ভারতে পাচারের শিকার ২০০ বাংলাদেশি মেয়েকে উদ্ধার
লিহান লিমা: পাচারকারীর কবলে পড়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে ৪ বছর যাবত কঠিন জীবনযাপনের পর অবশেষে আলোর মুখ দেখল ২০০ বাংলাদেশি মেয়ে। এখন তারা স্বদেশে ফেরার অপেক্ষায়। কিন্তু দীর্ঘদিন বদ্ধ ঘরে থেকে তাদের আশার আলো নিভে গিয়েছে। উদ্ধারকৃত সবাই ভুগছে হতাশায়।
পশ্চিমবঙ্গ সরকার জানায়, এদের মধ্যে বেশিরভাগ মেয়ে বলতে পারছে না বাংলাদেশে তাদের ঠিকানা কোথায় এবং তাদের কোথায় পাঠাতে হবে। এমনকি তারা তাদের বাবা-মায়ের কোন সন্ধানও দিতে পারে নি। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের নারী ও শিশু বিষয়ক সমাজকল্যাণ সংস্থার প্রধান সহকারী রৌশনি সেন বলেন, বর্তমানে ২২০ জন মেয়ে আমাদের হেফাজতে আছে। যে করেই হোক, আইনি বা অন্য কোন উপায়ে তাদের ফেরত পাঠাতে হবে।
উদ্ধারকৃত আসমা এবং শায়লা (ছদ্মনাম) তিন বছর ধরে বন্দী জীবন-যাপন করেছিল। গত তিন বছরের বাহিরের পৃথিবী সম্পর্কে তাদের কোন ধারণা নেই। তারা জানে না তিন বছর কিভাবে গিয়েছে। এখন তারা দুই জনই বন্ধু এবং স্বপ্ন দেখে মাতৃভূমিতে ফিরে আসার। উদ্ধারকৃত মেয়েদের মাতৃভূমিতে ফেরত পাঠাতে পুলিশ, বিএসএফ, এনজিও, বাংলাদেশ দূতাবাস এবং অন্যান্য সংস্থার সদস্যদের সহ বিশেষ টাস্ক ফোর্স গঠন করা হয়েছে। রৌশনি বলেন, গত পাঁচ বছরে তারা পাচারের শিকার ৪০০ বাংলাদেশী নাগরিককে ফেরত পাঠিয়েছেন। কিন্তু তাদের মধ্যে অনেকে নিজেদের ঠিকানা ও বাবা-মায়ের নাম বলতে পারেন নি।
সেন আরো বলেন, সবচাইতে কঠিন বিষয় পাচারের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের বাবা-মাকে খুঁজে বের করা। কম বয়সে পাচারের কবলে পড়ায় তারা নিজেদের বাড়ি চিহ্নিত করতে পারেন না। সেন জানান, মাঝে মধ্যে পাচারকারী দলকে শনাক্ত করার জন্য, এবং আদালতে সাক্ষ্য দেয়ার জন্য পাচারের শিকার হওয়া কিছু সদস্যের এখানে থাকা প্রয়োজন হয়। কখনো কখনো তাদের বাড়িতে ফেরত পাঠিয়ে বিশেষ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তাদের সাক্ষ্য আদালতে দেয়া হয়।
পশ্চিমবঙ্গের সেনলাপ এনজিও’র কর্মী তপতি ভৌমিক বলেন, উদ্ধার করা হলেও তাদের মাতৃভূমিতে পাঠাতে সময় লাগে কারণ আইনি জটিলতাও আমলাতান্ত্রিক কারণে বেশিরভাগকেই বাধ্য হয়ে ভারতে অবস্থান করতে হয়।
মানবাধিকার সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল জাস্টিস মিশন জানায়, পাচার ও দাসত্ব মোচনে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে এবং তারা এই বিষয়টি দমন করতে গুরুত্বের সঙ্গে কাজ করছেন। সূত্র: ডেকান হেরাল্ড , নিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস