বাল্যবিয়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হয়ে উঠেছে বরিশালের শিক্ষার্থীরা
বরিশাল প্রতিনিধি: বাল্যবিয়ের কুফল সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে প্রচার-প্রচারণা সুফল বইতে শুরু করেছে বরিশালের গ্রামীণ জনপদে। মাত্র একদিনের ব্যবধানে যার উজ্জল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার দশম শ্রেণিরর মেধাবী ছাত্রী নুরজাহান আক্তার মিলি ও আগৈলঝাড়া উপজেলার আরেক স্কুল ছাত্রী নিশি কর। উভয় শিক্ষার্থী বাল্যবিয়ের অভিশাপ থেকে মুক্তি পেয়ে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে দেশ সেবার আগ্রহে নিজের পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে স্ব-স্ব উপজেলার নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়েরের পর গতকাল বুধবার দুপুরে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে দুইজনকে সাজা প্রদান করা হয়েছে।
সূত্রমতে, বানারীপাড়া উপজেলার সলিয়াবাকপুর ইউনিয়নের খলিশাকোঠা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর মেধাবী ছাত্রী নুরজাহান আক্তার মিলির অমতে তার মা নাসরিন আক্তার মনি নোয়াখালীর বাসিন্দা জহিরুল ইসলাম নামের এক ছেলের সাথে বিয়ে দেয়। উজিরপুর উপজেলার সেনেরহাট গ্রামের নানা শাহজাহান হাওলাদারের বাড়িতে থেকেই মিলি লেখাপড়া করছিলো। তার পৈত্রিক বাড়ি নোয়াখালী। বাবা কুয়েত প্রবাসী মো. আবু বকর সিদ্দিক গত ৫ এপ্রিল দেশে ফিরে কৌশলে শ্বশুর বাড়িতে হাজির হয়ে মেয়ে মিলিকে তার মায়ের অসুস্থ্যতার কথা বলে নোয়াখালীতে নিয়ে যায়। সেখানে বসে মিলির অমতে গত ১৬ এপ্রিল জহিরুল ইসলামের সাথে বিয়ের কাবিন করা হয়। বর্তমানে মিলিকে বরের হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে তুলে দেয়ার প্রস্তুতি চলছে। এরইমধ্যে সেখান থেকে পালিয়ে গত সোমবার দুপুরে মিলি বানারীপাড়া বন্দর বাজারে পৌঁছে। ওই বাজারে বসে তার এক বান্ধবীকে মোবাইল ফোনে কেন তাকে বাল্যবিয়ে দেয়া হয়েছে, এ কারণেসে আত্মহত্যা করবে বলে জানায়। এসময় উপজেলা যুবলীগ নেতা মাসুম বিল্লাহ স্কুল ছাত্রী মিলির মোবাইল ফোনের কথোকথন শুনে এগিয়ে এসে বিষয়টি জানতে চান। অকপটে মিলি সবকিছু বলার পর যুবলীগ নেতা মাসুম বিল্লাহ মিলিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে নিয়ে গেলে স্কুল ছাত্রী মিলি নির্বাহী অফিসার ইসরাত জাহানের কাছে তার মা নাসরিন আক্তার মনির বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। সম্পাদনা: মুরাদ হাসান