একনেকে ৫ প্রকল্প অনুমোদন ভূমিহীনদের জন্য বাসস্থানের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীরধ
সাইদ রিপন : বাংলাদেশের কোনো মানুষ ভূমিহীন থাকবে না। যারা এখনো ভূমিহীন অবস্থায় আছে তাদের তালিকা করার জন্য ডিসিদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, আমরা সব ভূমিহীনদের স্থায়ীভাবে বাসস্থানের ব্যবস্থা করব।
গতকাল রাজধানীর শেরে বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় নতুন ও সংশোধিত ৫টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন একনেক চেয়ারপারসন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রকল্পগুলোর জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৫ হাজার ৭১১ কোটি টাকা। পুরো টাকাই জিওবি খাত থেকে খরচ করা হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, শুধু খাস জমি নয়, দরকার হলে সরকারি অর্থায়নে জমি কিনে ভূমিহীনদের মাথা গোঁজার ঠাঁই করে দেব। সারাদেশের ভূমিহীনদের তালিকা প্রস্তুত করে সেই অনুযায়ী আমরা নতুন করে উদ্যোগ নেব। সভাশেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আহম মুস্তফা সাংবাদিক ব্রিফ করেন। পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত আড়াই লাখ মানুষের পুনর্বাসন করবে সরকার। আশ্রয়ন-২ প্রকল্পের মাধ্যমে ভূমিহীন ও গৃহহীন এসব পরিবারকে পুনর্বাসন করা হবে। এর মধ্যে ১ লাখ ৭০ হাজার পরিবারকে নিজ জমিতে গৃহনির্মাণ এবং ৪০ হাজার ভূমিহীন পরিবারকে ব্যারাকে পুনর্বাসন করা হবে। প্রকল্পের ব্যয় ১২০ ভাগ বাড়িয়ে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ হাজার ৮৪০ কোটি টাকা। ভূমিহীনদের পুনর্বাসনের জন্য নেওয়া আশ্রয়ন-২ প্রকল্পের প্রাক্কলিত অনুমোদিত ব্যয় ছিল এক হাজার ১৬৯ কোটি ১৭ লাখ টাকা। যা ২০১০ সালে শুরু হয়ে ২০১৪ সালের জুনে শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কাজের পরিধি বাড়ার কারণে প্রকল্পের মেয়াদ ২০১৯ সাল পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালের ২০ নভেম্বর নোয়াখালী জেলার রামগতি থানায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে সরকারি খাসজমিতে পুনর্বাসন কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। তারই প্রেক্ষিতে বৃহত্তর নোয়াখালী জেলার ৪টি গুচ্ছগ্রামে ১৪৭০টি পরিবারকে পুনর্বাসিত করা হয়। পরবর্তীতে ১৯৮৮ সালে এই প্রকল্পের নাম পরিবর্তন করে আদর্শ গ্রাম নামে ভূমিহীনদের পুনর্বাসন কাজ অব্যাহত থাকে। এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য হলো গৃহহীন মানুষগুলোকে গৃহসংস্থান এবং কর্মসংস্থান করে মূল উন্নয়ন কার্যক্রমের আওতায় নিয়ে আসা। প্রকল্পের আওতায় দুই ধরনের ঘর নির্মাণ করা হবে। প্রথমত আরসিসি পিলার দিয়ে দুই কক্ষ বিশিষ্ট ৩শ বর্গফুট মেঝের ঘর ও ৫ রিং বিশিষ্ট স্যানিটারি ল্যাট্রিন। অপরটি প্রতি দুই পরিবারের জন্য ২৯৪ বর্গফুট বিশিষ্ট একচালা সেমিপাকা টু-ইন-ওয়ান হাউস নির্মাণ করা হবে। আশ্রয়ন-২ প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী এই নির্দেশনা দেন। এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। এছাড়াও একনেকে ৫৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রকল্পটি হাওর এলাকায় বাস্তবায়িত হবে। যেখানেই বাঁধ অথবা কোনো সড়ক নির্মাণ করা হবে সেখানেই পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে। অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হলোÑ নরসিংদী জেলার মনোহরদী উপজেলার হেতেমদী থেকে সগরদী বাজার পর্যন্ত সংযোগ সড়ক নির্মাণ প্রকল্প। এর জন্য ব্যয় হবে ১১৬ কোটি টাকা। বাগেরহাট-চিতলমারী-পাটগাতী মহাসড়ক যথাযথমান ও প্রশস্ততায় উন্নয়ন প্রকল্প। এর জন্য ব্যয় হবে ১১২ কোটি টাকা। প্রযুক্তির সহায়তায় নারীর ক্ষমতায়ন প্রকল্প। এর জন্য ব্যয় হবে ৮২ কোটি টাকা। সম্পাদনা : শিমুল মাহমুদ