গুলি করেন। প্রমাণও আছে তার কাছে। বয়োবৃদ্ধ এই এককালের নেতা এখনো গদি পাগল। খাই খাই মনোভাবে নিজ দলের মেয়রকে এভাবে কটুকথা বলার দুদিনের ভেতর আবার হাত ধরে হাত উঁচিয়ে ঘোষণা দিয়েছেন তারা একসঙ্গে কাজ করবেন। এটা কি মগেরমুল্লুক? না তারা জনগণকে পাগল মনে করেন?
আবার দলের সচিব বলছেন, লীগে নাকি কাউয়া ঢুকেছে। বাংলাদেশের বহু এলাকার লোকজন কাউয়া চেনেন না। দল যখন সব বিষয়ে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ছে তখন ভাষাও সীমিত হবে বৈকি। এরপর শুনি ফার্মের মুরগির গল্প। এই কি সে আওয়ামী লীগ যার বিভাও শক্তি একদা আমাদের ভরসা যোগাতো?
কুমিল্লা থেকে তেঁতুলিয়া অথবা টেকনাফ এ এক ঘোর অন্ধকার। মাঠ খালি রাখার জন্য সবার সঙ্গে আপোস, সুযোগমতো মানুষকে বিপদে ফেলার ভেতর নিজেদের সর্বনাশ চাটগাঁর মেয়রদের মতো নিজেরাই ডেকে আনবেন। রাজনীতির সহজ সরল পথ না খুললে মানুষের দমিত আবেগ কখন কোন পথ ধরে বলা মুশকিল। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্ব ও বিচক্ষণতায় এখনো সব নিয়ন্ত্রণে বলে যারা তা বুঝতে চাইছেন না তারা সরকারি দলের বন্ধু না গোপন মীর জাফরের দল? দেশ, জাতিকে স্বচ্ছতায় না রাখলে কোনোকিছুই টেকসই হয় না। এটাই ইতিহাসের শিক্ষা।
লেখক: সিডনি প্রবাসী, কলামিস্ট ও বিশ্ববিদ্যালয় পরীক্ষক
সম্পাদনা: আশিক রহমান