হামিদ মীর তার বাবার মতো সাহসী নন
ড. অনুপম সেন
ওয়ারিস মীর, ১৯৭১ সালে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ব্যাপারে অবদান রেখেছিলেন। ওই সময়ে এখানে যা ঘটেছিল, তার বাস্তবভিত্তিক ঘটনা সাংবাদিক তিনি লিখেছিলেন। নির্যাতি মানুষের পক্ষে, মানবতার পক্ষে কাজ করার জন্যই বাংলাদেশ সরকার তাকে সম্মাননা দিয়েছে। এখন ওয়ারিস মীরের ছেলে সাংবাদিক হামিদ মীর হয়তো কোনো প্রতিকূল পরিস্থিতির পড়েছেন, যে কারণে হয়তো তিনি এমন কথা বলেছেন। পাকিস্তানে বাংলাদেশ বিদ্বেষ এবং বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে এমনভাবেই চিত্রিত করেছে পাকিস্তানের সরকারগুলো। পাকিস্তান সৃষ্টির পর থেকেই তারা এটা করে এসেছে।
যারা একাত্তরে এদেশে সংঘটিত গণহত্যায় সহযোগিতা করেছিল, আলবদর, আলশামস বাংলাদেশের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করেছিল সারা বিশ্বজুড়ে। পাকিস্তানে তো কখনো মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে কাউকে সত্যই জানতে দেওয়া হয়নি। যা এখনো পর্যন্ত তা অব্যাহত রয়েছে। সেখানে সত্য ইতিহাস পড়ানো হয় না। কারণ নতুন প্রজন্ম যাতে সত্যটি জানতে না পারে, সেজন্য ইতিহাস পড়ানো বাদ দেওয়া হয়েছে! সুতরাং সেই পরিপ্রেক্ষিতে তার ছেলের তো আর কোনো উপায়ও নেই। কারণ তিনি যদি এই পুরস্কার গ্রহণ করেন তাহলে তার পিতা এবং তাকে দেখানো হবে দেশদ্রোহী হিসেবে। সে কারণেই হয়তো হামিদ মীর এমন ঘোষণা দিয়েছেন। এ ছাড়া তো পুরস্কার ফেরত দেওয়ার আর কোনো কারণ দেখি না আমি।
তার বাবাকে সম্মাননা দেওয়ার মাধ্যমে পাকিস্তানিদের বাংলাদেশ কোনো ধোকা দেয়নি। হামিদ এখানে অসত্যের আশ্রয় নিয়েছেন। তিনি কোনোমতে এ বিষয়টি এড়াতে চাইছেন।
সেজন্যই একটা অজুহাত খুঁজে বের করেছেন। এছাড়া তো আর কিছু নয়। তার পিতার যে সাহস ছিল, সেটা তার সন্তানের নেই। এটাই এখন প্রমাণিত হচ্ছে। আসলে পাকিস্তান তো এখনো পুরোপুরিভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতাসংগ্রাম মেনে নিতে পারেনি। এ কারণেই পাকিস্তানে মুক্তিসংগ্রামের ইতিহাস পড়ানোই বন্ধ করে দিয়েছে।
পরিচিতি: উপদেষ্টাম-লীর সদস্য, আওয়ামী লীগ
মতামত গ্রহণ: তানভীন ফাহাদ
সম্পাদনা: আশিক রহমান