সব হারিয়ে দিশেহারা ব্রাহ্মণবাড়িয়া হাওর অঞ্চলের কৃষকরা
তৌহিদুর রহমান নিটল ও ফয়সাল খান: ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কয়েকটি উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হাওড় বিস্তৃত নাসিরনগর উপজেলার কৃষকরা। ভারি বর্ষণ আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে মেহেদি ও বিল আকাশি হাওড় একেবারে তলিয়ে গেছে। সেখানকার কৃষকরা সারা বছরের কর্ষ্টাজিত ফসল হারিয়ে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন । সরেজমিন হাওড় ঘুরে দেখা গেছে, ফসল তলিয়ে যাওয়ার দৃশ্য। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক সামসু মিয়া, চান আলীসহ কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে আকস্মিক এ পানিতে তাদের ক্ষয়-ক্ষতির নানা কথা। অনেকেরই নিজের জমি নেই। পরের কাছ ১ বৎসরের জন্য কেউ (বর্গা)আবার কেউ কেউ নগদ টাকা দিয়ে জমি (জমা)নিয়েছেন ধান চাষ করার জন্য। প্রতি এক কাণি জমি বছের ১৫/১৮ হাজার টাকা দিয়ে হয়। আবার জমিতে মোটা অংকের টাকা খরচ হয়েছে ধান চাষের জন্য জমি প্রস্তুত থেকে চারা রোপন করা পর্যন্ত। সে অর্থ আবার অধিকাংশ কৃষক নিয়েছেন ব্যাংক, এন জিও কাছ থেকে সুদে এবং আবার অনেকে গ্রাম্য সুধি মহাজনদের কাছ থেকে চরা সুদে নিয়েছেন টাকা। আর এই টাকা নিয়ে তারা জমি চাষ করেছিলেন। কিন্তু পানিতে হাওড় ফসল তলিয়ে গেলেও তাদের ঋণের বোঝা রয়েই গেল। সে চিন্তায় অনেক দিশেহারা হয়ে পড়েছে।
উপজেলার বেশি ক্ষতিগ্রস্থ ইউনিয়নের মাঝে রয়েছে বুড়িশ্বর, চাতলপাড়, গোয়াল নগর, ভলাকুট, গোর্কণ, হরিপুর, কুন্ডা ও পূর্বভাগ ইউনিয়নের কিছু অংশ। ভারী বর্ষন আর প্রবল ঝড়ো হাওয়ার ফলে ভেঙ্গে পড়েছে অনেক গাছপালা, কাচাঁ ঘরবাড়ি ও দোকানপাট। ব্যাপক ক্ষতির সম্মূখিন হয়েছে পল্লী বিদ্যুতের সংযোগ। ফসল তলিয়ে যাওয়ার সাথে সাথেই বাজারে বাড়তে শুরু করেছে চাউলের দাম। দেখা দিয়েছে নিম্ন দামের চাউলের সংকট। শফিক মিয়া, আব্দুল আউয়ালসহ কয়েকজন খুচরা চাউল বিক্রেতা জানান, বাজারে কোন কম দরের চাউল নেই বললেই চলে। উপজেলা কৃষি সম্প্রাসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে এ বছর, অত্র উপজেলায় প্রায় ১৬ হাজার হেক্টর জমিতে ইরি, বোরো ধানের চাষ করা হয়েছে। সম্পাদনা: মুরাদ হাসান