বৃহত্তর স্বার্থে বাল্যবিয়ের বিধি-নিষেধ আরোপ করার সুযোগ আছে
হুমায়ুন আইয়ুব : সম্প্রতি ইন্দোনেশিয়ার নারী আলেমগণ বাল্যবিয়ে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে ফতোয়া জারি করেছে। ইন্দোনেশিয়ার নারী আলেমদের তিন দিনব্যাপী এক সম্মেলন শেষে ফতোয়া জারি করা হয়। সম্মেলনে বাল্যবিয়ের ক্ষেত্রে নারীর বয়স ১৬ থেকে ১৮ নির্ধারণের দাবি করা হয়।
নারীর এমন ফতোয়া জারির দৃষ্টান্ত সমকালী বিশ্বে বিরল। ইন্দোনেশিয়ার ইতিহাসে এই প্রথম নারী আলেমরা কোনো ফতোয়া জারি করলো।
কিন্তু নারীদের ফতোয়া দানের ব্যাপারে কী ইসলাম? ঢাকার শায়খ জাকারিয়া রহ. ইসলামিক রিসার্চ সেন্টারের মহাপরিচালক মুফতি মিযানুর রহমান সাঈদ বলেন, ফতোয়া দেয়ার অধিকার পুরুষের মতো নারীরও আছে। পুরুষ যেসব শর্ত পূরণ করলে ফতোয়া দেয়ার যোগ্যতা অর্জন করে, তা পাওয়া গেলে নারীর ফতোয়াও গ্রহণযোগ্য হবে। আমাদের প্রিয় হজরত মুহাম্মদ সা. এর সহধর্মিনী হজরত আয়েশা রা.ও অনেক ফতোয়া দিয়েছিলেন। সুতরাং যারা ফতোয়া দিয়েছেন তারা যদি ফতোয়ার শর্ত পূরণ কওে দেন তাতে নারী বলে কোনো সমস্যা নেই।
তিনি মনে করেন, বিষয়টি যেহেতু নারী সংশ্লিষ্ট তাই এ ব্যাপারে নারীদের মতামতের বিশেষ মূল্য রয়েছে।
তবে মুফতি মিযানুর রহমান সাঈদ বাল্যবিয়ে নিষিদ্ধ করে ফতোয়া জারির ব্যাপারে কিছুটা ভিন্ন মত পোষণ করেন। তিনি বলেন, বাল্যবিয়ে ইসলামে বৈধ। আর কোনো বৈধ জিনিসকে সরাসরি অবৈধ বলার সুযোগ ইসলামে নেই। এটা পাপ ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
তাহলে বাল্যবিয়ে নিয়ে যে সমস্যা হচ্ছে তার সমাধান কী? উত্তরে তিনি বলেন, ‘ইসলাম বাল্যবিয়েকে বৈধতা দিয়েছে শুধু। এটা আবশ্যক কিছু না। তাই কোনো সরকার যদি মনে করেন, সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য বাল্যবিয়ে ক্ষতিকর তাহলে দীনদার মুত্তাকি রাষ্ট্রপ্রধান বাল্যবিয়ের উপর বিধি-নিষেধ আরোপ করতে পারেন। তবে সরকারকে এ কথা স্পষ্ট করতে হবে যে, বাল্যবিয়ে বৈধ, কিন্তু আমরা রাষ্ট্রের কল্যাণে তার উপর বিধি-নিষেধ আরোপ করছি। আর যদি সরকার শুধু সরাসরি নিষিদ্ধ ঘোষণা করে তবে হালালকে হারাম করার পাপ হবে।’
একই মত ব্যক্ত করেন, শোলাকিয়া ঈদগাহের ইমাম আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ। তিনি বলেন, ‘নারীরাও ফতোয়া দিতে পাওে কোনো সমস্যা নেই। তবে ফতোয়ার ভিত্তি হবে কুরআন হাদিস। নারীর পর্যাপ্ত ইসলামি জ্ঞান থাকলে নারীর ফতোয়া দেয়ার পূর্ণ অধিকার রয়েছে। বাল্যবিয়ে ইসলামে বৈধ। এটাকে সরাসরি হারাম বলা যাবে না।