দেড় লাখ কোটি টাকার এডিপি আসছে
হাসান আরিফ : পদ্মাসেতু, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র আর মেট্রোরেলসহ ১০টি মেগা প্রকল্পকে গুরুত্ব দিয়ে প্রবৃদ্ধি, উন্নয়ন ও সমতাভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য আগামী ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) এক লাখ ৫৩ হাজার ৩৩১ কোটি টাকা বরাদ্দ আসছে। এডিপির মোট ব্যয়ের মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে বরাদ্দ দেওয়া হবে ৯৬ হাজার ৩৩১ কোটি টাকা এবং বাকী ৫৭ হাজার কোটি টাকা বৈদেশিক সহায়তার মাধ্যমে নেওয়া হতে পারে।
চলতি ২০১৬-১৭ অর্থবছরে জন্য বাজেটে ১ লাখ ১০ হাজার ৭০০ কোটি টাকার এডিপি প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। এডিপির মোট ব্যয়ের মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে বরাদ্দ রয়েছে ৭০ হাজার ৭০০ কোটি টাকা এবং বাকী ৪০ হাজার কোটি টাকা বৈদেশিক সহায়তা থেকে পাওয়া লক্ষ্য নির্ধারণ করা আছে। চলতি অর্থবছরের তুলনায় আগামী বাজেটে এডিপির আকার বাড়বে ৪২ হাজার ৬৩১ কোটি টাকা। এর মধ্যে নিজস্ব তহবিলের আকার বাড়বে ২৫ হাজার ৬৩১ কোটি টাকা আর বৈদেশিক সহায়তার পরিমাণ বাড়বে ১৭ হাজার কোটি টাকা।
এদিকে জুলাই-মার্চ ২০১৭ মাসের এডিপি (২০১৬-১৭) বাস্তবায়নের আর্থিক অগ্রগতি ৪৫ দশমিক ১৫ শতাংশ হয়েছে বলে বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগে থেকে জানা গেছে। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, কাঠামোগতভাবে এডিপির আকার যা ধরা হয়েছে প্রশাসনিকভাবে তাই চূড়ান্ত। কিন্তু এডিপি চূড়ান্ত অনুমোদনের দিন প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় চাইলে প্রধানমন্ত্রী এর আকার বাড়াতে বা কমাতে পারে। এবং প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত অনুমোদন পাবে। সে ক্ষেত্রে এই আকার বাড়তে বা কমতে পারে। তবে বাড়ার সম্ভাবনাই বেশি বলে তিনি মনে করেন।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, আগামী অর্থবছরের এডিপি গ্রহণের ক্ষেত্রে কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এসব নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে- এডিপিতে অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে অনুমোদিত প্রকল্প অগ্রাধিকার পাবে। নতুন প্রকল্প গ্রহণের চেয়ে চলমান প্রকল্প সমাপ্ত করার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। বাংলাদেশের সুষম উন্নয়ন ও উচ্চতর প্রবৃদ্ধি অর্জন, আয় বৃদ্ধি, দারিদ্র্য নিরসন ও কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধির মাধ্যমে আঞ্চলিক দারিদ্র্য ও আয় বৈষম্য দূরীকরণ, খাদ্যে স্বয়ম্ভরতা অর্জন ও পুষ্টিমান উন্নয়ন, সামাজিক নিরাপত্তার অগ্রগতি সম্প্রসারণ, মানবসম্পদ উন্নয়ন, কৃষি-পানি সম্পদ ও পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন, রপ্তানি প্রসার ও শিল্পায়ন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের উন্নয়ন, রেল-নৌ ও সড়ক যোগাযোগ অবকাঠামো সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন, নিরাপদ পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন, লিঙ্গ সমতা ও নারীর ক্ষমতায়ন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির প্রসার, সুশাসন এবং জলবায়ু সংবেদনশীল ও পরিবেশবান্ধব উন্নয়ন কর্মসূচিকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।