মস্কোয় শুরু নিরাপত্তা বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলন সন্ত্রাসবাদ ঠেকিয়েছে ইরান-রাশিয়া
ডেস্ক রিপোর্ট : ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হোসেইন দেহ্কান বিশ্বে কিছু ঘটনার নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত ফলাফলের বিষয়ে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। মার্কিন নতুন প্রশাসন বিশ্ব জুড়ে যে সব পদক্ষেপ গ্রহণ করছে তার প্রেক্ষাপটে এ জাতীয় ফলাফল দেখা দিতে পারে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি। পার্সটুডে
আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বিষয়ক ষষ্ঠ সম্মেলন যোগ দেয়ার জন্য তিনি বর্তমানে মস্কোয় অবস্থান করছেন। প্রায় ৮০টি দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী, সেনা প্রধান কিংবা সামরিক কমান্ডারদের উপস্থিতিতে আজ বুধবার থেকে ওই সম্মেলন শুরু হয়েছে। ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী এমন সময় মস্কো সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন, যখন সন্ত্রাস বিরোধী যুদ্ধে ইরান ও রাশিয়া অভিন্ন অবস্থান ও কৌশল অবলম্বন করেছে। যে কোনো উপায়ে সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলা করাকে তারা সবচেয়ে অগ্রাধিকার দিয়েছে। এই দুই দেশ যৌথ পরিকল্পনায় মধ্যপ্রাচ্যে সন্ত্রাসীদের অগ্রাভিযান ঠেকাতে সক্ষম হয়েছে।
ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী সন্ত্রাস মোকাবেলায় রাশিয়ার সঙ্গে সহযোগিতার কথা উল্লেখ করে মস্কোয় সাংবাদিকদের বলেছেন, এই সহযোগিতার ফলে মধ্যপ্রাচ্যসহ সন্ত্রাস কবলিত বিশ্বের অন্যান্য স্থানের চেহারা পাল্টে গেছে। মস্কোয় নিরাপত্তা বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে এ বিষয়ে পর্যালোচনা হবে। বিশ্লেষকরা বলছেন, পশ্চিম এশিয়া বা মধ্যপ্রাচ্যের বর্তমান পরিস্থিতি থেকে বোঝা যায়, দখলদার ইহুদিবাদী ইসরাইলসহ রাজতন্ত্র শাসিত কয়েকটি আরব দেশের সহযোগিতায় আমেরিকা এ অঞ্চলে নৈরাজ্য ও নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টির চেষ্টা করছে। কিন্তু সিরিয়ায় তাদের ওই ষড়যন্ত্র এবং সন্ত্রাসীদের নৃশংস তৎপরতা বর্তমানে অচলাবস্থার সম্মুখীন হয়েছে। অর্থাৎ সিরিয়ায় তাদের সফলতা ও ব্যর্থতার ওপর ভবিষ্যতে অনেক পরিকল্পনা বাস্তবায়নের বিষয়টি নির্ভর করছে।
প্রকৃতপক্ষে, সিরিয়ার আলেপ্পো শহর সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে পুনরুদ্ধার হওয়ায় এবং সিরিয়ার সেনাবাহিনী অন্যান্য শহর থেকে সন্ত্রাসীদের বিতাড়িত করতে সক্ষম হওয়ায় আমেরিকা, ইসরাইল ও সৌদি আরবের সমর্থক সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। বর্তমানে তাদের পরাজয়ের বিষয়টি আরো বেশি অনুভূত হচ্ছে। সিরিয়া বিরোধী ষড়যন্ত্রের অংশ হিসাবে সন্দেহজনক রাসায়নিক বোমা হামলার অজুহাতে আমেরিকা সিরিয়ার আশ্ শাইরাত সামরিক ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালেও সেদেশের পরিস্থিতিকে তারা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি। ২০০১ সালে ১১ সেপ্টেম্বর সন্ত্রাসী হামলার পর আল কায়দা, তালেবানসহ অন্যান্য সন্ত্রাসীদের নির্মূল করার প্রতিশ্র“তি দিয়ে আমেরিকা আফগানিস্তানে হামলা চালায়। এর তিন বছর পর আমেরিকা ইরাকে হামলা চালিয়ে সেখানেও ব্যাপক সেনা সমাবেশ ঘটায়। কিন্তু এ দীর্ঘ সময় পরও আমেরিকা ওই দুই দেশে সন্ত্রাসীদের নির্মূল করতেতো পারেইনি বরং মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে দায়েশ নামক ভয়ঙ্কর নতুন সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর উদ্ভব ঘটেছে যারা কিনা সমগ্র ওই অঞ্চলের নিরাপত্তাকে চ্যালেঞ্জের মুঠে ঠেলে দিয়েছে।
এ অবস্থায় আমেরিকা তাদেরই সৃষ্ট সন্ত্রাসীদের মোকাবেলার অজুহাতে এ অঞ্চলে আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে। আমেরিকার অভ্যন্তরে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অবস্থান নড়বড়ে হয়ে পড়ায় এবং জনপ্রিয়তা কমে যাওয়ায় সরকার জনমতের দৃষ্টিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে গোলযোগ সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে। সম্পাদনা : ইমরুল শাহেদ