যোগাযোগ ও দুর্যোগকালীন সহযোগিতা আরো বাড়াবে
নাশরাত আর্শিয়ানা চৌধুরী : দক্ষিণ এশিয়া স্যাটেলাইট উপগ্রহের মাধ্যমে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ, দুর্যোগকালীন সহযোগিতা আরও বাড়াবে। দেশগুলোর প্রাকৃতিক সম্পদের সঠিক ম্যাপিং, টেলি মেডিসিন, টেলি কমিউনিকেশন, টেলি এডুকেশন, তথ্য প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে। এছাড়া এক দেশের সঙ্গে অন্যদেশের জনগণের যোগাযোগ এবং দুর্যোগকালীন তথ্য সরবরাহে ব্যবহৃত হবে। এতে করে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে আগামী দিনে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। এছাড়াও আগামী দিনে এর প্রসার আরও বাড়বে।
সূত্র জানায়, বাংলাদেশ আশাবাদী, দক্ষিণ এশিয়া স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ নতুন দুয়ার উন্মোচন করবে। সরকার আশা প্রকাশ করছে এই স্যাটেলাইটের মাধ্যমে দক্ষিণ এশিয়ার চিত্রপট পরিবর্তিত হয়ে যাবে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের সঙ্গে দক্ষিণ এশিয়ার যোগাযোগ ভূমি, পানি এবং বাতাসের পরিধি থেকে এখন মহাকাশ পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে। এর ফলে দক্ষিণ এশিয়ার সম্পর্ক উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে এবং এটির মাধ্যমে এ অঞ্চলের চেহারা বদলে যাবে। এই জন্য কোনো সময় না থাকলেও এটা যে আগামী দিনে বিশেষ ভূমিকা রাখবে সে ব্যাপারে সরকার ও প্রধানমন্ত্রী ভীষণভাবে আশাবাদী।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সার্ক স্যাটেলাইট দক্ষিণ এশিয়ায় সহযোগিতার নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে। কেবল তাই নয়, এটা নতুনও। ভারত, আফগানিস্তান, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ, নেপাল এবং ভুটানের মধ্যেও যোগাযোগের ক্ষেত্রে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
দুই দেশ এবং অঞ্চলকে সংযুক্ত করতে বাংলাদেশ ও ভারত একসঙ্গে অনেক সফলতা অর্জন করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমি নিশ্চিত যে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের মাধ্যমে দক্ষিণ এশিয়ার চিত্রপট পরিবর্তিত হবে। যোগাযোগে ভূমি, পানি এবং বাতাসের পরিধিও মহাকাশ পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে।
সূত্র জানায়, এই সহযোগিতার মাধ্যমে সরকার এই অঞ্চলের প্রযুক্তিগত দিকে আরও উন্নতি করবে। সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য চেষ্টা করবে।
ভারত আশাবাদী এই জন্য যে, এই স্যাটেলাইট আঞ্চলিক সহযোগিতার নতুন ক্ষেত্র উন্মোচন করেছে। সেই সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আশা প্রকাশ করেছেন, শান্তি ও সমৃদ্ধির প্রশ্নে দক্ষিণ এশিয়া ঐক্যবদ্ধ। সেই হিসাবেই এটাও কাজ করবে আরও ঐক্য গড়ার ক্ষেত্রে।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো চাইছে, এই অঞ্চলের সকল দেশের সঙ্গে সহযোগিতার মাধ্যমে এই অঞ্চলকে শান্তিপূর্ণ অঞ্চল গড়ে তোলা। আর যেখানে সুপ্রতিবেশীর মতই বসবাস করে আমাদের জনগণের জন্য গঠনমূলক নীতির বাস্তবায়নও করতে চাইছে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ও ভারত যৌথভাবে এ অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে সম্পর্ক সুদৃঢ়করণে অনেক সাফল্য অর্জন করেছে। উপগ্রহে উৎক্ষেপণ দক্ষিণ এশিয়ায় দেশগুলোর দৃশ্যপট বদলে দেবে।
ভারত সরকার মনে করছে, স্যাটেলাইট আঞ্চলিক সহযোগিতার দৃষ্টান্ত ও নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। এর মাধ্যমে এ অঞ্চলের দেশগুলোর সমঅনুভূতির বার্তা প্রকাশ করা হয়েছে। এছাড়া এটাও প্রমাণ হয়েছে এই অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতার ক্ষেত্র আকাশ পর্যন্ত কেবল নয়, এর চেয়েও আরও বহুদূর পর্যন্ত বিস্তৃত।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে ভারত দক্ষিণ এশিয়ার মানুষদের উন্নয়নের জন্য অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের প্রতিশ্রুতি দেয়। দক্ষিণ এশীয় স্যাটেলাইটের সফল উৎক্ষেপণ সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ করেছে। এছাড়া সহযোগিতার ক্ষেত্রেও নতুন একটি ক্ষেত্র তৈরি করেছে। এতে করে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর সহযোগিতার নমুনা এখন মহাকাশে উড্ডীয়মান রয়েছে এবং থাকবে। ভারত সকলের সঙ্গে সহযোগিতা এবং সকলের সঙ্গেই উন্নয়ন এই নীতিতে এটি দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে পারস্পরিক সাহায্য ও সহযোগিতার পথ নির্দেশক। ভারত একটি শক্তিশালী অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে বিকশিত হতে চায়। আর এই জন্য সকলের সঙ্গে সহযোগিতার নীতিতেই বিশ্বাসী। এই কারণে ভারত আশাবাদী ভিশনকে সফল করতে সার্বিক সহযোগিতা এবং সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকবে।