প্রধান বিচারপতির বক্তব্যকে সঠিক বললেন আইনজীবীরা
এস এম নূর মোহাম্মদ : ভবিষ্যতে সংবিধানের মূলনীতির সঙ্গে কোনো আইন সাংঘর্ষিক হলে তা বাতিল করতে সুপ্রিম কোর্ট পিছপা হবে না- প্রধান বিচারপতির এমন বক্তব্যকে সঠিক বলেছেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবীরা। তাদের মতে, প্রধান বিচারপতির এ বক্তব্য সংবিধানের ৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সঠিক। বিষয়টি সংবিধানেই উল্লেখ করা আছে। এতে সরকারের সঙ্গে বিচার বিভাগের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হওয়ার কোনো কারণ নেই।
বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান ও জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আব্দুল বাসেত মজুমদার বলেন, বিষয়টি সংবিধানে লেখাই আছে। কোনো আইন সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হলে এটা সুপ্রিম কোর্ট বাতিল করে দিবে। এতে দূরত্ব বাড়ার কোনো সুযোগ নেই। কারণ প্রধান বিচারপতি সংবিধানের কথা বলেছেন। সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৭ এ বিষয়টি পরিষ্কার বলা আছে। তবে সরকারের সঙ্গে কোনো বিষয় থাকলে তা পাবলিকলি না বলে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা কথা বলেন তিনি।
সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ বলেন, প্রধান বিচারপতি ঠিকই বলেছেন। সংবিধানের ৭ অনুচ্ছেদে বিষয়টি পরিষ্কার করে বলা আছে। যার কারণে পঞ্চম সংশোধনী, সপ্তম, অষ্টম ত্রয়োদশ ও ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করেছে সুপ্রিম কোর্ট। এটা সব দেশেই আছে। ভারতেও এরকম অনেক বাদ দেওয়া হয়েছে। বিচার বিভাগের সঙ্গে সংঘর্ষ আনার জন্য এ ধরনের বক্তব্যÑ এমনটি কারও ভাবা সঠিক না বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, প্রধান বিচারপতি কেবল একটা ধারণা দিয়েছেন। যেমন বাংলাদেশের সংবিধানে কোথাও মার্শাল ল’ শব্দ নেই। কিন্তু দুবার তা হয়েছে। পরে এগুলো বাতিল হয়েছে। এমনকি তত্ত্বাবধায়ক সরকার সংবিধানের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার বিরোধী বলে তা বাতিল করা হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন বলেন, সাংঘর্ষিক আইন আগে তো দেশে হতে হবে। প্রধান বিচারপতি যেটা বলেছেন সেটা তো ভবিষ্যত বাণী। সাংঘর্ষিক হলে আগে রিট দায়ের হবে হাইকোর্টে। হাইকোর্ট সেটাকে সাংঘর্ষিক বলে রায় দিলে পরে সেটা আপিল বিভাগে যাবে। তিনি বলেন, এ ধরনের বক্তব্য যেই দিক না কেন এতে বিতর্কের সৃষ্টি হয়। এটা ঠিক শোভনীয় নয়। এ থেকে বিরত থাকা উচিত। এমন কোনো বক্তব্য দেওয়া উচিত না যাতে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, সুপ্রিম কোর্ট সংবিধানের অভিভাবক। আইন ও শাসন বিভাগ যদি এমন কোনো ক্ষমতা প্রয়োগ করে যা সংবিধান পরিপন্থী, এক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের সেই ক্ষমতা রয়েছে। তাই সবারই সংযত থাকা উচিত। প্রধান বিচারপতি যা সত্য তাই বলেছেন। এতে আমি সাংঘর্ষিক কিছু দেখছি না।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান বলেন, এ রকম বাতিল তো আমাদের এখানে আগেও হয়েছে। এটা নতুন নয়। আর সুপ্রিম কোর্টের সেই ক্ষমতা আছে। সম্পাদক : হুমায়ুন কবির খোকন