ট্রাম্প যে কারণে কিম-এর সঙ্গে দেখা করার আগ্রহ দেখিয়েছেন
ড. দেলোয়ার হোসেন
ডোনাল্ড ট্রাম্প উত্তর কোয়িার নেতা কিম জং উনের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছেন বলে আমরা জেনেছি। এটা আসলে ট্রাম্পের সভাবসুলভ আচরণ। ইতোমধ্যে তিনি ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট দুতার্তেকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে এখনো আলোচনা না করলেও পুতিনের ব্যাপারেও উনার চিন্তাভাবনা প্রক্রিয়াধীন। দেখা যাবে কোনো একদিন পুতিনকেও তিনি হোয়াইট হাউসে ডেকে নিবেন। ফলে এখানে একধরনের একটা নাটকীয়তা হচ্ছে। ট্রাম্পের ফরেন পলিসির একটা টেকনিক বা একধরনের কৌশল বা নাটকীয়তা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিজেদের পলিসিতেই চলছে। সেভাবেই তারা কাজ করছে।
উত্তর কোরিয়া সমস্যা নতুন নয়। রিপাবলিকান বা ডেমোক্রেটদের যে যখনই ক্ষমতায় ছিল তারা তা বিভিন্নভাবে মোকাবিলা করেছে। অলমোস্ট একইভাবে করেছে, খুব বড় পার্থক্য যে ছিল তা নয়। শক্তি প্রয়োগের ভয় দেখিয়ে পরে একধরনের সমঝোতা হয়ে যায়। ট্রাম্প এখানে তার ব্যক্তিগত এপ্রোচটা যুক্ত করেছেন। ব্যক্তিগতভাবে তিনি নিজেও যেমন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন এবং বিতর্কের মধ্যেই আছেন। গণমাধ্যমের বিরুদ্ধেও যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন। অভিবাসনবিরোধী অবস্থান বহাল রেখেছে। মেক্সিকো সীমান্তে দেওয়াল নির্মাণ। ফলে পররাষ্ট্রনীতির জায়গা থেকে ট্রাম্প একধরনের বিতর্কিত ব্যক্তিদের দিয়ে কথা বলতে চান। এটা তার একটা ইচ্ছা। এর মাধ্যমে তিনি তার দেশের সাধারণ জনতার কাছাকাছি পৌঁছতে চান। জনপ্রিয়তা অর্জন করতে চান। পাশাপাশি তিনি এ বক্তব্যের মাধ্যমে একধরনের বার্তা দিলেন যে, সমস্যা সমাধানে আলোচনা করতে তিনি রাজি। ঝুঁকিপূর্ণ প্রস্তাব, যা কখনো কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট করেননি, সেটা তিনি করেছেন। এটা একধরনের বিতর্ক তৈরি করার একটা প্রয়াস। এর মাধ্যমে এই সংকটটা বা এই উত্তেজনার মধ্যে নতুন একটা উপাদান যুক্ত করলেন।
সত্যিই যদি উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে এ ধরনের একটা আলোচনা হয় ট্রাম্প ও কিম জং উনের মধ্যে, একটা বোঝাপড়া হয় দুই দেশের মধ্যে তাহলে সেটা বিশ্বরাজনীতি এবং কোরিয়া কিংবা ওই অঞ্চলের জন্য এটা খুব ভাল হবে। তবে উত্তর কোরিয়া এ ধরনের উদ্যোগের পক্ষে থাকবে না। উত্তর কোরিয়া চায় না যে, সরাসরি দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে আলোচনা করে এ ধরনের সমস্যার সমাধান হোক। যদি এ প্রস্তাবটা উত্তর কোরিয়া গ্রহণ করে তাহলে সাময়িকভাবে হলেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং উত্তর কোরিয়ার মধ্যে সম্পর্কের উন্নতি হবে। বাস্তবে যদি এমন দৃশ্য দেখা যায় তাহলে তার একটা ইতিবাচক প্রভাব পড়বে সারা দুনিয়ায়। কিন্তু সেটা আপাতত অসম্ভব এবং অবাস্তব বলেই আমার কাছে মনে হয়।
পরিচিতি: আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক
মতামত গ্রহণ: তানভীন ফাহাদ/সম্পাদনা: আশিক রহমান