ইইউ সংস্কার না হলে এবার ফ্রেক্সিট!
ডেস্ক রিপোর্ট : ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) সংস্কার করতে হবে, না হলে যুক্তরাজ্যের পর ফ্রান্সেরও এ পরিবার ছেড়ে যাওয়ার (ফ্রেক্সিট) পরিস্থিতি তৈরি হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী দৌড়ে এগিয়ে থাকা প্রার্থী ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। বিডিনিউজ
ইইউ-পন্থি ম্যাক্রোঁ নির্বাচনী প্রচারাভিযানের শেষ সময়ে এ মন্তব্য করলেন। বিবিসি’কে তিনি বলেন, ‘আমি একজন ইউরোপ-পন্থি। নির্বাচনী প্রচারের পুরোটা সময় আমি বারবার ইউরোপীয় ধারণা এবং ইউরোপীয় নীতির পক্ষে কথা বলে গেছি। কারণ আমি বিশ্বাস করি, এটি ফ্রান্সের জনগণের জন্য এবং বিশ্বায়নে আমাদের দেশের অবস্থানের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’
‘কিন্তু একই সময়ে আমাদের চলমান পরিস্থিতির মোকাবেলাও করতে হবে, আমাদের জনগণের কথা শুনতে হবে। আমাদের জনগণ কি কারণে আজ এত ক্ষুব্ধ ও অধৈর্য হয়ে পড়েছে তা আমাদের শুনতে হবে। তাছাড়া, ইইউ এর অকার্যকারিতাও আর চলতে পারে না।’ নিজে ইউরোপপন্থি হলেও ইইউ’র আমূল সংস্কারের ওপরই ফ্রান্সের এ জোটে থাকা নির্ভর করছে বলে মনে করেন ম্যাক্রোঁ। তিনি বলেন, “এরকম অকার্যকর ইইউ আর টিকবে না। তাই আমি মনে করি, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং আমাদের ইউরোপীয় প্রকল্পে বড় ধরনের সংস্কার করতে হবে।” ইইউ এখন যেভাবে চলছে সেটিকে সেভাবেই চলতে দিলে তা ‘বিশ্বাসঘাতকতা’ হবে বলেই মনে করেন ম্যাক্রোঁ। তিনি বলেন, “আমি তা করতে চাই না। কারণ, তাহলে হয়ত পরদিন থেকেই আমাদের একটি ফ্রেক্সিট এর মুখোমুখি হতে হবে অথবা আমাদের আবারও লো পেনের ন্যাশনাল ফ্রন্টের মুখে পড়তে হবে।” তাই প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে ইইউ সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।
গত ২৩ এপ্রিল ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ম্যাক্রোঁ ২৩ দশমিক ৭ শতাংশ ভোট এবং তার প্রতিপক্ষ কট্টর-ডানপন্থি প্রার্থী মারিঁয়ে লো পেন ২১ দশমিক ৭ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। আগামী ৭ মে দ্বিতীয় দফা ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে এবং ম্যাক্রোঁ ও লো পেনের মধ্যে একজনকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে বেছে নেবেন ফরাসিরা। ইইউ-বিরোধী লো পেন এটিকেই তার নির্বাচনের পুঁজি করেছেন।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে ইইউ’য়ে ফ্রান্সের থাকা না থাকা নিয়ে গণভোট আয়োজনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন লো পেন। ঠিক যেমন ইইউ’য়ে থাকা না থাকা প্রশ্নে যুক্তরাজ্যে গণভোট হয়েছিল। সে গণভোটে জনগণ ইইউ থেকে যুক্তরাজ্যের বেরিয়ে যাওয়া অর্থাৎ, ব্রেক্সিটের পক্ষে রায় দিয়েছিল।
নির্বাচনী প্রচারে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী সম্পর্কে লো পেন বলেন, যদি ম্যাক্রোঁ প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন হবে তিনি বর্তমান প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া অলন্দের মতই দেশ পরিচালনা করবেন এবং ‘কর্মসংস্থানের বাকি সুযোগগুলোও বিদেশে চলে যাবে, ধ্বংসের পথে থাকা দেশের বাণিজ্য ব্যবস্থা পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যাবে এবং ঘাটতি ও ঋণের ফাঁদ আরও বড় হবে’।
ফ্রান্সের সীমান্ত নিয়ন্ত্রণের এবং অভিবাসীদের সংখ্যা হ্রাসের প্রতিশ্রুতি দিয়ে গ্রামাঞ্চল এবং সাবেক শিল্পাঞ্চলের বাসিন্দাদের সমর্থন জিতেছেন লো পেন। যদিও জনমত জরিপ মাক্রোঁর জয়ের কথাই বলছে। সম্পাদনা : ইমরুল শাহেদ