৪ কারণে বদলে যাবে ভারতের ক্যালেন্ডার
ডেস্ক রিপোর্ট : দীর্ঘদিন পরে কেন্দ্রে ‘পরিবর্তন’ এসেছে ২০১৪ সালে। দীর্ঘ জোট সরকারের পরে নামে এনডিএ হলেও কার্যত একক শক্তিতেই ক্ষমতায় বিজেপি। আর প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসেই একের পরে এক পরিবর্তন এনে চলেছেন মোদি। প্রথমেই স্বাধীনতার সময় থেকে চলে আসা যোজনা কমিশনের দরজা চিরতরে বন্ধ করে নীতি আয়োগ বানিয়েছেন। রেল বাজেট এখন ইতিহাস। সাধারণ বাজেট পেশ শুরু করেছেন ফেব্রুয়ারি মাসে। এবার দেড়শ’ বছরের ক্যালেন্ডারেও বদল আনতে চাইছে মোদি। এবেলা
এখন দেশে যে আর্থিক বছরের ক্যালেন্ডার অর্থাৎ, এপ্রিল থেকে মার্চ তা তুলে দিয়ে জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর ইংরেজি ক্যালেন্ডারকেই সব ক্ষেত্রে কার্যকর করতে চান মোদি। দেশে বর্তমান ব্যবস্থা চলে আসছে ১৮৬৭ সাল থেকে। এই হিসেবেই সরকারি, বেসরকারি বা ব্যক্তিগত আর্থিক হিসেব হয়। এই হিসেবেই কর দিতে হয় নাগরিকদের। এবার সব কিছুতেই বদল চাইছেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু কোন যুক্তিতে এই বদল চাইছেন প্রধানমন্ত্রী? ১। এই নতুন ব্যবস্থায় দেশের কৃষি ব্যবস্থার অনুক’ল হবে বলে বক্তব্য কেন্দ্রের। এর আগে বাজেট এগিয়ে আনার ক্ষেত্রেও এই যুক্তি দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, জুন মাসে দেশে বর্ষা আসে। তার আগে সব রাজ্যে বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ শুরু করে দেওয়া দরকার। সেই যুক্তিতেই মার্চ মাসের মধ্যে বাজেট অধিবেশন শেষ করতে উদ্যোগী হয়েছে এনডিএ সরকার। এই দেশের জিডিপি’র ১৫ শতাংশ আসে কৃষি থেকে। দেশের ৫৮ শতাংশ পরিবারের আয় কৃষির উপরে নির্ভর। তাই আর্থিক ক্যালেন্ডার কৃষির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বানানো উচিত। এই দেশে কোথাও যদি খরা পরিস্থিতি তৈরি হয়, তবে সেটা হয় জুন থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে। নতুন ক্যালেন্ডার হলে বছরের মাঝামাঝি সময়ে ওই এলাকার জন্য আর্থিক বরাদ্দ সহজ হবে।
২। দ্বিতীয় যুক্তি হল, এখন বিশ্বের ১৫৬টি দেশে জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বরকেই আর্থিক ক্যালেন্ডার হিসেবে ধরা হয়। গোটা বিশ্বের আর্থিক লেনদেন এই হিসেবেই হয়। ওয়ার্ল্ড ব্যাংক, ইন্টারন্যাশনাল মনিটরি ফান্ড এই ক্যালেন্ডার অনুসরণ করে।
৩। আরও একটা যুক্তি হল, দেশে একই সঙ্গে দু’রকম ক্যালেন্ডার চালু থাকার ফলে কর্মসংস্কৃতিরও সমস্যা হয়। জাতীয় ক্ষেত্রে ডেটা সংগ্রহের ক্ষেত্রেও অনেক সমস্যা থেকে যায়।
৪। ভারতের আর্থিক ভাগ্য অনেকটাই নির্ভর করে বর্ষার উপরে। দক্ষিণ-পশ্চিম মৌমুমি বায়ুর প্রভাবে যে বৃষ্টি হয়, তার পরেই খরিফ শস্য উৎপাদন হয়। এর পরে শীতে রবিশস্যের উৎপাদন হয়। আগামী দিনে ক্যালেন্ডার বদল হলে বাজেট পেশ হবে নভেম্বর মাসে এবং তা কার্যকর করা যাবে ইংরেজি নতুন বছরের শুরু থেকেই।
তবে এই বদল খুব তাড়াতাড়ি হবে কিনা, সে বিষয়ে কোনো ইঙ্গিত মেলেনি নীতি আয়োগের বৈঠকে। এই নয়া ক্যালেন্ডার চালু করতে হলে প্রথমতঃ বিপুল খরচ হবে প্রথম ধাক্কায়। দ্বিতীয়তঃ নতুন করে কর ব্যবস্থায় বদল আনতে হবে। সেটা সময়সাপেক্ষ। তৃতীয়তঃ এর জন্য সরকারি অফিসার, কর্মীদের অনেকটা সময় দিতে হবে। আর সর্বোপরি, পিছিয়ে দিতে হতে পারে জিএসটি লাগুর করার সময়। সম্পাদনা : ইমরুল শাহেদ