নানা সমস্যায় জর্জরিত ধামনপাড়া প্রতিবন্ধী প্রাথমিক বিদ্যালয়
নাটোর প্রতিনিধি : নাটোরের নলডাঙ্গার ধামনপাড়া গ্রামের প্রতিবন্ধী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কার্যক্রম চলছে নানা সমস্যা নিয়ে। স্কুলটি শিক্ষায়তনিক স্বীকৃতি না পেলেও উপজেলার একমাত্র প্রতিবন্ধী স্কুল হওয়ায় দূর-দূরান্ত থেকে মায়েরা তাদের প্রতিবন্ধী শিশুদের শিক্ষা অর্জনের জন্য প্রতিদিনই এই স্কুলে নিয়ে আসছেন। প্রতিবন্ধী এসব শিশুদের আনা নেওয়ার জন্য স্কুলের পক্ষ থেকে নেই কোনো যানবাহন। শিক্ষকদের সকলেই স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে নিয়মিত পাঠদান করে যাচ্ছেন। এত সমস্যা সত্ত্বেও অভিভাবকরা তাদের প্রতিবন্ধী সন্তানদের জীবনযুদ্ধে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য প্রতিদিনই নিজেদের খরচে স্কুলে আনা নেওয়া করছেন। অভিভাবক ও স্থানীয় বিদ্যোৎসাহীদের সহায়তায় স্কুলটি এগিয়ে চলেছে। প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীরাও আনন্দ পায় স্কুলে এসে। স্কুলের শিক্ষকরাও এসব শিশুদের বাবা-মার আদর দিয়ে তাদের লেখাপড়া করান। তবে প্রয়োজনের তুলনায় ব্রেঞ্চ না থাকায় প্রতিবন্ধী এসব শিশুদের মেঝেতে বসেই পড়ানো হয়। বিদ্যুৎ না থাকায় গরমে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। শিহাব, সাদিয়া, তামিম ও রাফিয়া এরা সবাই প্রতিবন্ধী। ১১ থেকে ৭ বছর বয়সী এরা। এদের কেউ শারীরিক, কেউ বাক প্রতিবন্ধী। এরা স্কুলে এসে আনন্দ পায়। তবে ওরা কষ্ট পায় স্কুলে যাতায়াতের রাস্তাটি কাঁচা এবং স্কুলে বিদ্যুৎ ও বাথরুম না থাকার জন্য। এদের কেউ কেউ ৫ থেকে ৭ কিলোমিটার দূর থেকে আসে। সাত বছরের তামিমের মা ফরিদা পারভিন জানান, তিনি প্রায় ৭ কিলোমিটার দূর নলডাঙ্গা উপজেলা সদর থেকে আসেন। স্কুলের কোনো বাহন না থাকায় নিজেরাই ভ্যান রিকশা ভাড়া করে স্কুলে আসেন। কষ্ট হলেও স্কুলে ভর্তি করার পর তামিমের লেখাপড়ার আগ্রহ বেড়েছে। একদিন স্কুলে আনতে না পারলে বাড়িতে বিরক্ত করে। ১১ বছরের শিহাবকে তার মা শরিফা বেগম প্রতিদিন তিন কিলোমিটার দূরে বারোঘরিয়া গ্রাম থেকে নিয়ে আসেন। তিনি জানান, তার বিশ্বাস তার ছেলে প্রতিবন্ধী হলেও লেখাপড়া শিখে একদিন বড় হবে আর নিজেই উপার্জন করবে। শিহাব, সাদিয়া, তামিম ও রাফিয়া জানায়, শিক্ষা অর্জন করে তারা দেশের হয়ে ভাল কাজ করতে চায়। সমাজ গঠনে ভূমিকা রাখতে চায় তারা। সুযোগ সুবিধাসহ সহায়তার হাত বাড়ানোর দারি এসব প্রতিবন্ধী শিশু ও তাদের অভিভাবকদের। এজন্য তারা সরকার ও বিত্তবানদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।সম্পাদনা: মুরাদ হাসান