কাউয়া, ফার্মের মুরগি এবং বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ
রবিউল আলম
রাজনৈতিক আদর্শ নেই, কিন্তু উদ্দেশ্য আছে। তাদের এলাকায় পাওয়া যাবে না, সারাদিন একটি ছবি তোলার জন্য নেতাদের পেছন পেছন ঘুরতে থাকবে। কোনোক্রমে একটি ছবি তুলতে পারলেই হলো সঙ্গে সঙ্গে তা ফেসবুক, বিলবোর্ড, পোস্টার দিয়ে এলাকায় পরিচিত হওয়ার চেষ্টা করবে।
বিএনপি-জামায়াতের কাউয়ারা অফিস ছাড়ে না, পিছু ছাড়ে না। সারাদিন কা কা করতে থাকে। ওবায়দুল কাদেরের দীর্ঘ অভিজ্ঞতায় কাউয়াদের চিনতে পেরে বিরক্ত হয়ে বলেছেন, আওয়ামী লীগে কাউয়া ঢুকেছে। লুটেরাদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, পালাবার পথ পাবে না। এ কথাটা কাদের সাহেব ভুল বলেছেন। লুটেরারা পালায় না, লুটের টাকার জোরে ওরা সব দলের সঙ্গী হয়, পালাতে হয় আমাদের মতো নিরাপরাধ, দলপ্রেমী, মুজিবপ্রেমী মানুষদের। আর দু-চারটা লুটেরা পালিয়ে গেলেও তাদের অসুবিধা হয় না, ওদের কাছে অগাধ টাকা আছে। রাজনৈতিক জীবনে আমার চাইতে কাদের সাহেবের অভিজ্ঞতা অনেক বেশি। তিনি তৃণমূল থেকে দেখেছেন, কারা না খেয়েও রাজনীতির মাঠে থাকে, জেল-জুলুম ও অত্যাচারিত হয়েও অপরাজনীতিকে মোকাবিলা করে। এই লুটেরা, কাউয়া, ফার্মের মুরগিদের ছাড়াই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে। বিএনপি-জামায়াতের জ্বালাও-পোড়াও মোকাবিলা করেছে, রাজপথে থেকে অনেক ছেলে জীবন দিয়েছে, আমার ওয়ার্ডের কর্মী মুক্তার হোসেনকে কুপিয়ে হত্যা করা হলো, লাশ নিয়ে বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে যখন আমরা কান্নায় ভেঙে পড়ি, মেয়র হানিফ কাঁধে হাত দিয়ে বুকে জড়িয়ে নিয়েছিলেন। বলেছিলেন, এইদিন থাকবে না।
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার অর্থদাতারা আজ গাবতলী গরু হাটের ইজারাদার, সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আরও অনেকে। কোনো কাউয়ারা তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে জানি না। আজ আমি সেই প্রসঙ্গে যাচ্ছি না, সরকারের প্রয়োজন হলে অনেক আলোচনা করা যাবে। একটি ওয়ার্ডের দায়িত্ব পালন করছি। সন্ত্রাস ও মাদকমুক্ত সমাজ গড়তে কিছু কাউয়া বিতাড়ন করা অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়ে। সব কাউয়াদের সনাক্ত করা খুব কঠিন কাজ। গডফাদার মাদক সম্রাট হাসুসহ কিছু নাম উল্লেখ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তা চাইলাম, অভিযোগ করার অপরাধে এখন আমাদের হাজিরা দিতে হবে। কোথায় মাদক বিক্রয় করে এবং কিভাবে দখল করে রেখেছে সবকিছু দেখিয়ে দিতে হবে। বিএনপির ওয়ার্ডের যুগ্ম সম্পাদক, হাজারীবাগ থানার সাবেক ওসি মাইনুলের উপর বোমা হামলার ২নং আসামির তালিকায় থাকা এবং শতশত এলাকাবাসীর অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও হাসুকে রাতে আঁধারে পুলিশের গাড়িতে ঘুরতে দেখা যায়Ñ এই কাউয়াদের অর্থের জোর কত?
যারা আওয়ামী লীগে কাউয়া সরবরাহ করে, দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করে ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখেন, দলের ভিতরে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চান, তাদের বলছিÑ আপনাদের এই অপচেষ্টা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ওবায়দুল কাদের থাকতে সম্ভব নয়। কাউয়ারা কা কা করবে, ফার্মের মুরগিরা বসে থাকবে, লুটেরারা পালিয়ে যাবে। মুজিব সৈনিকেরা বীরদর্পে চলবে। আমরা জাতির জনকের সৈনিক। মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ আমরা বুকে লালন করি। আদর্শ বাস্তবায়নে আমরা পিছপা হই না। মরার ভয়েও ভীত হই না। জাতির জনকের সন্তানরা কাউয়া, ফার্মের মুরগি ও লুটেরা হতে পারে না। এটাই সত্য।
লেখক: মহাসচিব, বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতি
সম্পাদনা: আশিক রহমান