পাচার থেকে বাঁচল শিশু সুমাইয়া
মাসুদ আলম : রাজধানীর কামরাঙ্গীরচর থেকে অপহৃত পাঁচ বছরের শিশু সুমাইয়া বাবা-মায়ের কোলে ফিরে এসেছে। অপহরণের ২৪ দিন পর বুধবার গভীর রাতে রাজধানীর কদমতলী থানার রহমতবাগ দক্ষিণ দনিয়া কামালের বাড়ি থেকে তাকে উদ্ধার করে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে শিশুটিকে তার বাবা-মায়ের কাছে বুঝিয়ে দেয় কামরাঙ্গীরচর থানা পুলিশ। সুমাইয়াকে পুলিশ যখন তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিল, মা-মেয়ের কান্না যেন আর থামতে চাইছিল না। কাঁদছিলেন সুমাইয়ার বাবাও। বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার দিকে সুমাইয়া ও তার মা-বাবাকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আনা হলে আনন্দ-বেদনায় পুর্নমিলনের দৃশ্য সাংবাদিকদের স্পর্শ করে। সুমাইয়া তার মাকে বলছিলো মা তোমার জন্য অনেক কেঁদেছি। আমাকে চুমু দাও। তখন মা মুন্নি বেগম কিছুক্ষণ পর পর সুমাইয়াকে চুমু দিচ্ছিল। পাশাপাশি পুলিশ সদস্যদেরও ধন্যবাদ জানায় সুমাইয়া। গত ৩ এপ্রিল বিকাল ৫টার দিকে কামরাঙ্গীরচরের বড়গ্রামে বাসার সামনের রাস্তা থেকে নিখোঁজ হয় স্থানীয় একটি কারখানার কর্মী জাকিরের মেয়ে সুমাইয়া। এ ঘটনায় প্রথমে কামরাঙ্গীরচর থানায় জিডি পরে মামলা করা হয়।
ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের লালবাগ জোনের ডিসি ইব্রাহিম খান বলেন, প্রযুক্তি ও সোর্সের মাধ্যমে আমরা জানতে পারি অপহরণকারীরা কদমতলী থানা এলাকায় অবস্থান করছে। পরে ওই এলাকায় ব্লক রেইড দিয়ে গভীর রাতে পাটেরগাঁওয়ের একটি বাড়ি থেকে শিশু সুমাইয়াকে উদ্ধার করা হয়। এ সময় অপহরণের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে সাবিনা আক্তার বৃষ্টি (২৮) নামের এক নারী ও তার বাবা সিরাজুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়। বৃষ্টি নারী পাচারকারী চক্রের সদস্য। বৃষ্টি গত কিছুদিনের মধ্যে কয়েকবার ভারত গিয়েছিলেন বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন। অপহৃত শিশু সুমাইয়াকেও সময়-সুযোগ বুঝে ভারতে পাচার করা হতো বলে আমরা মনে করছি।
সুমাইয়ার বাবা জাকির হোসেন বলেন, বৃষ্টিকে আমি আগে একবার দেখেছিলাম। কিন্তু তার সঙ্গে কোনো কথা হয়নি।
সুমাইয়ার মা বলেন, ঘটনার দিন বিকালে বৃষ্টি আমাদের বাসায় এসে বলে, বাড়িওয়ালার সঙ্গে দেখা করবে। সে আমাদের বারান্দায় ছিল। কিন্তু কিছুক্ষণ পর দেখি সে নাই, সুমাইয়াও নাই। বৃষ্টি তাদের প্রতিবেশী । সম্পাদনা: এনামুল হক