অনন্য এক ফরাসি প্রেমিক
রাহাত মিনহাজ
শিল্প-সংস্কৃতি-সাহিত্যের অনন্য এক তীর্থস্থান ফ্রান্স। ফরাসি সৈরভের খ্যাতি বিশ্বজোড়া। ফ্রান্সের ক্যাফে, ফ্রান্সের সঙ্গীতে বিমোহিত মানুষের সংখ্যা অগুণিত। ফরাসি প্রেম বা প্রেমকাহিনীর নিয়ে বিশ্ববাসীর আগ্রহের শেষ নেই। সে আগ্রহের তালিকায় নতুন সংযোজন ম্যাকরন-ব্রিজিত প্রেম কাহিনী। ইমানুয়েল ম্যাকরনকে বলা হচ্ছে ফ্রান্সের সম্ভাব্য প্রেসিডেন্ট। প্রথম দফার নির্বাচনে তিনি শতাংশ হারে বেশি ভোট পেয়ে প্রেসিডেন্ট হওয়ার পথে এগিয়ে আছেন। পরিষ্কার ব্যবধানে এগিয়ে আছেন কট্টরপন্থি প্রতিদ্বন্দ্বী ম্যারি লু পেনের চাইতে। বিশ্লেষকদের মতে দ্বিতীয় দফার ভোটে জিতে ফরাসি প্রেসিডেন্টের রাজপ্রাসাদ এলিসি প্রাসাদের প্রবেশ করতে যাচ্ছেন ম্যাকরন। যাতে তার সঙ্গী হবে ব্রিজিত ম্যাকরন। যিনি ম্যাকরনের চাইতে বয়সে মাত্র ২৬ বছর বড়!
বিশ্বে অসম বয়সের প্রেম নিয়ে যত কাহিনী আছে সেগুলোর মধ্যে বেশ উল্লেখযোগ্য ম্যাকরন-ব্রিজিত প্রেম কাহিনী। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের এই গরম সময়ে শুধু ফরাসি নয় গোটা বিশ্বের রসিক মানুষের আগ্রহ এখন এই জুটিকে নিয়ে। বর্তমানে ইমানুয়েলের বয়স ৩৯ আর ফরাসি ভাবি ফার্স্ট লেডি ব্রিজিত ম্যাকরনের বয়স ৬৫ বছর। বয়সের ব্যবধান ২৬ বছর! স্বর্ণকেশী ব্রিজিতকে ম্যাকরন প্রথম দেখেন ১৫ বছর বয়সে। তখন স্কুলে নাটকের শিক্ষিকা ব্রিজিত, ছাত্র ম্যাকরন। ওই সময় ব্রিজিত ছিলেন তিন সন্তানের জননী। যাদের মধ্যে একজন ছিলেন ম্যাকরনের সহপাঠী। স্কুলের এক নাটকের অনুষ্ঠানে শিক্ষিকা ব্রিজিতের প্রেমে পড়েন ম্যাকরন। কিশোর ম্যাকরনের এই সেই প্রেম আবেদন জেনে যাওয়ার পর খুব একটা বিচলিত হননি ব্রিজিত। একসময় তাতে তিনি সাড়াও দেন। কিশোর বয়সের এই উন্মাদনা থেকে ছেলেকে বাঁচাতে ম্যাকরনকে অন্য স্কুলে ভর্তি করান মা-বাবা। কিন্তু তাতেও কোনো ফল হয়নি। নাছোড়বান্দা ম্যাকরন ঠিকই ছুটেছেন স্বর্ণকেশী স্বপ্নকন্যার দিকে। ২০০৭ সালে বিয়ে করেন তারা। দুর্দান্ত রোমান্টিক এই জুটি এখনো একসঙ্গে খুব ভালো সময় পার করছেন। ম্যাকরনকে বিয়ে করার পর তিনি শিক্ষকতা ছেড়ে স্বামীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা বনে গেছেন। ম্যাকরন-ব্রিজিত সংসারে কোনো সন্তান না থাকলেও ব্রিজিতের আগের তিন সন্তান ও ৭ নাতী-পুতি নিয়ে ভালোই আছেন এই দুইজন। দ্বিতীয় দফার ভোটে জিতলে স্ত্রী-সন্তান ও নাতি-পুতিদের নিয়ে এলিসি প্রাসাদে উঠবেন ম্যাকরন। দ্বিতীয় দফার নির্বাচন খুব কাছেই আগামী ৭ মে।
লেখক: প্রভাষক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
সম্পাদনা: আশিক রহমান