আজ বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস
কামরুল আহসান : বর্তমান যুগ সংবাদপত্রের যুগ। সকালে ঘুম থেকে উঠেই আধুনিক শিক্ষিত মানুষ ভাঁজ করা দৈনিক পত্রিকার দিকে হাত বাড়িয়ে দেয়। নতুন কাগজের ঘ্রাণের সাথে তার প্রাণের ভিতর ঢুকে যায় পৃথিবীর সব খবরাখবর। বিশ্বের কোন প্রান্তে কী হলো তা সে জেনে যায় এক মুহূর্তে। কোনো ভালো খবরে সে উৎফুল্ল হয়, খারাপ খবরে হয় মূহ্যমান। সারাটা দিন নির্ভর করে সংবাদপত্রের উপরই।
ভালো খবর আর কোথায় তেমন আজকাল? যুদ্ধাক্রান্ত একটা পৃথিবী। প্রতি মুহূর্তেই আতঙ্কে থাকতে হয়, কোথাও আবার কোনো খারাপ ঘটনা ঘটে গেল কি-না। প্রতিদিনই হত্যা, যুদ্ধ, দুর্ঘটনারই খবর আসে বেশি। তাও আজকের মানুষ পৃথিবীর সাথে সংযুক্ত না থেকে পারে না। সংবাদপত্রের মধ্য দিয়ে একজন মানুষ এক মুহূর্তে সমস্ত পৃথিবীর সঙ্গে সংযুক্ত হয়। আর এই দুরূহ কাজটি যিনি করেন, ঘুরে ঘুরে নিজের জীবন বিপন্ন করে খবর সংগ্রহ করেন, সেই সাংবাদিকের জীবনটি নিরাপদ নয়। তাকে দিন কাটাতে হয় নানা রাজনৈতিক রোষানলে। নিজের জীবন হাতের মুঠোয় নিয়ে একজন সাংবাদিক সত্যিকারের সংবাদটি পরিবেশন করতে তৎপর থাকেন সর্বদা।
সেই সাংবাদিকের জীবনের নিরাপত্তা ও সংবাদপত্রের স্বাধীন মতপ্রকাশের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যেই প্রতি বছর ৩ মে পালিত হয় ‘বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস’।
জাতিসংঘের এক সাধারণ সভায় ১৯৯৩ সালে এই দিবসটি পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আফ্রিকার সংবাদপত্রসমূহের ওপর একটি সেমিনারের প্রতিক্রিয়া স্বরূপ হচ্ছে এই দিবসটি। এই সেমিনারটি ১৯৯১ সালে নামিবিয়ায় অনুষ্ঠিত হয় এবং এখানে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ও বহুমুখিতা নিশ্চিত করতে ‘উইন্ডহক ডিক্লারেশন’ দেওয়া হয়। এই উইন্ডহক ঘোষণার মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে স্বাধীন ও বহুমুখী সাংবাদিকতা চর্চার নিশ্চয়তা দেওয়া। এই ঘোষণার মাধ্যমে বোঝানো হয় যে, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও জাতির গণতন্ত্র বিকাশের জন্য সংবাদপত্রের স্বাধীনতা জরুরি। ৩ মে এই ‘উইন্ডহক ডিকলারেশন’ ঘোষিত হওয়ায় প্রতি বছর বিশ্ব সংবাদপত্র স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করা হয়।
এ বছর দিবসটির প্রধান উৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায়। দিবসটি উপলক্ষে মে ১-৪ তারিখ পর্যন্ত সেখানে বিভিন্ন আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। বিশ্বের বড় বড় সংবাদমাধ্যকর্মীরা সেখানে একত্রিত হয়েছেন। সম্পাদনা : পরাগ মাঝি